শুধুমাত্র নিজের স্বার্থের হাসিল করার জন্য আধিপত্য বিস্তারের জন্য ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের নেতা সেজে নিজের অপকর্ম ঢাকতে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ এ কে এম শামীম ওসমানের নাম ভাঙিয়ে সগৌরবে দস্যুতা করে চলেছেন তথাকথিত নেতা নূর হোসেন ।

গত কয়েকদিন যাবত জালকুড়ির ভূমিদস্যু নূর হোসেনকে নিয়ে স্থানীয় অনেক পত্র-পত্রিকাতে ফলাও করে নিউজ ছাপা হলেও সে সকল নিউজ ও রিপোর্টারদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন নূর হোসেন।

বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা যায় নুর হোসেন গং ৯০ দশকে সিজনাল সবজি ও কিছুদিন পরে জমির দালালি ব্যবসা করতেন। সঠিক দিন-তারিখ বলতে না পারলেও এক এলাকাবাসী জানায় ২০০১/২০০২ সালের দিকে বিএনপি'র ব্যানারে বেশকিছুদিন ব্যাপক আনাগোনা ছিল তার। সেসময় কোন একজনের জমি দখল করতে গেলে এলাকাবাসীর কাছে জালকুড়ি খালপাড় দিকে তিনি গণপিটুনির শিকার হন। ক্ষমতার পালাবদল হলে কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন নুর হোসেন। কিছুদিন চুপচাপ থাকার পরে পুনরায় তিনি বিভিন্ন ব্যবসা করে বেশকিছু অর্থ সঞ্চয় করে এরপর ক্ষুদ্রঋণ ব্যবসা চালু করেন। চড়া সুদে এসময় তিনি বিভিন্ন ক্ষুদ্র দোকানিদের ঋণ দিতেন।
এরপর চতুর নূর হোসেন নারায়ণগঞ্জ উপজেলা সমবায় সমিতিতে কৌশলের নিজের একটা পদ বাগিয়ে নিয়ে সমিতি ব্যবসার নামে চড়া সুদের ব্যবসা জাঁকিয়ে বসেন। এই সুদ প্রথা চালাতে গিয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন নূর হোসেন। ঋণ নিতে আসা লোকদের জামানতের কথা বলে কারো জমির দলিল কারো হলফনামা কারো পাওয়ার অফ এটর্নি বা কারো কারো স্বর্ণালংকার জব্দ করে ঋণ দিতেন নূর হোসেন। সেই থেকেই শুরু কৌশলী ও চতুর নূর হোসেনের জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভূমিদস্যুতা। এরই মধ্যে চতুর নুর হোসেন আওয়ামী লীগের সহযোগী অঙ্গ সংগঠন মৎসজীবি লীগে নিজের নাম লেখান। এর পর যেনো অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে নুর হোসেন। দলের নাম ভাঙিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে চালিয়ে যায় তার কর্মকান্ড।
এছাড়া কেউ তার অপকর্মের প্রতিবাদ করতে আসলে বা বাধা দিতে আসে তাদের প্রতিহত করতে গোপনে লালন পালন করে আসছেন কিশোর বাহিনী আর এই বাহিনীর নেতৃত্বে নূর হোসেনের ছেলে।
সুচতুর নূর হোসেন নিজের অপরাধ সম্রাজ্য বিস্তৃত করতে সুকৌশলে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের তকমা গায়ে লাগিয়ে দুধে ধোয়া তুলসীপাতা সেজেছেন।
মাত্র অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা নুর হোসেন রাজনীতির র না জানলেও আওয়ামী লীগের ইতিহাস না জেনেও নিজেকে আওয়ামী লীগের একজন পরীক্ষিত ও বলিষ্ঠ নেতা বলে দাবি করছেন।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাই নূর হোসেন কখনো সংসদ সদস্য শামীম ওসমান কখনো, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহার নাম ও ছবি ব্যবহার করে ফায়দা হাসিল করতে দেখা যায়। সেইসাথে নারায়ণগঞ্জ সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বলে জাহির করে বেড়ান নুর হোসেন। এলাকাতে ভয়ও কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চায় না।
উল্লেখ্য গত ১০ফেব্রুয়ারি আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ব্যানারে প্রধান অতিথি হিসেবে শামীম ওসমান সহ নারায়ণগঞ্জের অনেক কেন্দ্রীয় নেতার নাম উল্লেখ করা হয়। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার হোসেন সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসনাত শহীদ বাদল যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভূঞা সাজনুসহ আরও অনেকের নাম। সেই সাথে সম্মেলনের ব্যানারে ডজনখানেক নেতার নাম উল্লেখ থাকলেও তাদের ছায়াও দেখা যায়নি সম্মেলনে।
নূর হোসেনের ভয়ে আতঙ্কিত এলাকাবাসী মুখ খুলতে নারাজ। সাধারণ মানুষের উক্তি হলো দল এখন ক্ষমতায় আর শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জের মা-বাপ প্রশাসন ও তার হাতের মুঠোয়। নুর হোসেন নাকি তার একান্তই কাছের মানুষ, তার বিরুদ্ধে কিছু বইলা নিজের ঘাড়ে বিপদ আনবো কে?
তথ্য অনুসন্ধানে নুর হোসেন এর মুঠো ফোন নম্বর ০১৭২৮২৯৩৬২১ এ যোগাযোগ করার জন্য ফোন দিলেও সে ফোন রিসিভ করা হয় না।