স্টাফ রিপোর্টার অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি: ১১ এপ্রিল ২০২৩ , ১২:০২:০৪ প্রিন্ট সংস্করণ
অভয়নগরে বিদ্যালয়ের মেইন গেইটের সামনে সরকারি জমি দখল করে রেখেছে এক ভূমিদস্যু। শুধু তাই নয় স্কুল কর্তৃপক্ষের নামে মামলাও করেছেন। আর প্রতিনিয়ত হয়রানি করেও আসছেন র্দীঘদিন ধরে তাদের। এর ভুক্তভোগী হয়েছেন স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থী, অভিভাবক সদস্য ও শিক্ষকমন্ডলী। যে কারণে স্কুলে যাতায়াতে শিক্ষার্থীরা পড়েছে বিড়ম্বনায়। এ ঘটনাটি ঘটেছে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া পৌরসভার কাপাশাহাটি গ্রামে যশোর খুলনা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্কুল সূত্র ও এলাকাবাসীরা জানায়, অত্র প্রতিষ্ঠানের সামনে সরকারি জমি দখল করে অবৈধভাবে গর্ত করে রেখেছে একজন ভূমিদস্যু কাপাশহাটি গ্রামের মৃত হেফাজ উদ্দিনের ছেলে মো. আব্দুল হাকিম। তিনি সরকারি জমিতে অবৈধ ভাবে গর্ত করে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের পথ বন্ধ করে রেখেছেন। যে কারণে গত বছরের ২৯ শে আগস্ট মাসের দিকে এ ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষ অবৈধ উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন । তাতে কোন কাজ না হওয়ায় স্কুলে যাতায়াতে চরম বিড়ম্বনার শিকার হয়ে আসছেন কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষ সুষ্ঠ সমাধানের জন্য চলতি বছরের শুরুর দিকে সহকারী কমিশনার ভুমি অফিসার বরাবর আবারও হাকিম এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ্য, যশোর খুলনা মহসড়াকের পাশে অবস্থিত শহীদ স্মৃতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০১৬ সালে সীমানা প্রাচীর তৈরি করেন। যাতে করে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় না পড়েন। স্কুলের মেইন গেইটের জায়গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের। যা হাকিম গর্ত করে দখল করে রেখেছে। এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত যাতায়াতে দুর্ঘটনার শিক্ষার হয়। বার বার স্কুল কর্তৃপক্ষ এব্যাপারে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করে যাচ্ছেন। এসময় সু কৌশলে বর্ষা মৌসুমে মো. আব্দুল হাকিম ছোট গর্তে ২হাজার টাকার পোনা মাছ ছেড়ে নাটক সাজানো বাহনা করেন। তিনি বিপদে পড়বেন জেনে ৮০ হাজার টাকার মাছ মরে যাওয়ার ঘটনা এনে যশোর বিজ্ঞ আদালতে স্কুল কর্তৃপক্ষের নামে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামী করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুন, সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী, জমিদাতা মৃত সাজেদুর রহমান, সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম এর নামে। আব্দুল হাকিম স্কুল কর্তৃপক্ষের নামে মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন সময় হয়রানি করে আসছেন। এ ব্যাপারে অভিভাবক সদস্যরা খলিল চৌধুরী, আব্দুল বাতেন, শাহিন ভুঁইয়া, আব্দুল্লা আল মামুন বলেন, স্কুলে সামনের মহাসড়কের সরকারি জায়গা আব্দুল হাকিম দখল গর্ত করে রেখেছে। বাচ্চাদের যাওয়ার জায়গা নেই। ১৯৭৩ সালে এই স্কুল প্রতিষ্ঠিত । খাশ জমিটি স্কুল ভোগদখল করলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে আর সমস্যা থাকবে না। সহকারী শিক্ষক প্রিয়া রানী দাস বলেন, মহাসড়কের জায়গায় গর্ত করে দখল করে রেখেছেন । তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা ভাবেন না। চলাচলের জন্য স্কুল গেইটে জরার্জীণ অবস্থা। আমরা সহ ছাত্র- ছাত্রীদের সমস্যা হয় । ৫ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা জানান, স্কুলের সামনে যাতায়াতের পথে আসা যাওয়ায় আমরা পড়ে আহত হই। জায়গায় দখল করে রেখেছেন তিনি যেন ছেড়ে দেন। ৪র্থ শ্রেণীতে পড়েন এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্কুলের যাওয়া আসার রাস্তার সমস্যা। জায়গাটা দখলমুক্ত হোক । প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুন বলেন, স্কুল গেইটের সামনে আব্দুল হাকিম নামের এক ব্যক্তি দখল করেছেন। স্কুলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ভিজিট করতে ঠুকতে পারে না। গাড়ি ,ভ্যান, সাইকেল নিয়ে যাওয়া আসা করা যায় না।বাচ্চারা দুঘর্টনায় পড়েন। আমরা কয়েকদফায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দিয়েছি। সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী বলেন, আব্দুল হাকিম ছোট গর্তে ২হাজার টাকার পোনা মাছ ছেড়ে নাটক সাজানো বাহনা করেন। তিনি বিপদে পড়বেন জেনে ৮০ হাজার টাকার মাছ মরে যাওয়ার ঘটনা এনে যশোর বিজ্ঞ আদালতে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।এ ব্যাপারে মো. আব্দুল হাকিম মুঠোফোনে জানান, আমার বাড়ির পাশে স্কুলের সামনে যশোর খুলনা মহাসড়কের জায়গা আমি ভোগ দখল করে খেয়ে আসছি। এটা খাঁশ জমি না। মহাসড়কের জমি । যার পাশে থাকবে সে দখল করে খাই। আমি কোর্টে মামলা করেছি। আমার মাছ মরে গেছে। তাদের কারণে স্কুলে কয়েকজন ছাই ফেলে দিয়ে গর্ত ভরাট করে। যে কারণে বিষাক্ত গ্যাসে মাছ মরে যায়। আমি এই বিষয়টি মিমাংশা করতে চাই। স্কুলের সামনের অংশ আমি ছেড়ে দেবো। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কাসেম বলেন, আমি কয়েকদিন আগে যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আমি স্কুল পরিদর্শনে যাবো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেজবাহ উদ্দিন বলেন, সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে দ্বায়িত্ব দেওয়া আছে।