মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি: ১৩ এপ্রিল ২০২৩ , ৯:৩২:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ
যশোরের অভয়নগর উপজেলার বেশকিছু অঞ্চলে ভয়ংকর হয়ে উঠেছে নারী পাচার চক্র। অনুসন্ধানে জানা গেছে নারীপাচার চক্রের খপ্পরে অসহায় নারীরা পার্শবর্তী ভারতে পাচার হয়ে বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়। এইসব নারী পাচার চক্রের সদস্যরা বেশি টার্গেট করে অসহায় গরীব নারীদের, যারা সংসার চালাতে কাজের সন্ধানে ছুটে বেড়ায়। ওই সব নারী পাচার চক্রের সদস্যেরা গরীব অসহায় নারীদের বিভিন্ন কাজের ও বেশি টাকা আয়ের লোভ দেখিয়ে ভারতে দালালের মাধ্যমে পাচার করে। এবং মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দেই, ওই সব নারী পাচার চক্রের রয়েছে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী বড় সিন্ডিকেট যা অনুসন্ধানে জানা গেছে। ফলে নারী পাচার চক্রের হোতারা থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। ওই সব নারী পাচার কারীরা নিরাপদ রুট হিসাবে বেছে, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা বেনাপোলগামী বেতনা এক্সপ্রেস ট্রেন, যে ট্রেনে নওয়াপাড়া স্টেশন থেকে অনায়াসে নিরাপদে পৌঁছে যায় সিমান্ত বর্ডারে। ওই সব চক্রের রয়েছে অভিনব কৌশল যে কৌশলে ভুক্তভোগী নারীরা বুঝতেও পারেনা তারা পাচার চক্রের খপ্পরে পড়েছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ওই নারী পাচার চক্রের বেশির ভাগ সদস্যেরা গ্রামে অবস্থান করে সুযোগ খোঁজে গরীব অসহায় নারীদের টার্গেটে ফেলে তার সাথে কথার ছলে সখ্যতা গড়ে তোলে বিভিন্ন চমকদায়ক লোভ দেখিয়ে ভারত যাওয়ার জন্য রাজি করায়। সূত্রে আরো জানা গেছে, নওয়াপাড়া শহরে বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়েও এসব নারী পাচার চক্রের সদস্যেরা সুযোগের অপেক্ষা করে। উপজেলার সিদ্দিপাশা, গোপিনাথপুর, নাউলি, মধ্যেপুর, শংকরপাশা, লেবুগাতী, বাশুয়াড়ী, বাঘুটিয়া, রানাগাতিসহ নওয়াপাড়া প্রফেসরপাড়া, ক্লিনিকপাড়া, রাজঘাট, মশরহাটিসহ বিভিন্ন স্থানে অধিকাংশ নারী পাচার চক্র সক্রিয় ভাবে অবস্থান করে। এবং অসহায় গরীব নারীদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ভারতে পাচার করে থাকে। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যে সব নারী পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে ভারতে পাচারের শিকার হয়েছে, তাদের ভাগ্য কি ঘটেছে তা বলা মুশকিল। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, সংসারের অভাব ঘুচাতে কাজের সন্ধানে পাচার হয়ে যাওয়া নারীরা অধিকাংশ ভারত পতিতালয়ে বিক্রি হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এমনি এক নারী উপজেলার সিদ্দিপাশা গ্রামের শিউলি আক্তারের সাথে কথা হয়। তিনি জানান, আমাদের গ্রামের একজন লোকের প্রলোভণে আমি ভারত চলে যায় সেখানে গিয়ে জানতে পারি আমাকে পতিতালয়ে বিক্রি করা হয়েছে আমাকে আটকে রেখে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। আমার ভ্যান চালক পিতা বিজ্ঞ আদালতে মামলা করলে পাচারকারী চক্রের লোকেরা আমার পিতাকেসহ মাকে মেরে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেই। দীর্ঘ ৫ বছর ভারত পতিতালয়ে নির্যাতন সয্যকরে একটি এনজিওর সহায়তায় আমি ফিরে এসেছি তিনি আরো জানান এই অঞ্চল থেকে অনেক নারী আমার মতো পরিস্থিতির শিকার হয়ে আছে সেখানে। উপজেলা ব্যাপি নারীপাচার চক্রের সদস্যেরা বহালতবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কার্যকরী পদক্ষেপ দেখা মেলেনা। সচেতন মহল দ্রুত নারীপাচার চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে কঠোর আইনের মাধ্যমে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে জরুরি পদক্ষেপ কামনা করেছেন। এবিষয়ে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের উপজেলা কর্মকর্তা জানান, আমাদের কাছে নারী পাচার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে আইন সহায়তা দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করার উদ্যোগ গ্রহন করবো।