• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • সারাদেশ

    তানোরে ক্লিনিক খুলে সাধারণ মানুষের সাথে দুই-ভাইয়ের প্রতারণা

      প্রতিনিধি ২৪ এপ্রিল ২০২৩ , ৫:০৪:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    তানোর প্রতিনিধি:

    রাজশাহীর তানোরে প্রতিনিয়ত ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠছে অসংখ্য বাহারি নামে-বেনামে সাইনবোর্ড লাগিয়ে অবৈধ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব বে-সরকারী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোর কোন লাইসেন্স স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া না হলেও নামমাত্র আবেদন করেই দিব্যি চালানো হচ্ছে ক্লিনিক গুলো। অন্যদিকে গ্রামের সাধারণ মানুষ এসব ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হচ্ছেন প্রতারণার শিকার। হারাচ্ছেন স্বজনদের। এসব অবৈধ ক্লিনিকের মধ্যে অন্যতম ভয়ংকর ক্লিনিক হিসেবে পরিচিত নাম মহানগর ক্লিনিক ও নিউ মর্ডান ক্লিনিক। এই দুই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে রয়েছে সবচেয়ে বেশি রোগীর মৃত্যু হওয়ার রেকর্ড। শুধু তাই নয়,এই দুই ক্লিনিকের বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক নারী কেলেঙ্কারিরও ঘটনা। সম্প্রতি,বহুল আলোচিত সমালোচিত মহানগর ক্লিনিকের কথিত ম্যানেজারের সিজার করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেই রেস না কাটতেই তার কয়েক দিন পর মালিক রামেকের ব্রাদার্স হেলালের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেনের সিজার করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক ভাইরাল হয়ে পড়েছিল বছর খানিক আগে। সেই সাথে দ্রুত মহানগর ক্লিনিকের মালিক হেলাল উদ্দিন ও নিউ মর্ডান ক্লিনিকের মালিক শাহাদাত হোসেনকে গ্রেফতার ও ক্লিনিক সিল গালা করার দাবি জানিয়ে উত্তাল হয়ে পড়েছিল তানোর উপজেলার সাধারণ মানুষ। তার পরেও তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে মাত্র ১০হাজার টাকা ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করে মহানগর ক্লিনিক কে জঘন্যতম অপরাধ থেকে মুক্তি দেয়া হয়।
    তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে,রাজশাহী রামেক হাসপাতালের ব্রাদ্রার্স হেলাল উদ্দিন তানোরে মহানগর ক্লিনিক নাম দিয়ে ক্লিনিক খোলেন। আর সেই ক্লিনিকের ম্যানেজার হিসেবে তার ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন কে দায়িত্ব দেন। কিন্তু টাকা পয়সার ভাগাভাগি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ব্যাপক মনোমালিন্য শুরু হয়। এতে করে হেলাল উদ্দিনের ছোট ভাই শাহাদাত হোসেন মহানগর ক্লিনিক থেকে বেরিয়ে এসে তিনিও খোলেন আরেকটি ক্লিনিক। আর শুরু করেন দুই ভাই পাটা পাটি করে সাধারণ মানুষের মাঝে নানান সু্যোগ সুবিধার নামে সাধারণ মানুষের পকেট কাটতে। এই দুই ক্লিনিকে রোগী ধরতে বিভিন্ন এলাকায় কমিশনের মাধ্যমে রাখা রয়েছে দালাল প্রতারকদের। এসব রোগী ধরা দালালদের কাজ গর্ভবর্তী প্রসূতিদের সিজারিয়ান অপারেশন করতে ভালো ডাক্তারের নাম করা সহ একেবারে অল্প টাকায় সিজার করানো হয় বলে প্রলোভন দেখিয়ে ক্লিনিকে রোগী ভর্তি করান দালাল’রা। গ্রামের সাধারণ মানুষও কিছু টাকা কমের কথা শোনে দালালদের কথাই সেসব ক্লিনিকে রোগী ভর্তি করে ক্ষোয়ান সর্বস্ব। বড় বড় ডাক্তারের নাম করে রোগী ভর্তি করা হলেও ডাক্তারের বদলে ক্লিনিকের নার্স ও মালিকরা নিজেরাই প্রসূতির সিজার করেন। এতে প্রায়দিন শোনা যেতো এই দুই ক্লিনিকে নবজাতকের ভূল অপারেশনে মৃত্যু হয়েছে,নাড়ী কেটে গেছে। নয়তো নবজাতকের জন্ম হয়েছে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। যা সম্প্রতি মহানগর ক্লিনিকের ম্যানেজার স্কুলের গন্ডি পেরোতে পারেনি সে করছেন প্রসূতির সিজার । আর নিউ মার্ডাণ ক্লিনিকে শহর থেকে বড় ডাক্তার দিয়ে সিজার করা হবে বলে ক্লিনিকের মালিক শাহাদাত হোসেন নিজেই প্রসূতির সিজার করে বাচ্চা ডেলিভারি করছেন। এমন জঘন্য ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফাঁস হয়ে ভাইরাল হলে মহানগর ক্লিনিক ও নিউ মর্ডান ক্লিনিকের অবৈধ কারবারের পর্দা খুলে যায় জনসাধারণের মধ্যে।

    জানা গেছে, উপজেলায় মুন্ডুমালা উত্তর পাড়া গ্রামের আল মামুনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের প্রসব বেদনা শুরু হলে মহানগর ক্লিনিকে ভর্তি হন। ভর্তির পর কোন ধরনের পরিক্ষা নিরিক্ষা ছাড়াই ম্যানেজার মামুন সিজার করেন। কিন্তু সিজার করতে গিয়ে ভুল করে নাড়ি কেটে ফেলেন। এরপর থেকে ব্লাড নামতেই থাকে। রক্ত বন্ধ না করে ক্লিনিক থেকে জোর করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তারপর রক্তপাত বন্ধ না হওয়ায় আনোয়ারা বেগমকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজশাহী নিয়ে যান পরিবারের লোকজন। সেখানে পরিক্ষা করে ডাক্তার বলেন সিজার করার সময় ভুল করে নাড়ি কেটে ফেলেছে। রোগিকে বাচানো অসম্ভব বলে কিছু ঔষুধ দেন।রাজশাহী থেকে আসার কয়েকদিন পর বাচ্চাকে রেখে মারা যান মা আনোয়ার বেগম। নিহত নারীর স্বামী আল মামুন জানান,আমার স্ত্রী মহানগর ক্লিনিকের ভুল সিজারের জন্যই অকাল মৃত্যু হয়েছে। তাদেরকে কোন কথা বললেই উল্টো আমাকেই নানা ধরনের হুমকি দিয়ে বলছেন আল্লাহ তার এভাবে মৃত্যু লিখেছেন মৃত্যু হয়েছে। কেউ কি সারাজীবন বাঁচবে।

    এবিষয়ে জানতে মহানগর ক্লিনিকের মালিক হেলাল উদ্দিনের  ০১৭১১-৮৩৯৬২৩ মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলে তার মিসেস ধরে বলেন, তিনি ঘুমাচ্ছেন কি সমস্যা বলতে পারেন। ভুল সিজারে রোগী মারা গেছে, তিনি জানান যে রোগী মারা গেছে তার সিজার হয়েছে। ক্লিনিক থেকে রিলিজ হওয়ার পর মারা যান। এটা আমাদের ক্লিনিকের কোন দায় দায়িত্ব নাই। নিউ মর্ডা ক্লিনিকের মালিক শাহাদাত হোসেন তার বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,আমার ক্লিনিকের সুনাম দেখে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন আমার বড় ভাই হেলাল উদ্দিন।বিষয়টি নিয়ে জেলা সিভিল সার্জন অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

     

    আরও খবর

    Sponsered content