• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • তথ্যকণিকা

    মোহনপুরে কমছে কৃষি জমি চলছে পুকুর খনন

      প্রতিনিধি ১৪ মে ২০২৩ , ৬:২৮:১৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক:

    রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় কৃষি জমি রক্ষায় সহকারী কমিশনার ভূমি, কৃষি ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কোন কার্যকরী কোন উদ্দ্যেগ লক্ষ্য করা যায়নি। ফলে ভুমি খেকোদের কড়াল থাবায় প্রতি বছর কমছে ফসলি জমি। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে ৬ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী তিন ফসলি জমিতে সরকারি-বেসরকারি প্রকল্প গ্রহণ বন্ধে কঠোর নির্দেশনা দেন। কিন্তু প্রশাসনের ছত্রছায়ায় মোহনপুরসহ জেলার শত শত বিঘা ফসলি জমি ধ্বংস করে পুকুর-দিঘি খনন চলছে। স্থানীয় প্রশাসন দায়সারা অভিযান চালালেও দিনে ও রাতে পুকুর খনন কাজ অব্যাহত রয়েছে। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানা পুলিশের কাছে ভুক্তভোগী কৃষকরা প্রতিকার পেতে প্রতিদিন অভিযোগ দিচ্ছেন। কিন্তু কোনক্রমেই বন্ধ হচ্ছেনা পুকুর খনন। খননকারীরা ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা, এসিল্যান্ড ও থানা পুলিশ, সাংবাদিকদের পেছনে মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে মুখ বন্ধ রাখছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।অভিযোগ, কৃষকদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় প্রভাবশালী মহল ভেকু দিয়ে পুকুর খনন করছে। ফসলি জমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা মাঠ প্রশাসন পালন করছে না। তাদের অভিযোগ, ফসলি জমি রক্ষায় অভিযোগ করায় প্রশাসন দায়সারা ও লোক-দেখানো অভিযান চালায়। দুপুরে অভিযান চালিয়ে খনন বন্ধ করা হলেও কয়েক ঘণ্টা পর আবার খননকাজ শুরু হয়। প্রশাসনের পরামর্শে কখনো দিনে অথবা রাতভর খননকাজ চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। যেখানে ফাঁকা জমি পাচ্ছে সেখানে ভেকু দিয়ে খননে নেমে পড়ছে দখলদাররা। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ফসলি ও সেচ সুবিধাসম্পন্ন জমিতে নির্বিঘ্নে চলছে পুকুর খনন। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,
    বিগত তিন বছরে এ উপজেলায় কৃষি জমি কমেছে ৪’শ হেক্টর। বর্তমানে এ উপজেলার আবাদি জমির পরিমান ১১হাজার ৩’শ ১২ হেক্টর যা ২০২০ সালে ছিল ১২ হাজার ৩’শ ১২ হেক্টর। আবাদি জমি কমার সবচেয়ে বড় কারণ হলো ফসলি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন। অন্যান্য কারণ অপরিকল্পিত বাড়ি ঘর ও রাস্তা নির্মান।উপজেলা মৎস্য অফিসের মাধ্যমে জানা গেছে, উপজেলায় বর্তমান পুকুরের আয়তন ১হাজার ২’শ ২৪ হেক্টর। যার মধ্যে সরকারি পুকুর ৩’শ ৫০টি, বেসরকারি ৩ হাজার ৭’শ ৬টি, বাণিজ্যিক খামার ৪৭টি।উপজেলায় ২০২০ সালে পুকুরের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬’শ ১২টি। বর্তমানে পুকুরের সংখ্যা ৩ হাজার ৭’শ ৫৩টি। গত তিন বছরে এ উপজেলায় ১’শ ১২ টি পুকুর খনন করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডগায় মহাসড়কের পাশে পত্রপুর ব্রীজের ধারে ২৬ বিঘা ফসলি জমিতে নতুন পুকুর খনন করছেন মৌগাছি ইউপি’র বাটুপাড়া গ্রামের আদম ব্যবসায়ী আয়েজ উদ্দিন ও নন্দনহাটের মিজান নামে এক ভূমিদস্যু।উপজেলা প্রশাসন, সাংবাদিকদের ম্যানেজের দায়িত্ব ও ভেকু মেশিন সাপ্লাই দিয়েছেন জাহানাবাদ ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব রফিক নামে এক ভেকু দালাল। ভূমি খেকো মিজান ও ভেকু দালাল রফিকের দাবি তারা এসিল্যান্ড ও ইউএনও ড্রাইভারসহ স্থানীয় প্রশাসন ও সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেই পুকুর খনন করছেন। তাদের একাজে পরোক্ষভাবে পরামর্শ ও নির্দেশনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এসিল্যান্ড ড্রাইভার নয়নের বিরুদ্ধে। (অডিও রেকর্ড সংরক্ষিত)। এ উপজেলায় যতগুলি পুকুর সংস্কার, নতুন পুকুর খনন করে মাটি বিক্রয় করা হয়েছে প্রতিটি সেক্টর থেকে এসিল্যান্ড ড্রাইভার নয়ন অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন বলে পুকুর খননকারীসহ একাধিক সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে। যা তার ব্যবহৃত মোবাইলের কল লিস্ট পরীক্ষা করলে বিষয়টি পানির মত পরিস্কার হওয়া যাবে। যারা আগে থেকেই নয়নের সাথে যোগাযোগ করে তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা কম করা হয়। আর যারা যোগাযোগ করেননা তাদের দ্বিগুণ জরিমানা করে লাইনে আনা হয়। এরই মধ্যে পুকুর খননকারীরা শেষ করে তাদের পুকুর খননের কাজ। এব্যাপারে ভেকু দালাল রফিক বলেন, পুকুর কাটার কোন অনুমতি পাইনি। তবে এসিল্যান্ড ও ইউএনও ড্রাইভারসহ সবাইকে বলেই পুকুরটি খনন করছি।এবিষয়ে এসিল্যান্ড ড্রাইভারের সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং বলেন আমি স্যারের সাথে আছি পরে কথা বলবো বলে তিনি ফোনটি রেখে দেন। পরে তার ফোনে একাধিকবার ফোন করলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। ইউএনও ড্রাইভার রাহুলের সাথে সরাসরি কথা বলে এবং একটি ডকুমেন্ট দেখালে তিনি বলেন, আমি চাইনি তবুও আমার নাম্বারে রবিন ভাই ২ হাজার টাকা পাঠাইছে। আর কার কার থেকে টাকা নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্যার আমাকে সতর্ক করার পরে আমি কারো ফোন রিসিভ করিনা বলে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
    পত্রপুরে পুকুর খনন বিষয়ে ইউএনও-কে জানানো হলে তিনি এসিল্যান্ডকে বলে অবৈধ পুকুর খননের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানার পরক্ষণে ১ টি ভেকুর পরিবর্তে আরো ৩টি ভেকু মেশিন দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। স্থানীয়রা ধারনা করছেন প্রশাসনের পরামর্শেই ৪টি ভেকু মেশিন দিয়ে দিনে ও রাতে খনন কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে পুকুর খননকারীরা। প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনার পরও ফসলি জমিতে পুকুর খনন প্রসঙ্গে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিহা ফাতেমাতুজ্- জোহ্ রা বলেন, পুকুর খনন বন্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে। নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রশাসনের অবহেলার অভিযোগ সঠিক নয়।
    সূত্র জানায়, গত পাঁচ বছরে শুধু পুকুর-দিঘি খননে রাজশাহীর ১২ হাজার হেক্টরের বেশি ফসলি জমি ধ্বংস হয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার হেক্টর আমবাগানও রয়েছে।

    আরও খবর

    Sponsered content