প্রতিনিধি ৭ আগস্ট ২০২৩ , ৮:০২:২২ প্রিন্ট সংস্করণ
হারাধন কর্মকার রাজস্থলী
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ী এলাকা রাজস্থলীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশংকায় পাহাড়ের নিসস্ব বসবাসরতদের নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে সরাতে এবং সতর্ক করতে উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। এদিকে পাহাড় ধসে ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো ও জানমাল রক্ষার্থে গত কয়েকদিন থেকে গাড়ি যোগে মাইকিং করা হয়েছে। রাজস্থলী উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারদের নিরাপদে সরে যেতে এবং জনগনকে সচেতন করতে জেলা প্রসাশকের নির্দেশ মোতাবেক এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ইউএনও শান্তনু কুমার দাশ। এই বিষয়ে সকালে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কার্যালয়ে পাহাড়ধ্বস, ভূমিধস, ভুমিকম্প ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলার সদর, রাজস্থলী বাজার, হাজী পাড়া, নোয়া পাড়া, কুইক্যছড়ি পাড়া, বড়ইতলা, গামারি বাগান, ওগাড়ি পাড়া, লংগদু, লংগদু পূণর্বাসন পাড়া, ইসলামপুর, গাইন্দ্যা পাড়া, শফিপুর, বাঙ্গালহালিয়া বাজার,ডাকবাংলা পাড়া , কাকড়াছড়ি পাড়া, ধলিয়া মুসলিম পাড়াসহ বিভিন্ন পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ঘুরে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে জনগণকে মাইকিং করে সতর্ক করে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে। অন্য দিকে রাজস্থলী- চন্দ্রঘোনা প্রধান সড়কের বেশকটি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। রাজস্থলী যেতে গামারি নামক এলাকায় পাহাড় উঠার সময় পাশের পাহাড়ের মাটি ভেঙ্গে রাস্তায় পড়ায় রবিবার বিকাল থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিলো। সড়ক জনপদ বিভাগের প্রচেষ্টায় রাস্তা থেকে মাটি সড়িয়ে পুনরায় যানবাহন চলাচল সচল করা হয়। ঘিলাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবার্ট ত্রিপুরা বলেন উপজেলার মধ্যে ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন টি দুর্গম এলাকায় অবস্থিত।পাড়ায় যাতায়াতের রাস্তা গুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং প্রচন্ড বৃষ্টিতে হাজীপাড়া যাওয়ার বেইলি ব্রিজের উপর দিয়ে পানি চলাচল করছে সকল থেকে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে বলে জানান। গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুচিংমং মারমা বলেন সদরে বেশ কিছু সমতল এলাকায় পানিতে প্লাবিত হয়েছে। তবে গোদা বাঁধ ভেঙ্গে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা। দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন বলে মনে করেন।
বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আদোমং মারমা বলেন বাঙ্গালহালিয়া ডাকবাংলা পাড়ায় কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে বাঙ্গালহালিয়া বাজার সহ দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের পিছনের দিকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় দের শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।তবে বড় ধরনের কোন প্রকার ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানান। রাজস্থলী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ইউএনও শান্তনু কুমার দাশ জানান, প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা ও পাহাড় ধস দেখা দেয়, আর সেই সাথে সাথে পাহাড় ধসে প্রাণহানীর ঘটনা না ঘটে। তাই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করার মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তিনি আরো জানান, রাজস্থলী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এদিকে রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবাচ মারমা বলেন বর্তমান সরকারের দুর্যোগ মোকাবেলায় নিরলসভাবে কাজ করছে। তিনি আরো বলেন রাজস্থলী উপজেলায় কিছু কিছু ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা রয়েছে। সেগুলোতে বসবাস রত পরিবার গুলোকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিটি এলাকায় এলাকায় যাহাতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত পরিবার গুলোর সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখেন। এদিকে বাঙ্গালহালিয়া বাজারের আশপাশের এলাকাগুলোতে একটু বৃষ্টি শুরু হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে উপরের পাহাড়ি ঢলের পানি গুলো নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছর এমন জলাবদ্ধতার সমস্যায় পড়তে হয় শত শতপরিবারের। বিশেষ করে বাঙ্গালহালিয়া ডাকবাংলা পাড়ায় দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের পিছনের দিকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গত কয়েকদিন ধরে পানি বন্দি হয়ে আসছেন প্রায় ১ হতে দের শত পরিবার। বাঙ্গালহালিয়া বাজারে আশপাশে এলাকার জলবদ্ধতা নিরসনের জন্য রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে এলাকাবাসী।