• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • তথ্যকণিকা

    শিক্ষক নিয়োগের নামে প্রহসন এর শেষ কোথায় ?

      প্রতিনিধি ২১ আগস্ট ২০২৩ , ৬:০৭:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    জি এম ইয়াছিন

    ২০০৫ সালের আগে সারা বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ যেভাবে হইয়াছে সেই কথা ভাষায় প্রকাশ করতে গেলে পরে অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও বাস্তব জীবনে দেখেছি নিয়োগ পরীক্ষার নামে অর্থ ( প্রতিষ্ঠান এর অবকাঠামো উন্নয়ন সহ নানাবিধ কাজের নামে) লেনদেন, অথবা রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ কিংবা মামা- খালুর ক্ষমতার জোরে নিয়োগ এটা যেন নিয়মে পরিণত হয়ে গিয়েছিল, এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য শিক্ষক নিয়োগ করতে অধিকতর যোগ্য মেধাবীদের শিক্ষক নিয়োগ করতে স্বতন্ত্র একটি প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি হলো ২০০৫ সালে, তখন আমরা আশার আলো দেখতে পেলাম, কিন্তু না সে আশায় গুড়ে বালি,,,এ প্রসঙ্গে একটি ছোট্ট গল্প করি..”” একজন লোকের পিতা অসুস্থ হওয়ায় একজন প্রতিবেশী দেখতে গেছে, দেখে লোকটা বেশ আফসোস করে, এরপর একদিন আবার দেখা হলে ঐ প্রতিবেশী আবার জিঞ্জেস করে তোমার আব্বার অসুখ কেমন হয়েছে,, উত্তরে বলছে আগের চেয়ে অনেক ভালো,, আগে চলাফেরা একা করতে পারতো এখন অন্যের সহোযোগিতায় চলাফেরা করে।।। ম্যানেজিং কমিটির কে দায়িত্ব দেওয়ায় শিক্ষক নিয়োগর বাস্তব অবস্থা ঠিক এমনই হয়েছে।।।

    স্বাধীন দেশে স্বাধীনভাবেই সকল অধিকার জনগণ ভোগ করবে,, কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় পরাধীনতার নাগপাশ থেকে আমরা যেন মুক্তিই পাচ্ছি না,, যে কোনো অধিকার পেতে সংগ্রাম করতে হচ্ছে, একটা স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে এর থেকে লজ্জার আর কি থাকতে পারে। একটু লক্ষ্য করলেই দেখতে পাচ্ছি যে, ঘঞজঈঅ কতৃপক্ষের চরম খামখেয়ালিপনা ও আইনের প্রতি চরম অবঞ্জা এবং গেজেট এর চেয়ে ঘঞজঈঅ তাদের বিধিমালাকেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে, চরমভাবে নিবন্ধিত শিক্ষকদের প্রতি অবিচার করেছেন। স্মরণ করিয়ে দিতে চাই,, আইন বিধিমালা নিয়ন্ত্রণ করে কিন্তু ঘঞজঈঅ তাদের ইচ্ছাধীন বিধিমালা কে আইনের ন্যায় গোটা শিক্ষক সমাজের উপর চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করেছেন। যার ফলে আমাদের দৃষ্টিতে নিন্মলিখিত বিষয়গুলো নিয়ে একটা জাতীয় শিক্ষক নিয়োগ তদন্ত কমিশন করা হলে পরে, বেরিয়ে আসবে আসল এর প্রতিচ্ছবি। পাশাপাশি নিয়োগ বঞ্চিত নিবন্ধন সনদধারী শিক্ষক সংগঠন এর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে, বেরিয়ে আসবে আসলে এর চেহারা।

    ১। একজনের সনদ অন্য জনে ব্যবহার করে চাকরি করছে ,
    ২। ৩৫+ দের ১-১২তম সনদধারী দের সনদের মেয়াদ আজীবন।
    ৩। তৃতীয় গণবিঞ্জপ্তির সময়, যে সব প্রতিষ্ঠান শুন্য পদ দেখিয়েছে, সেখানে ৪র্থ গণবিঞ্জপ্তির সময় ও ঐ প্রতিষ্ঠান পদ শূন্য দেখিয়েছে, সেখানে যারা দরখাস্ত করেছে তাদের চাকরি দেয়া হয়নি।
    ৪। প্রথম ও তৃতীয় গণবিঞ্জপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দিলেও ২য় ও ৪র্থ গণবিঞ্জপ্তিতে আবেদন করতে দেয়া হয়নি।
    ৫। জাল সনদ নিয়ে চাকরি করছে, অথচ বৈধ সনদধারী রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে।
    ৬।সুপ্রিম কোর্ট আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে,, শুধু হয়রানি করার উদ্দেশ্য নিয়ে ঘঞজঈঅ মামলা করেছে।
    ৭। ১-৫ তম পর্যন্ত ৪৪০ জনকে নিয়োগ দিয়েছে ৪র্থ গণবিঞ্জপ্তিতে, এদের কারোরই বয়স থাকার কথা না।
    ৮। ২১-১২-২০২২ইং তারিখ শিক্ষা মন্ত্রী মহোদয় আশ্বাস দিয়ে বললেন, ৪র্থ গণবিঞ্জপ্তি দিবে না,অথচ ঐ দিনই কিছুক্ষণ পরে বিঞ্জপ্তি দেওয়া হলো। তাহলে কি সচিবদের কথা মতো দেশ চলবে, নাকি মন্ত্রী মহোদয় এর কথায় দেশ চলবে।
    ৯। ২-১-২০২৩ ইংরেজি খ্রীস্টাব্দে শিক্ষা মন্ত্রী মহোদয় আমাদের সাথে আলোচনার একপর্যায়ে বললেন, যেহেতু উচ্চ আদালতে মামলা চলমান ফলে বিদ্যমান আইনের বাইরে কিছুই করতে পারিনা। তাহলে মামলা চলমান অবস্থায় বিঞ্জপ্তি দেওয়া হলো কিভাবে।
    স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। এই অধিকার কেউ কোনো অবস্থায় কেড়ে নিতে পারে না।অথচ শিক্ষক হিসেবে যোগ্যতায় স্বাক্ষর রেখে,আদালতের স্মরণপন্ন হয়েও যখন অধিকার ফিরিয়ে না পেয়ে হতাশাগ্রস্ত, তখনই ২০০ দিন পর্যন্ত সকাল সন্ধ্যা অনশন করে নিয়োগ কতৃপক্ষের দৃষ্টিতে আনার শতচেষ্টা করে ও যখন ফল শূন্য দেখলাম,,তখনই মনে হলো আমরা তো চাই নি এমন স্বাধীনতা,, যেই স্বাধীনতার মধ্যে থাকবে শোষণ-শাসন, বঞ্চনা, অধিকার আদায় হবে না নির্বিঘ্নে, নির্ভয়ে।

    অথচ আজকে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরে ও আন্দোলনের মাধ্যমে অধিকার আদায় করতে হচ্ছে এটা স্বাধীন জাতি হিসাবে শুধু লজ্জাজনকই নয়,দূর্ভাগ্যের ও বটে। কাজেই কালবিলম্ব না করে, অবিলম্বে গেজেট ও সুপ্রিম কোর্টের রায় বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এবং ঘঞজঈঅ এর সকল অনিয়ম পর্যবেক্ষণ করতে, একটা স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করে,সুষ্ঠু বিচার করা হোক। এ ব্যাপারে সরকার প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি। অন্যথায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে আর আমরা আমাদের আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত হবো।যদি এই অবস্থা চলতেই থাকে, তাহলে পরে যোগ্য শিক্ষক অদূরভবিষ্যৎ এ বাইরের কোন দেশ থেকে আমদানি করতে হবে। আর যদি শিক্ষার গুনগত মান অক্ষুন্ন রাখতে চাই, তাহলে ঐ সকল জাল সনদধারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে, সকল অনিয়ম তদন্ত করতে হবে, বৈধ সনদধারীদের নিয়োগ দান করতে হবে।

    শুধু তাই নয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর যুগ্ম সচিব সরোজ কুমার স্যার আন্দোলনরত নিয়োগ বঞ্চিত নিবন্ধিত শিক্ষকদের নিকট থেকে স্কুল /কলেজের বিপরীতে একটা নামের তালিকা ও নিল,ঐ তালিকা টা কেন নিল,, নিয়োগের নামে প্রহসন করতে নাকি কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিতে।স্বাভাবিকভাবে এ প্রশ্নটা সচেতন বিবেকবান মানুষ হিসেবে থেকেই গেলো। শুধু তাই নয়,আমরা যারা ১- ১২তম সনদধারী ডাদেরকে স্বতন্ত্র বিঞ্জপ্তির মাধ্যমে সর্বাগ্রে নিয়োগ দিতে এবং লাল ফিতার এই চরম দৌরাত্ম থেকে দেশের মানুষ কে যদি মুক্তি দিতে হয়, তাহলে পরে দেশ শাসনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দের আদেশ সচিবদের মান্য করাতে যুগোপযোগী বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে, আর এসব বিষয় তোয়াক্কা না করে সচিবেরা, তাহলে পরে আক্ষেপ করে বলতেই হবে, আমরাতো চাই নি, এমন স্বাধীনতা। যেখানে আমরা খুঁজে পাবোনা আমাদের আইনগত অধিকার।।

    লেখক- নিয়োগ বঞ্চিতদের পক্ষে,
    জি. এম. ইয়াছিন
    (এমফিল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। পিএইচডি গবেষক)
    সাধারণ সম্পাদক
    কেন্দ্রীয় কমিটি
    প্যানেল প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষক সংগঠন।

    আরও খবর

    Sponsered content