• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • তথ্যকণিকা

    সিলেটে সিন্ডিকেটে চলছে চোরাচালান

      প্রতিনিধি ১৪ অক্টোবর ২০২৩ , ৫:৫৪:২০ প্রিন্ট সংস্করণ

    বিজয় সরকার সিলেটঃ

    ১৩/৭/২৩ইং শুক্রবার ভোরের আলো ফুটার আগে ভারতীয় চা পাতাবাহী দু’টি ট্রাকের গতিরোধ করে সিলেটের সিআইডি পুলিশের একটি দল। এ সময়ে ট্রাকে থাকা লোকজন ওই কর্তব্যরত পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা করে পুলিশের একজোড়া হ্যান্ডকাপ ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। এতে সিআইডি’র পরিদর্শক আব্দুল আওয়াল, উপ-পরিদর্শক দ্বীপ রাজ, উপ-পরিদর্শক আলাউদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ।

    সিলেটের চিকনাগুল ও শুক্রবারী বাজারের মাঝামাঝি স্থানে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছে সিলেট মেট্রো ও জেলার বিশেষ পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা। হরিপুর সিলেটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ওই ট্রাক দু’টির একটিসহ পুলিশকে আক্রমণ করা দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। ভারতীয় চা পাতা ভর্তি অপর ট্রাকটিকে আটক করে হেপাজতে নিয়েছে সিআইডি পুলিশ। আহত পুলিশ সদস্যদের সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এই রিপোর্ট লেখার পুর্ব পর্যন্ত উক্ত বিষয়ে সিআইডি পুলিশ মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো।

    আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানা যায়, সিলেটে চোরাচালানের পণ্য পরিবহনে জড়িত রয়েছে প্রায় হাজারখানেক লোক, যাদের নিয়ন্ত্রণ করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ও সীমান্তে বসবাসকারী প্রভাবশালীরা। এই চোরাকারবারিরা প্রতিনিয়ত সীমান্ত দিয়ে গরু, মহিষ, বিভিন্ন ধরনের মাদক, চিনি, মসলা, মটরশুঁটি, শাড়ি, থ্রিপিস, সিগারেট, বিস্কুট, প্রসাধনীসহ বিভিন্ন পণ্য ভারত থেকে নিয়ে আসছে প্রতিনিয়ত। অন্যান্য সূত্র বলছে, চোরাকারবারিরা যারাই টিকে আছে, তারা সবাই বিজিবি ও পুলিশের সাথে সমম্বয় করে টিকে আছেন। কিছু অসাধু পুলিশ ও বিজিবি’র সদস্য এর সাথে জড়িত না থাকলে সিলেট সীমান্ত গুলোতে তথাকথিত এই চোরাকারবারি’র সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতো।

    স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, এই বিষয়ে পুলিশ ও বিজিবি’র নাম ভাঙিয়ে আরেকটি চক্র গাড়ী বৈধ, অবৈধ সব ধরণের ব্যবসায়ীদের থেকে ট্রাক প্রতি একটি নির্দিষ্ট হারে চাঁদা নেয়া হয়। সিলেটে চোরাকারবারি বুখাই, পলাশ ও রুয়েল চোরাকারবারি ও চাঁদাবাজির অন্যতম হোতা বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। এর মধ্যে রুয়েল পুলিশের একটি শাখার ড্রাইভারের চাকরি করেন বলে পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করেন। আর পুলিশের খাতায় চিহ্নিত চোরাকারবারি ও একাধিক মামলার আসামী বুখাই ও পলাশ ঠিক করেন কোন গাড়ী থেকে কত টাকা বা কার কোন ব্যবসায়ী থেকে কত টাকা চাঁদা নিবেন।

    সার্বিক বিষয়ে সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) শেখ সেলিম বলেন, পুলিশ মাদক উদ্ধার ও চোরাচালান রোধে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী উপজেলা থেকে প্রায়ই চোরাচালানের মাল উদ্ধার করে পুলিশের বিভিন্ন শাখা। কেউ পুলিশের নাম করে টাকা নিলে এবং অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

    বিজিবির সিলেট সেক্টর কমান্ডার কর্নেল সেলিম হাসান জানিয়েছেন, ‘নজরদারি বাড়ানোয় আগের তুলনায় এখন চোরাচালান অপেক্ষাকৃত কম হচ্ছে। তবে বর্ষা মৌসুমে বিভিন্ন স্থানে পানি থাকায় সব জায়গায় যাওয়া সম্ভব হয় না। বিজিবির নাম ভাঙিয়ে টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের কানেও এসেছে। প্রমাণ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চোরাকারবারিদের গডফাদারদের আইনের আওতায় নিয়ে এলে চোরাচালান রোধ অসম্ভব নয় বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

    এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রো ও জেলার পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা গণমাধ্যমে বলেন, সিলেট সিআইডি পুলিশ চোরাচালান রোধে দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আর কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় চোরাকারবারি ও দুর্বৃত্তদের হামলার সম্মুখীনও হতে হচ্ছে পুলিশকে। তবে যতো বাঁধাই আসুক, সিলেট পুলিশ সব সময় চোরাচালান ও চাঁদাবাজি রোধে কাজ করে যাবে। কেউ পুলিশের পরিচয়ে চাঁদাবাজি করলে এবং কোন অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

    আরও খবর

    Sponsered content