• Archive Calendar

    সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
     
    ১০১১১২
    ১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
    ২০২১২২২৩২৪২৫২৬
    ২৭২৮  
  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • উদ্ভাবন

    চট্টগ্রামে একসময় মাইকিং করা হাছানের হাতে এখন রাষ্ট্রের মাইক!

      মোঃ আঃ রহিম জয় সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৫:২০:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    আসলে ছোট নয়, অনেক বড় কাজে লাগিয়ে দেব। পিএইচডি করে না আসলে তুমি তোমার চেষ্টায় যা পার সেটা করবে। আমার কোনো সাহায্য সে ক্ষেত্রে পাবে না।’ তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পিএইচডি করতে ৪ বছর সময় লাগবে। এই সময়ে রাজনীতিতে আমি পিছিয়ে পড়বো।’ এরপরও প্রধানমন্ত্রী বললেন পিএইচডি করেই দেশে ফিরতে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বেলজিয়ামে এনভায়রনমেন্ট কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি শুরু করেন হাছান মাহমুদ। বেলজিয়ামের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বেলজিয়ামে পড়ার সময় প্রথম বছরে সীমিত স্কলারশিপ পাই। এ দিয়ে আমার ঘরভাড়া ও খাবার-দাবার চলতো। তারপরও আমি বাড়তি আয়ের জন্য ছুটির দিন কাজ করতাম। সঞ্জয় বাবু নামে দিনাজপুরের এক সহপাঠি ছিলেন। তিনি আর আমি এক সাথে থাকতাম। একদিন ছুটির দিনে আমরা দু’জন একটি মেলায় সেল্সম্যানের কাজ খুঁজতে গেলাম। কেউই কাজ দিলেন না। কারণ সবার সেল্সম্যান আছে। মেলায় এক বয়স্ক মহিলা বললেন, আমার সেল্সম্যান লাগবে না। তোমরা একটা কাজ করো ট্রাকে করে আমাদের যে মালগুলো আসবে, সেগুলো আনলোড করতে পার। আমি আর সঞ্জয় বাবু শেষ পর্যন্ত এ কাজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম। বেশ কয়েক সপ্তাহ আমরা ট্রাকে মাল লোড-আনলোড করেছি। এছাড়া ছুটির দিনে পিজারিয়া, মেকডোনাল্ডসেও কাজ করেছি। এভাবে কঠিন সময় পার করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন হাছান মাহমুদ। এরপর ২০০১ সালে দেশে ফিরে আসেন। একই বছর নভেম্বরে জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে বিশেষ সহকারি হিসেবে নিয়োগ দেন। ২০০২ সালে আওয়ামী লীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক করেন। এভাবে তিনি যুক্ত হন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতির সঙ্গে। পাশাপাশি ঢাকায় ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন হাছান মাহমুদ। সেখানে তিনি এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স ও বাংলাদেশ স্টাডিজ পড়াতেন। গত ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই মাস আগ পর্যন্ত সেখানে শিক্ষকতা করেন।

    শিক্ষকতা জীবন সম্পর্কে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিতাম তখন আমার কথাবার্তায় কাউকে বুঝতে দিতাম না, দেশের রাজনীতিতে আমি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমাকে টেলিভিশনে দেখে ছাত্রদের কেউ কেউ জিজ্ঞাসা করতে চাইলেও আমি কখনো তাদের সেই সুযোগ দিতাম না। শিক্ষক হিসেবে সবসময় চেষ্টা করেছি, আমি যে রাজনীতির মানুষ সেটা একদমই যেন প্রকাশ না পায়। শিক্ষকতায় রাজনীতির কোনও প্রভাব পড়ুক সেটা কখনো চাইনি। নির্বাচনের পর যখন মন্ত্রীসভায় স্থান পেলাম, ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি আমার সম্মানে সংবর্ধনা সভা করেছিল। সভায় ছাত্ররা বলেছেন, স্যারকে সব সময় টেলিভিশনে দেখতাম, তিনি যখন পড়াতেন তখন রাজনীতিরও সমালোচনা করতেন মাঝে মাঝে। পাঠদানে রাজনীতিবিদ প্রভাব থাকতো না।’

    তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিরোধীদলের নেত্রী শেখ হাসিনার বেশ কয়েকজন বিশেষ সহকারি ছিলেন। তার মধ্যে দুইজন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। গা ঢাকা দিয়েছিলেন অনেকে। কিন্তু ব্যতিক্রম ছিলেন হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমি তখন মনে করেছি আমার দায়িত্ব নেত্রীর পাশে দাঁড়ানো। সত্যকে প্রকাশ করা। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা। সেজন্য গ্রেপ্তার নিশ্চিত জেনেও আমি দায়িত্ব পালন করে গেছি। এমনকি সে সময় জানতাম আমাকে যে কোন মুহূর্তে গ্রেপ্তার করা হবে। এজন্য আমার ব্যাগে একটা লুঙ্গি, শার্ট, টাওয়েল, টুথপেস্টসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ থাকতো। প্রতিদিন মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলে বাসায় ফিরতাম। আমার স্ত্রীকে বলতাম আজকে হয়তো পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যাবে। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে আমাকে গ্রেপ্তার করার সুযোগ পায়নি পুলিশ।’
    হাছান মাহমুদের মতে, পৃথিবীতে সবচেয়ে মূল্যবান বিষয় হচ্ছে সময়। সময় যেটি বয়ে যায় সেটি কখনো ফেরত পাওয়া যায় না। কারণ কারো যদি স্বাস্থ্যহানি হয়, সেই স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করা যায় হয়তো, কারো যদি ব্যবসায় লোকসান হয়, সেই লোকসানও পুষিয়ে নেয়া যায়। কিন্তু বয়ে যাওয়া সময় ফেরত আনা যায় না। সেই সময়ের মধ্যে মূল্যবান সময় হচ্ছে ছাত্রজীবন।’ তিনি বলেন, ‘ছাত্রজীবনের সময়টি যে ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারবে, সে জীবনে উন্নতি লাভ করবে। জীবন চলার পথে দেখেছি, অনেক মেধাবী ছাত্র পরবর্তীতে সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারেনি এবং হারিয়ে গেছে। তবে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ বিল গেটস, আজকে পৃথিবী বদলে দিয়েছেন মাইক্রোসফটের মাধ্যমে। বিল গেটস কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেল করার কারণে বহিস্কৃত হয়েছিলেন। যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিল গেটস বহিস্কৃত হয়েছিলেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিল গেটসকে নিয়ে গবেষণা হয়। তার অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক প্রকল্প পরিচালিত হয়। সুতরাং ফলাফল খারাপ হলে হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। এরকম অনেক মানুষ পৃথিবীতে আছেন যারা ফলাফল ভালো করেননি, কিন্তু জীবন চলার পথে অনেককে ছাড়িয়ে গেছেন।’ গত ১৪ বছরে জনপ্রতিনিধি হিসেবে সব মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন বলে জানান চট্টগ্রাম-৭ আসনের সংসদ সদস্য ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘কোনো মানুষকে আমি সহজে ফেরাই না, না বলি না। সে যেই হোক। সে কোন দলের, কোন পথের-মতের সেটি আমি কখনো বিবেচনায় আনি না। দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য আমার দুয়ার খোলা রেখেছি। কোনো একটা মানুষ আমার কাছে সাহায্যের জন্য আসলে চেষ্টা করি সাহায্য করার জন্য। সব কাজ যে আমি করতে পারবো কিংবা করে দিতে পারবো সেটা আমি বলবো না, তবে আমি চেষ্টা করি।’

    আরও খবর

    Sponsered content