• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • জাতীয়

    ” ঈশ্বরগঞ্জে কবি আবদুল হাই মাশরেকীর ১১৪তম জন্মবার্ষিকী পালন”

      মোঃ মশিউর রহমান কাউসার, ঈশ্বরগঞ্জ(ময়মনসিংহ)উপজেলা সংবাদদাতা ৫ মার্চ ২০২৩ , ১১:৩৩:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    “মাঝি বাইয়া যাওরে, আমার কাঙ্খের কলসি, ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দেরে” ইত্যাদি গানের লেখক  বাংলা সাহিত্যের অন্যতম মাটি ও মানুষের পল্লী কবি আবদুল হাই মাশরেকীর ১১৪তম জন্মবার্ষিকীতে “মাশরেকী বন্দনায়”  প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে সারা
    দিনব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালিত হয়েছে। দিনটি শুরু হয় তিনটি গ্রুপে শিশু কিশোরদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, চারটি গ্রুপে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতার মধ্যদিয়ে দিনে প্রথম পর্ব শেষ হয়। দ্বিতীয় পর্বে কবির কবর জিয়ারত, পুষ্পস্তবক অর্পণ, পাঠাগার উদ্বোধন, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে।
    কবির ১১৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে (৪ মার্চ) শনিবার ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার ডাক বাংলো চত্বরে  কবি আবদুল হাই মাশরেকী পরিষদের আয়োজনে কবি আলম মাহবুবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব “জাকির হোসেন” গণপ্রজতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব; উদ্বোধক হিসেবে ছিলেন জনাব মাহমুদ হাসান সুমন, চেয়ারম্যান ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ; বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোসা. হাফিজা জেসমিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও); ডাক্তার খোরশেদ আলম ভূঞা, বাংলাদেশ পুলিশ হাসপাতাল রাজারবাগের কনসালটেন্ট; এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বনামধন্য কবি সোহরাব পাশাসহ দেশ সেরা কবি ও সাহিত্যিকরা অনুষ্ঠানে  অংশগ্রহন করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন মাশরেকী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জনাব আজিজুল হাই সোহাগ।
    জন্ম ও মৃত্যুঃ কবি আবদুল হাই মাশরেকী ১ এপ্রিল ১৯০৯ সালে (সার্টিফিকেটে ১৯১৯ সালে) ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জের কাঁকনহাটি গ্রামে মাতুতালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ওসমান গণি সরকার জমিদারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতেন ও তিনি ছিলেন সমাজ সংস্কারক, মাতা গৃহিনী রহিমা খাতুন। ১৯৮৮ সালে ৪ ডিসেম্বর ঈশ্বরগঞ্জের দত্তপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে আবদুল হাই মাশরেকী সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পারি জমান।
    পড়াশোনাঃ ঈশ্বরগঞ্জের বিশ্বেশ্বরী ও চরনিখলা স্কুলে কিছুকাল পড়াশোনা করে জাটিয়া হাই স্কুল থেকে মেট্রোকুলেশনপাশ করেন। পরবর্তী সময় আনন্দমোহন কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা সমাপ্তি না করে চাকুরির সন্ধানে চলে যান কলকাতা। তবে জাটিয়া স্কুলে পড়ার সময় কাউকে না বলে গিয়েছিলেন কলকাতায় তাঁরই রচিত গানগুলো  গ্রামোফোন কোম্পানিতে দিতে। কর্মজীবনঃ আব্দুল হাই মাশরেকীর কর্মজীবন শুরু হয় জোট রেগুলেশনে কিছু সময় ও পরে সাংবাদিকতা। দৈনিক আজাদ, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক বাংলা (দৈনিক পাকিস্তান), কৃষি তথ্য সার্ভিস থেকে প্রকাশিত মাসিক কৃষিকথা পত্রিকায় ১৯৫২ যোগ দিয়ে সম্পাদক হিসেবে ১৯৭৬ সালে অবসরে যান। ১৯৪৬ সালে  হিন্দু মুসলিম রায়টের সময় কলকাতা থেকে ঈশ্বরগঞ্জে চলে আসলে তিনি চরনিখলা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতাও করেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি সংগীত ভালোবাসতেন। কিশোর বয়সে আশেপাশে গ্রামে মানুষকে নিয়ে তিনি গান রচনা করতেন, সুরও দিতেন।
    ভাষা সংগ্রামী আবদুল হাই মাশরেকী ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে জনগণকে আরও সংগঠিত করার জন্য মাঠ পর্যাযে তিনি ঢাকা ও ময়মনসিংহে কাজ করেছেন। ১৯৬৭-৬৮ সালে ‘ ওরে আমার ঝিলাম নদীর পানি’ বিখ্যাত গানের জন্য শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের রাষ্ট্রীয়
    ‘তঘমা- ই- ইমতিয়াজ’ পুরস্কার ঘোষণা করলে আবদুল হাই মাশরেকী তাৎক্ষণিক তা প্রত্যাখান করেন।  উপমহাদেশে তাঁরই লেখা একমাত্র ব্যতিক্রমধর্মী জারী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনভিত্তিক’ দুখু মিয়ার জারী।’ তিনি আরও লিখেছেন- ‘ বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার জারী, কাফন চোরা, যাত্রাপালা, রাখাল বন্ধু, জরিনা সুন্দরী’র মতো জনপ্রিয় পালাগান।
    ‘আল্লা মেঘ দে পানি দে, ছায়া দে’; মাঝি বাইয়া যাওরে ; ওপারে তোর বসত বাড়ি; আমারে কাঙ্খের কলসি; বহুদিনের পিরিত বন্ধু একই দিনে ভেঙ্গো না; ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দেরে ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য গান। দুঃখজনক যে, কবির বিখ্যাত গানগুলো বেনামে কিংবা সংগ্রহ বলে অবহেলিতভাবে চালিয়ে দিচ্ছে আমাদের মিডিয়াগুলো।

    অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার ‘চোর’ গল্প প্রকাশিত হয়। জীবদ্দশায় প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো- ‘দুখু মিয়ার জারি’(পল্লিগীতিকা ১৯৬১), ‘কুলসুম’(ছোটগল্প ১৯৯১), ‘বাউল মনের নকশা’(‘কুলসুম’ এর নামন্তরিত বর্ধিত সংস্করণ ১৯৫৪), ‘সাকো’ (একাঙ্কিকা ১৯৫৯), ‘আকাশ কেন নীল’(অনুবাদ শিশুতোষ বিজ্ঞান ১৯৬২), ‘মাঠের কবিতা মাঠের গান’(কবিতা ১৯৭০), ‘নতুন গাঁয়ের কাহিনী’( নাটক ১৯৭০)। এছাড়াও বাংলা গানের বিশিষ্ট গীতিকার হিসেবে মাশরেকীর অবদান অনস্বীকার্য।

    আরও খবর

    Sponsered content