প্রতিনিধি ৩১ মে ২০২৩ , ৯:৪৭:৩৮ প্রিন্ট সংস্করণ
মোঃ আঃ রহিম জয়, ডেস্ক নিউজ:
চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার এলাকায় সময়ের থালে দিন দিন অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একাধিক বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সাথে যেন রয়েছে চান্দগাঁও থানা পুলিশের গভীর আত্মীয়তা এমনটাই যেন বলছেন সচেতন নাগরিকরা। অভিযোগ উঠেছে, অফিসার ইনচার্জ খায়রুল ইসলাম যোগদানের পর থানা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা ক্রমেই অবনতি ঘটেছে। পাশাপাশি পুলিশের মাঝে অপরাধ প্রবণতা আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এমন হাজারো অভিযোগ যেন অসহায় এলাকাবাসীর।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, বিভিন্ন খাত থেকে মাসে অন্তত মোটা অংকের অবৈধ আয় রয়েছে চান্দগাঁও থানা পুলিশের। তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হল কাপ্তাই রাস্তার মাতা হোসেন এর জুয়ার আসর, বেকারির পাশে ঝর্ণার জুয়ার আসর, টেকবাজার রেল লাইনের পাশে জুয়ার আসর, মৌলভী পুকুর পাড় জিকে কারওয়াসের সাথেই বাপ ছেলের জুয়ার আসর, বাস টার্মিনালের পাশে নিজামুদ্দিনের জুয়ার আসর,ইস্টিশনের পাশে মাদক এবং জুয়া চলছে একই সাথে, খাজা রোডের শেষ মাথায় সুইজ গেট এলাকায় আনোয়ারের জুয়ার আসর, এখানেই শেষ না আরো রয়েছে মাদক কারবারি, আবাসিক হোটেল কেন্দ্রিক পতিতালয়, ফুটপাত হকার, কাঁচাবাজার,কাঠ পাচার, পরিবহন স্ট্যান্ড, এবং আরো ঘৃণ্যঅপরাধেও জড়াচ্ছে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যরা। আর এমন কর্মকাণ্ড অফিসার ইনচার্জের নীরব সমর্থন ছাড়া করার উপায় নেই বলে মন্তব্য বিশিষ্টজনদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চান্দগাঁও থানার মাত্র পাঁচ’শ গজের মধ্যেই দেখা গিয়েছে নানা অপরাধের ভয়ংকর চিত্র। পুলিশকে ম্যানেজ করে চলছে অসংখ্য বেআইনি কর্মকাণ্ড। বিনিময়ে মাসে শেষ নির্ধারিত অংকের মাসোহারা নিয়ে যায় থানার কথিত ক্যাশিয়ার। চান্দগাঁও থানার বিপরীত পাশে অবস্থিত হোটেল টাইম ইন ও চান্দগাঁও রেস্ট হাউজ। এখানে নিয়মিত পতিতাবৃত্তি চলছেই। বহদ্দারহাট বাড়ই পাড়ার মুখে নিরিবিলি ও গুলজার আবাসিক হোটেল কেন্দ্রিক পতিতাবৃত্তি ও মাদক ব্যবসা চলছে নির্বিঘ্নে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরীব অসহায় মেয়েদের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে শহরে এনে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয় এসব আখড়ায়। থানার বিপরীত পাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অন্তত ২০টি বাস কাউন্টার। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়টিতে দিনভর যানজট লেগেই থাকে। থানার পশ্চিমে হাসান বেকারির সামনে গড়ে উঠেছে শহরে চলাচল নিষিদ্ধ গ্রাম সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড। এখান থেকে অন্তত চারশো গ্রাম টেক্সি খাজা রোড হয়ে বলিরহাট পর্যন্ত চলাচল করে। তবে এসব যানবাহন পেশাদার অপরাধীদের নিরাপদ বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়া, চুরির গাড়ি, এক নাম্বারে একাধিক গাড়িও চলছে। এখানকার গাড়ি চালকরা জানান, তারা গাড়ি প্রতি দৈনিক পঞ্চাশ টাকা দেয় পুলিশকে। চান্দগাঁও থানাধীন মোহরা ওয়াপদা অফিস সংলগ্ন ঝর্ণা বেগমের গাঁজার স্পট তার সাথে রয়েছে পুলিশের গভীর সম্পর্ক, ফলে প্রকাশ্যে কাউন্টার বসিয়ে গাঁজা বিক্রি চলে রাতে-দিনে সমানে। বহদ্দারহাট কাঁচা বাজারের ভেতরে চলাচলের রাস্তায় অবৈধভাবে চারশো দোকান বসে নিয়মিত। নিয়ন্ত্রণ করে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা। আর মাস শেষে থানার কথিত ক্যাশিয়ার নিয়ে যায় দুই লক্ষ টাকা। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে ক’দিন আগে কাজিরহাট এলাকায় অবৈধ বাজার উচ্ছেদ করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। তবে সপ্তাহ না যেতেই ফের পুরনো চিত্র দেখা যায়।
এছাড়াও চোরাই কাঠ পাচারকারী সিণ্ডিকেট থেকে দৈনিক অন্তত দুই লাখ টাকা দিতে হয় চান্দগাঁও থানার পুলিশের কথিত ক্যাশিয়ারকে। এ বিষয়ে চান্দগাঁও চার নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এর সাথে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়নি সে ওমান সফরে গেছে বলে আমাদেরকে জানানো হয়।
জানতে চাইলে চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম বলেন, আমি আসার পর থেকে এই থানায় অনেক কাজ করেছি, অনেক ক্রাইম স্পট বন্ধ করেছি, আমরা যখন যা যেখানে খবর পাচ্ছি সেখানে অভিযান পরিচালনা করছি, এবং আমার বিরুদ্ধে যা শুনছেন সব মিথ্যা বানোয়াট আপনারা সহযোগিতা করলে খবর দিয়ে আমরা অবশ্যই সবকিছু বন্ধ করতে পারবো।
পর্ব ১