• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • তথ্যকণিকা

    তানোরের মুন্ডুমালা পৌরসভায় খাবার পানির তীব্র সংকট

      প্রতিনিধি ১ জুন ২০২৩ , ২:৩৩:০৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    সারোয়ার হোসেন, তানোর:

    রাজশাহীর তানোরের মুণ্ডুমালা পৌর এলাকায় সুপেয় খাবার পানির তীব্র সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। স্থানীয়রা জানান, এই সংকট মোকাবেলায় পৌরসভার দৃশ্যমান তেমন কোনো উদ্যোগ না থাকায় পৌরবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা জানান,এক সময়ের কুলি, ধানভাঙা রাইস মিলের চালক ও  মুন্ডুমালা মহিলা কলেজের নৈশপ্রহরী সাইদুর রহমান মেয়রের একতলা বাড়ি হয়েছে চারতলা বিশিষ্ট অট্রালিকা, নিয়েছেন চার চাকার গাড়ী, স্ত্রী হয়েছেন জেলার সর্বোচ্চ নারী করদাতা, পৌরসভায় বোন ও ছেলের হয়েছে চাকরি সবমিলিয়ে এখন তিনি টাকার কুমির বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।

    জানা গেছে, মুন্ডুমালা পৌর সদর ও পার্শ্ববর্তী  কয়েকটি এলাকায়। কোথাও কোথাও ভূগর্ভের এক হাজার ১০০ ফুট নিচেও মিলছে না পানির অস্তিত্ব। এ অবস্থায় নানামুখী সংকটে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বারবার আশ্বাস দিয়েও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। জলবায়ু পরিবর্তন ও খরার কারণে পানির সংকট দেখা দেওয়া এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। অথচ জলবায়ু প্রকল্পের কোটি কোটি টাকার কোনো হদিস নাই। যেখানে পানির তৃষ্ণায় নাগরিকদের বুক ফাটছে, সেখানে পৌরসভার উন্নয়নের জোয়ারে ভাসার গল্প প্রচার করা হচ্ছে। এসব কথিত উন্নয়নের প্রচারে পৌরবাসী রিতিমতো বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।

    সম্প্রতি বিশ্ব জলবায়ু কর্ম সপ্তাহ উদ্‌যাপন উপলক্ষে দিনব্যাপী  পানি শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। মুণ্ডুমালা পৌরসভার আদিবাসী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই শুনানির আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক ও বরেন্দ্র অঞ্চল যুব সংগঠন ফোরাম। পানি শুনানিতে বিভিন্ন দাবিসংবলিত প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে নারী, শিশু ও কৃষকেরা অংশ নেন। শুনানিতে মুণ্ডুমালা মাহালীপাড়ার বাসিন্দা ক্রিস্টিনা হেমব্রম (৪৫) বলেন, এক কিলোমিটারের বেশি দূরে গিয়ে মাত্র এক কলস পানি সংগ্রহ করি। একদিন আমার কোমর ভেঙে যায়। আর্থিক অনটনে ভালোভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। পিরনপুকুর গ্রামের আঙ্গুরী বেগম (৩৮) বলেন, ‘তীব্র খরা এবং পানির অভাবে আমার একমাত্র সম্বল তিনটি ছাগল মারা গেছে। মিশনপাড়ার সুজল্লা মার্ডি (৪০) বলেন, ‘দাবদাহের কারণে আমার একটি গরু মারা গেছে।দিনমজুর আলবিকুস হেমব্রম (৪৮) জানান, একে তো পানির সংকট, তার ওপরে অনাবৃষ্টি। এতে মানুষের রোগবালাইও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

    স্থানীয়রা বলেন, মিথ্যে আশ্বাস আমাদের আর বিশ্বাস হয় না। জনপ্রতিনিধিরা শুধুই কথা বলেন। এই প্রকল্প আসে, সেই প্রকল্প আসে। কিন্তু আমাদের পানির সমস্যা সমাধান হয় না। আমরা চাই, পানির সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন মুণ্ডুমালা পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমানও। তিনি বলেন, ‘কয়েক বছরে পৌর এলাকায় ২৫০টি সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সেগুলো অকেজো হয়ে পড়ছে পানির স্তর আরও নিচে নেমে যাওয়ার কারণে। এখন নতুন করে পাম্প বসাতে গেলে এক হাজার ফুট নিচে গিয়েও পানি মিলছে না। অন্য এলাকা থেকে কীভাবে পানি এনে সমস্যার সমাধান করা যায় সে বিষয়ে আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করছি। কার্যকর প্রকল্প পেতে দেনদরবার করে যাচ্ছি।’শুনানিতে গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, `জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে বরেন্দ্র অঞ্চলে অনাবৃষ্টি, তীব্র দাবদাহসহ কিছু কিছু এলাকায় পানির সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমরা মোটেও দায়ী নই। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য আমাদের যে লস এবং ড্যামেজ হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ পাওয়া আমাদের ন্যায়সংগত অধিকার। শুনানিতে কৃষি খাতে পানি সংকটের চিত্র তুলে ধরেন বরেন্দ্র অঞ্চল জনসংগঠন ফোরামের সভাপতি ও জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত কৃষক নূর মোহাম্মদ। আরও বক্তব্য দেন বারসিকের সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলম, বরেন্দ্র যুব সংগঠন ফোরামের আহবায়ক রুবেল হোসেন মিন্টু প্রমুখ। শুনানি পরিচালনা করেন বারসিকের বরেন্দ্র অঞ্চল সমন্বয়কারী ও গবেষক শহিদুল ইসলাম।

     

    আরও খবর

    Sponsered content