• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • অর্থনীতি

    অভয়নগরে মিশ্র পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করে সফল মৎস্য ব্যবসায়ী মফিজুর রহমান

      প্রতিনিধি ১৩ জুন ২০২৩ , ১:১৭:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি

    যশোরের অভয়নগরে সাদা মাছের সাথে মিশ্র পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ী মো: মফিজুর রহমান। সাদা মাছ ও গলদা চিংড়ি একই সাথে চাষ করে লাভবান হওয়ায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই মিশ্রপদ্ধতির মৎস্য চাষ। তিনি জানিয়েছেন, সাদা মাছ যেমন, রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলবর মাছের সাথে গলদা চিংড়ি চাষ করলে ঝুকি কম থাকে। যে কারণে এচাষে ঝুঁকি কম থাকে এবং লোকসানের আশংকা কম থাকে এবং অধিক লাভবান হওয়া যায়।
    সরেজমিনে গেলে মৎস্য ব্যবসায়ী মফিজুর রহমান দপ্তরী জানান, মে-জুন মাসে সাগরে প্রচুর পরিমাণে গলদা চিংড়ি পোনা জন্মায়। সেই রেনু-পোনা আহরণ করে তা দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বিক্রি করা হয়। এই রেনু-পোনা প্রতি পিচের দাম নেয় ২-৩ টাকা। আবার একটু বড় সাইজ হলে তার ক্রয় মূল্য ৫-৭ টাকা হয়। সেই রেনু-পোটা মৎস্য ঘেরের নিদিষ্ট নিরাপদ কোনে ছোট জায়গা গভীর করে প্রায় ৩ থেকে ৫ ফুট পানিতে ছাড়তে হয়। এসময় খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয় ডিমের কুসুম, গম বা ভুট্টার গুড়া কিংবা ডিমের কুসুমের সাথে মিশিয়ে ছোট ছোট কনা তৈরী করে সেগুলি দিয়ে নার্সিং করা হয়। ২-৪ সপ্তাহ পর ওই রেনুপোনা যখন একটু বড় হয় তখন পকেট খুলে সমস্ত ঘেরে ছড়িয়ে দেয়া হয়। এসময় খাবার হিসেবে বিভিন্ন কোম্পানীর জিরো ফিড ব্যবহার করা হয়। এর ১-২ সপ্তাহ পর ওই পোনার মধ্যে একটু বড় সাইজ অর্থাৎ প্রতি কেজিতে ৩-৪ পিচ হয় এমন বিভিন্ন প্রজাতীর সাদা মাছ আনুপাতিক হারে দেয়া হয়। তখন সাদা মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন কোম্পানীর ফিডসহ নানা জাতীয় সুসম দানাদার খাবার। পাশাপাশি সময়ে সাথে সাথে চিংড়ির রেনু-পোনার খাবারের তালিকায় পরিমাণ ও সাইজ বাড়তে থাকে। এভাবে প্রায় ৮ থেকে ১০ মাস পর্যন্ত এক নাগাড়ে খাবার খাইয়ে নার্সিং করতে হয় এবং প্রয়োজনমত ওষুধ, সার, খৈলসহ নানা জাতীয় প্রোটিন খাবার ব্যবহার করতে হয়।
    তিনি আরও জানান, মাঝে মাঝে মাছ ধরে চেক করতে হয়, কোন প্রকার ভাইরাজের আক্রমণ হয়েছে কি/না। এছাড়া সার্বক্ষনিক তদারকির মাধ্যমে একটি আদর্শ খামার হিসেবে পরিগণিত হয়।
    তাছাড়া ঝুঁকির ব্যাপারে তিনি জানান, যেহেতু চিংড়ি মাছের রোগবালাই বেশি হওয়ায় লোকসানের আশংকায় এচাষ থেকে দুরে থাকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তবে এই পদ্ধতিতে চাষ করা হলে লোকসানের আশংকা থেকে অনেকটাই দুরে থাকা যায়।
    কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, যেহেতু মিশ্র পদ্ধতির চাষ তাই যদি কোন কারণে চিংড়ি মাছ কোন ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হলে সাদা মাছে ওই লোকসান পুশিয়ে দিয়ে যায় বলে মৎস্য চাষীর ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আংশকা অনেকাংশে দুরে থেকে যায়।
    উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, মিশ্র পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে মৎস্য চাষীর ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম থাকে। কারণ একটি প্রজাতীর মাছ ক্ষতিগ্রস্থ হলে অন্য প্রজাতীর মাছ দিয়ে সেই ক্ষতি পুশিয়ে নেয়া যায়। তবে এক্ষেত্রে বেশি বড় জায়গা ব্যবহার না করে ছোট ছোট জায়গা ব্যবহার করা অধিক উত্তম। কারণ একটি পুকুর ক্ষতিগ্রস্থ হলেও অন্য পুকুর গুলি নিরাপদ থাকে। তাই মৎস্য চাষির পুঁজি হারিয়ে নি:স্ব হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা। তবে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে এপদ্ধতিতে চাষ করলে অবশ্যই মৎস্য ব্যবসায়ী লাভবান হবে।
    এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দীন জানান, দেশের একটি মোটা অংকের রেমিটেন্স আসে চিংড়ি তথা সাদা সোনা খ্যাত এই মাছ রপ্তানি থেকে। সঠিকভাবে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে যদি এই মিশ্র পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হয় তাহলে দেশের আমিষের চাহিদা পূরণ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। এছাড়া অভয়নগর উপজেলায় অনেক মৎস্য ঘের রয়েছে, যা থেকে অনেক মাছ উৎপাদন করা হয় এবং অনেক উদ্যোক্তা তৈরী হয়ে মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। এধরনের সফল উদ্যোক্তাদের সরকারীভাবে প্রনোদনা দিয়ে সহযোগীতা করা হবে বলেও তিনি জানান।

    আরও খবর

    Sponsered content