• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • রাজশাহী

    বগুড়ায় এক সন্তান নিয়ে দুই মায়ের আহাজারি

      প্রতিনিধি ৬ জুলাই ২০২৩ , ১:৫১:৩৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    কাওসার মিয়া দিপু জেলা প্রতিনিধি বগুড়া

    বগুড়ার নন্দীগ্রামে শিশু মাহিমকে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ। মাহিমকে ফিরিয়ে দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার পালক মা নাসিমাও। এক সন্তান নিয়ে দুই মায়ের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে থানার পরিবেশ।

    জানা গেছে, গাজীপুরের একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা নাসিমা আক্তার ও নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা নূর বানু। এই সুবাদে দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বান্ধবী নূর বানুর কাছ থেকে ৪০ দিনের শিশুকে মৌখিক দত্তক নিয়ে নিজ বাড়িতে আসেন নাসিমা। ১৪ মাস পর সেই সন্তানকে ফিরে পেতে গত ৫ জুলাই নন্দীগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ করেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের দক্ষিণ চাঁদখানা সারোভাসা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী নূর বানু।

    অবশেষে সেই সন্তানের টানে গত বুধবার (৫ জুলাই) সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামে ছুটে আসেন নূর বানু। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ রাতেই শিশুকে উদ্ধার করে দুই পরিবারের সম্মতিক্রমে মায়ের কোলে তুলে দেন।

    এ সময় শিশুটির পালক মা নাসিমা আক্তার বলেন, আমি নিঃসন্তান ছিলাম। বান্ধবীর পুত্রকে পেয়ে শূন্য বুকটা ভরে গিয়েছিল। ৪০ দিনের শিশুকে নিয়ে ১৪ মাস লালন-পালন করেছি। মাহিমকে ফিরিয়ে দিয়ে বুকটা ফেটে যাচ্ছে। এই বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

    অপরদিকে শিশুটির মা নূর বানু জানান, তিনি গাজীপুরে গার্মেন্টসে কাজ করেন এবং তার স্বামী রিকশা চালান। অভাবের সংসারে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। গার্মেন্টসে কাজ করার সুবাদে তার সঙ্গে নন্দীগ্রামের নাসিমার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। নাসিমার কোনো সন্তান নেই। নূর বানুর সংসারে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তাকে বিভিন্ন সময় আর্থিক সহযোগিতা করতেন নাসিমা। ওই শিশু জন্মের সময় ক্লিনিক ও ওষুধের সম্পূর্ণ খরচ বহন করে নাসিমা। এমনকি শিশুটি জন্মের ৪০ দিন পর অসুস্থ হলেও তিনি চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। চাকরির পাশাপাশি টাকার অভাবে নবজাতকের দেখভাল করা অসম্ভব হয়ে ওঠে। তাই নবজাতককে নিয়ে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে নিজ বাড়িতে চলে যান নূর বানু। সেখানেও আর্থিক সমস্যায় শিশুর চিকিৎসা করাতে ব্যর্থ হন তারা। পরে চিকিৎসার স্বার্থে এবং শিশুর জীবন বাঁচানোর জন্য বাধ্য হয়ে পরিবারের সম্মতিক্রমে ওই শিশুকে বান্ধবী নাসিমার কাছে মৌখিকভাবে দত্তক দেন তিনি।

    তিনি বলেন, কিন্তু ১৪ মাস পর বাধ সাধলেন স্বামী মোফাজ্জল। না বুঝে অভাবের সংসারে ভুল করে শিশু মাহিমকে মৌখিকভাবে দত্তক দিয়ে তারা অনুতপ্ত হন এবং মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।

    নন্দীগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক বিকাশ চক্রবর্তী জানান, এটি মামলা হওয়ার মতো ঘটনা নয়, বিষয়টি মানবিক ছিল। দুই বান্ধবীর মানবিক বন্ধন। শিশুর প্রতি দুই বান্ধবীর ভালোবাসা দেখে থানায় উপস্থিত সবাই আবেগাপ্লুত হন। শিশু মাহিমকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার সময় দুই বান্ধবী নিজেদের জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করলে শিশুটিও কেঁদে ওঠে।।

    আরও খবর

    Sponsered content