• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • চট্টগ্রাম

    এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে জলাবদ্ধতা, মানুষের দুর্ভোগ

      প্রতিনিধি ১১ জুলাই ২০২৩ , ১০:৩৩:৫৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি:

    বৃষ্টি হলেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সকালে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় কোথাও গোড়ালি, আবার কোথাও হাঁটু পর্যন্ত পানি জমেছে। বৃষ্টি শেষ হলেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা জমে ছিল পানি। এই জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পড়েছেন শহরের বাসিন্দারা। তাঁদের ভাষ্য, বর্জ্য অপসারণে অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিতভাবে নালা নির্মাণের কারণে অল্প বৃষ্টি হলেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। শহরের হালদারপাড়া ও টেংকের পাড়, সিও অফিস-পীরবাড়ি সড়ক, কাউতলী থেকে মেড্ডা সড়কের জেলা পরিষদ মার্কেট, কালীবাড়ি মোড় থেকে পৈরতলা বাসস্ট্যান্ড, টিএ রোড, কুমারশীল মোড়সহ একাধিক এলাকায় পানি জমে। পানি নামতেও দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এতে ওই এলাকার ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পৌর কর্তৃপক্ষের দাবি, শহরবাসী যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে নালা ও জলাশয় ভরাট হয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে।

    পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা বিভাগ সূত্র জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের ১২টি ওয়ার্ডে প্রতিদিন গড়ে ৯০-১০০ টন বর্জ্য তৈরি হয়। এর মধ্যে পলিথিন ও প্লাস্টিকজাত বর্জ্য থাকে ৫-১০ টন। শহরের টেংকের পাড়ের ভাগাড়সহ বিভিন্ন এলাকার মোড় থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা শহরের ছয়বাড়িয়া এলাকায় নিয়ে ফেলছেন। এ ছাড়া আরও কয়েক টন গৃহস্থালির বর্জ্য বিচ্ছিন্নভাবে নালা-খালে ফেলা হচ্ছে। এতে শহরের প্রবহমান শহর খাল (টাউন খাল) ভাগাড়ে পরিণত হয় এবং অধিকাংশ নালা ভরাট হয়ে যায়। এ কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
    পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কাউসার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের জনবলসংকট রয়েছে। মানুষ নির্ধারিত স্থানে বর্জ্য না ফেলে যেখানে-সেখানে ফেলছে। তা ছাড়া শহরের জেলা পরিষদ মার্কেট থেকে শহর খাল পর্যন্ত সড়কের পাশে পাইপের নালা নির্মাণ করেছে সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ। ওই পাইপের নালায় চেম্বারগুলো ৫০-৬০ দূরত্বে স্থাপিত। এতে পরিষ্কার করতে সমস্যা হয়। শহরে ধুলাবালুর পরিমাণও বেশি।’

    পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির আমাদেরকে বলেন, নালা নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে। তবে শহরের বাসিন্দারা যত্রতত্র পলিথিনসহ বর্জ্য ফেলায় কিছুদিন পরপর নালা ভরাট হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

    পৌরসভার প্রকৌশল শাখা সূত্র জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের ১৩১ দশমিক ৮৯ কিলোমিটার নালা (ড্রেন) রয়েছে। এর মধ্যে বড় নালা ১৫ দশমিক ৫ কিলোমিটার, মাঝারি আকারের নালা ২৫ দশমিক ৬২ কিলোমিটার ও ছোট আকারের নালা ৯০ দশমিক ৭২ কিলোমিটার। ২০২১ সালে শহরের পাইপকপাড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে টেংকের পাড় হয়ে পুরোনো জেল রোডের সদর পুলিশ সার্কেলের কার্যালয় পর্যন্ত একটি নালা নির্মাণ করে পৌর কর্তৃপক্ষ। কাউতলী থেকে কদমতলী পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ২০০ ফুট নালা নির্মাণ করা হয়। সহকারী প্রকৌশলী (পানি) সুমন দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, শহরের ৩০ শতাংশ নালা ভালো। বাকি ৭০ শতাংশ নালার অবস্থা ভালো নয়। শহরের বাসিন্দাদের অনেকে যত্রতত্র পলিথিন, প্লাস্টিকসহ ময়লা-আবর্জনা ফেলেন। এতে নালার মধ্যে পানিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হয়। ঘণ্টাখানেকের বর্ষণে শহরের বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কাউতলী থেকে মেড্ডা পর্যন্ত শহরের একমাত্র প্রধান সড়কের জেলা পরিষদ মার্কেট, কালীবাড়ি মোড়, টিএ রোড, কুমারশীল মোড়, পুরোনো জেল রোডের টেংকের পাড়, হালদারপাড়ার অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের এলাকা, মুন্সেফপাড়া, ফুলবাড়িয়া, মধ্য মেড্ডা, কাজীপাড়া, সরকার পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে এসব সড়ক দিয়ে চলাচলকারী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন।

    নালার ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে মিশে রাস্তার বৃষ্টির পানি আরও অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ে। এই অস্বাস্থ্যকর পানির ওপর দিয়ে মানুষকে রাস্তা পার হতে দেখা গেছে। দুপুরে বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে পুরোনো জেল রোডের মোড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ সময় অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, গভ. মডেল গার্লস হাইস্কুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয় ও আনন্দময়ী বালিক উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওই মোড়ে পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

    আইনজীবী তারেকুল ইসলাম মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, ‘দিন দিন শহরটি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় জমে পানি। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ কিছু করছে বলে মনে হয় না। নাগরিক সেবার কিছুই পাচ্ছি না।’

    পৌর শহরের অন্তত ১৫ জন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁরা বলেন, পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় থাকা নালাগুলো অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। এসব নালা ভরাট হয়ে গেলেও পরিষ্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।

    আরও খবর

    Sponsered content