• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • বাংলাদেশ

    ভারতের কোথায় আমাদের সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে তা জানানো উচিৎ- ডিপজল

      প্রতিনিধি ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ৯:০৫:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    রিয়েল তন্ময়, বিনোদন

    দেশে হিন্দি সিনেমা আমদানি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তর্ক-বিতর্ক চলছে। কেউ বলছেন, হিন্দি সিনেমা দেশে মুক্তি দিলে আমাদের সিনেমা ব্যবসা চাঙা হবে। কেউ বলছেন, হিন্দি সিনেমার কারণে আমাদের সিনেমা যেটুকু আছে, সেটুকুও ধ্বংস হয়ে যাবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, সাফটা চুক্তির আওতায় উপমহাদেশীয় যে চুক্তি রয়েছে, সে আলোকে যথাযথভাবে সিনেমা আমদানি-রফতানি করা হোক। তবে চলচ্চিত্রের মুভিলর্ডখ্যাত মনোয়ার হোসেন ডিপজল বরাবরই হিন্দি সিনেমা আমদানির বিপক্ষে। এ নিয়ে তিনি সবসময়ই তার যুক্তি তুলে ধরেছেন। বলেছেন, হিন্দি সিনেমা আমদানি ও মুক্তি দিলে আমাদের সংস্কৃতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে। আমাদের যে সামাজিক ও পারিবারিক সংস্কৃতি যা নিয়ে আমরা সিনেমা বানাই, তা আগ্রাসনের কবলে পড়বে। তিনি হিন্দি সিনেমায় অশালীন দৃশ্যের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, এসব দৃশ্য আমাদের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না। তার এ বক্তব্য ভারতের পত্র-পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, আমাদের দর্শক আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির সিনেমাই দেখতে ভালবাসে। তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেছেন, আমাদের দেশে হিন্দি সিনেমা চলবে না। সম্প্রতি তিনি মুক্তিপ্রাপ্ত দুটি হিন্দি সিনেমার ব্যবসায়িক পরিস্থিতি উল্লেখ করে বলেন, এ দুটি সিনেমা আমাদের দর্শক দেখেনি। আমি নিজে হল চালাই, ফলে আমার কাছে সিনেমা দুটির ব্যবসায়িক চিত্র রয়েছে। এ চিত্র অত্যন্ত শোচনীয়। যে কেউ খোঁজ নিলেই আমার কথার সত্যতা পাবেন। এদিকে গত ২৮ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা তৈরি না করে হিন্দি সিনেমা আমদানির অনুমতি দিয়ে জারি করা অফিস আদেশ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ এর অনুচ্ছেদ ২৫ (৩৬) (গ) অনুসারে গত ২০ এপ্রিল জারি করা অফিস আদেশ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আমিনুল হক হেলাল, কাজী শোয়ায়েব হাসান ও মো. নাজিম উদ্দিন। আইনজীবীরা বলেছেন, গত ১০ এপ্রিল বিনিময় শর্তে বাংলাদেশে উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র আমদানির জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জাতীয় আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২৩ এর ২৫ এর ৩৬ (গ) ধারা অনুযায়ী জারি করা অফিস আদেশ অনুসারে অনুমতি দেয়া হয়। এই অফিস আদেশ ও আমদানি নীতির ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করি। রিট আবেদনে বলা হয়েছে, কোন সুনির্দিষ্ট এবং পরিপূর্ণ নীতিমালা তৈরি না করে এই ধরনের অনুমতি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য মোটেও কল্যাণকর নয়। হিন্দি ছবির বিপরীতে বাংলাদেশের যে চলচ্চিত্র রফতানি করা হচ্ছে, তার গুণগতমান এবং রফতানি করা চলচ্চিত্র ভারতে কতগুলো হলে প্রদর্শিত হলো এবং বাংলাদেশের চলচ্চিত্রগুলো ব্যবসা সফল হচ্ছে কিনা, এই বিষয়ে দেখভাল করার কোনও কর্তৃপক্ষ তৈরি করা হয়নি। যার ফলে কম মানস¤পন্ন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র রফতানি দেখিয়ে ভারতের বিগ বাজেটের একটি চলচ্চিত্র বাংলাদেশ আমদানি করে কিছু ব্যক্তি লাভবান হচ্ছে। দিন শেষে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। সদ্য আমদানি করা পাঠান, কিসি কা ভাই কিসি কা জান-চলচ্চিত্রের বিষয় উল্লেখ করে আইনজীবী বলেন, এসব চলচ্চিত্র আসার কারণে বাংলাদেশের অনেক মুক্তিপ্রতিক্ষিত সিনেমা সঠিক সময়ে হলে প্রদর্শিত হতে পারছে না এবং হল মালিক বাংলাদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শন করতে অনীহা প্রকাশ করছেন। এ ব্যাপারে মনোয়ার হোসেন ডিপজলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে আইনজীবীদের করা রিটের সাথে আমি একমত। তারা সঠিকভাবেই যুক্তি তুলে ধরেছেন। ডিপজল বলেন, আমার কথা হচ্ছে, হিন্দি সিনেমা আমদানির বিপরীতে আমাদের কোন সিনেমা যাচ্ছে এবং সেটি ভারতের কোথায়, কবে ও কয়টি সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে, কি পরিমান ব্যবসা করছে, তা জানার অধিকার আমাদের চলচ্চিত্রবাসী ও দর্শকদের আছে। আমরা ঘটা করে হিন্দি সিনেমা আনছি, অথচ আমাদের সিনেমা ভারতে মুক্তি পাচ্ছে কিনা, তা জানব না, সেটা হতে পারে না। যেহেতু সমতাভিত্তিকভাবে আমদানি-রফতানির নীতিমালা রয়েছে, সেটা বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেখা উচিৎ। হিন্দি সিনেমার বিপরীতে আমাদের যে সিনেমা যাচ্ছে, তা যদি সেখানে মুক্তি দেয়া না হয় কিংবা ফেলে রাখা হয়, তাহলে ঐ প্রযোজকের জন্য ক্ষতিকর এবং আমাদের জন্যও অসম্মানের বিষয়। ডিপজল বলেন, পাঠানের বিপরীতে আমাদের যে সিনেমাটি ভারতে গিয়েছে, তার খোঁজ আমরা পাইনি। সিনেমাটি কবে, কোথায় মুক্তি পেয়েছে, এ তথ্যও আমাদের জানা নেই। যদি মুক্তি পেয়ে না থাকে, সেটি কি অবস্থায় আছে, তা আমাদের দর্শকদের জানানো দরকার ছিল। ডিপজল আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যদি এমন হয়, হিন্দি সিনেমার বিপরীতে আমাদের যে সিনেমা ভারতে যায়, সেটি মুক্তি না দিয়ে ফেলে রাখা হয়, তাহলে তা প্রযোজকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কারণ, সিনেমাটি পাইরেসি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তিনি বলেন, আমি আবারও বলছি, হিন্দি সিনেমা আমাদের দেশে চলেনি, চলবেও না। বরং সাম্প্রতিককালে আমাদের নির্মাতারা যেসব সিনেমা মুক্তি দিচ্ছে, সেগুলো হিন্দি সিনেমার চেয়ে ভাল ব্যবসা করছে। শাকিবের ‘প্রিয়তমা’ সিনেমাটি খুবই ভাল ব্যবসা করেছে। আমার মুক্তিপ্রাপ্ত ‘যেমন জামাই তেমন বউ’ সিনেমাটি ভাল যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, দর্শকরা হিন্দি সিনেমার চেয়ে বাংলা সিনেমা দেখতে সিনেমা হলে বেশি যাচ্ছে। এটাই বাস্তবতা।

    আরও খবর

    Sponsered content