• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • চট্টগ্রাম

    সদর উপজেলা ভূমি অফিসে অফিস সহকারী অতনুর অনিয়মের শেষ নেই

      প্রতিনিধি ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১০:০০:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক:

    কক্সবাজারের সদর উপজেলা ভূমি অফিসে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ অফিসে উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) থাকলেও নেই ঘুষ বানিজ্য বন্ধের কোন পদক্ষেপ। পদে পদে ঘুষ-দুর্নীতির কারণে এখানে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এতে করে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।

    এ ভূমি অফিসে আলমগীর নামে মূল নাজির কাম ক্যাশিয়ার থাকা সত্তেও থাকে অন্য কাজে সংযুক্ত করে একজন অফিস সহকারীকে করা হল নাজির৷ যে অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।
    অফিস সহকারী থেকে নাজিরের দায়িত্ব থাকা অতনু পাল কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জেলা নাজির স্বপন কান্তি পাল’র ছেলে৷ মূল নাজির থাকা অবস্থায়, একজন অফিস সহকারী হয়ে দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ একই চেয়ারে দায়িত্ব পালন করে গলাকাটা দিচ্ছে সাধারণ মানুষকে। ফলে হয়রানির শিকার হচ্ছে সেবা প্রার্থীরা।

    জেলা প্রশাসকের কড়া নির্দেশনা থাকা সত্বেও উমেদার নামক দালালদের দিয়ে পাবলিক হয়রানি , জাল খতিয়ান সৃজন সহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে । জেনারেল শাখার স্টাফ হওয়া সত্বেও দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত অদৃশ্য ছায়াবলে কক্সবাজার সদর ভূমি অফিসে একই চেয়ারে আসীন রয়েছে। সরেজমিনে জানা যায়, তার সমসাময়িক বিভিন্ন স্টাফ বদলি হলেও তিনি একই কর্মস্থলে দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবত চাকুরীরত রয়েছেন।

    অপরদিকে সদর উপজেলা ভূমি অফিসের অধীনে পার্শবর্তী (ভূমি) তহসিল অফিস রয়েছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, অফিসের তহশিলদার, অফিস সহকারী, উমেদার-দালাল সবাই ‘ঘুষ বাণিজ্যের’ সঙ্গে কমবেশি জড়িত। অবৈধ লেনদেনকে ঘিরে এই অফিসকেন্দ্রিক শক্তিশালী দালালচক্রও গড়ে উঠেছে।
    গত কয়েক দিন সদর উপজেলা ভূমি অফিস ঘুরে জমির মালিক ও সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নাম প্রস্তাব (নামজারি), মিস মামলা, খাজনা দাখিল থেকে শুরু করে সব কিছুতেই এখানে ঘুষ লেনদেন হয়। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসা সেবাপ্রার্থীদের অনেকটা প্রকাশ্যেই ঘুষের অঙ্ক নির্ধারণ করে দিচ্ছেন। ঘুষ ছাড়া প্রায় কোনো কাজই হচ্ছে না সেখানে।
    ভুক্তভোগীরা বলেন, অফিস নিয়মে প্রত্যেক ধাপে ঘুষ না দিলে ফাইল নড়ে না। ঘুষ লেনদেনে সহযোগিতা করে দালালচক্র। সদর ভূমি অফিস ঘিরে তৎপর এই দালালচক্রে সদস্য সংখ্যা অনন্ত ৩০ জন। তাদের কাজ সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করা।
    দীর্ঘদিন ধরে সদর উপজেলা ভূমি অফিসের নাজিরের পদে মূল নাজির ছিলনা৷ অফিস সহকারীদের করা হত নাজির৷ কিন্তু ২০২২ সালের আগস্টে জেলা প্রশাসন ভূমি অফিসের বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে।
    পরীক্ষার চুড়ান্ত রেজাল্টের পরে নিয়োগপ্রাপ্তদের জেলা প্রশাসন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এল,এ শাখা এবং রাজস্ব শাখাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা ভূমি অফিসে বদলি করেন৷
    তারই ধারাবাহিকতায় সদর উপজেলা ভূমি অফিসের জন্য গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর নাজির কাম-ক্যাশিয়ার পদে মো. আলমগীরকে বদলি করা হলেও এখনো তিনি ওই পদে বসতে পারেননি।
    যোগদানের ৮ মাস পার হলেও তার যে নির্ধারিত পদ রয়েছে সে পদ এখনো পাননি তিনি৷। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিষয়টি জানতে চাইলে নাজির কাম ক্যাশিয়ার পদে বদলি হওয়া আলমগীর জানান, তিনি নিয়মিত অফিস করলেও ওই পদে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বে আছেন অতনু পাল নামে একজন অফিস সহকারী৷ তবে অতনু পাল তার মূল দায়িত্ব অফিস সহকারী হলেও তিনি অদৃশ্য ক্ষমতার প্রভাবে নাজিরের দায়িত্ব রয়েছেন৷
    নাজিরের দায়িত্বে থাকা অফিস সহকারী অতনু পাল জানান, তিনি নাজিরের দায়িত্বে থাকলেও মিলেমিশে কাজ করছেন।
    ভুক্তভোগীরা বলছেন, অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। অনলাইনে আবেদনের পর আবার মূল কাগজপত্র নিয়ে ভূমি অফিসে যোগাযোগ করতে হয়। তখন টাকা না দিলে অনলাইনে ঝুলে থাকে ফাইল।
    পাহাড়তলী এলাকার বাসিন্দা মো. সিরাজ বলেন, ইউনিয়ন ভূমি অফিসে খাজনা দিতে চাইলে তার কাছে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি দুই হাজার টাকায় দাখিলা কেটেছেন আর খাজনা জমা দেখানো হয়েছে ৮১২ টাকা।
    কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন, এসিল্যান্ডকে এক সপ্তাহে তিনবারও অফিসে পাইনা৷ যার কারনে অফিসের স্টাফরা বিভিন্নভাবে হয়রানি করতে সুযোগ হয়।
    ওই দালাল চক্রের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জমি নামজারির জন্য অনলাইনে আবেদন করার পর তদন্ত করে ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে নাম প্রস্তাব পাঠানো হয় উপজেলা ভূমি অফিসে। কিন্তু এই নাম প্রস্তাব পাঠানোর জন্য জমি অনুপাতে ১ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়।
    ঝিলংজা ইউনিয়নের লিংরোডের বাসিন্দা আক্কাস উদ্দিন বলেন, একটা প্রতিবেদনের জন্য একবছর ধরে ঘুরতেছি এ ভূমি অফিসে৷ এভাবে সেবা নিতে আসা অনেক জমির মালিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
    তবে ঘুষ লেনদেনসহ বিভিন্ন অভিযোগ অস্বীকার করে অতনু পাল বলেন, সরকারি নিয়মের বাইরে এই অফিসের কেউ কোনো টাকা নেন না।
    এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) র সরকারি নাম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টার পরেও রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
    কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাহিদ ইকবাল জানান, হয়রানির শিকার হওয়া ব্যক্তিদের একটু আমার কাছে পাঠাবেন৷ আমি অবশ্যই দেখব। নাজির থাকা সত্তেও অফিস সহকারি কেন নাজিরের দায়িত্ব পালন করতেছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে এডিসি জাহিদ ইকবাল জানান, আমি বিষয়টি দেখতেছি।

    আরও খবর

    Sponsered content