প্রতিনিধি ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ , ৩:৫২:০২ প্রিন্ট সংস্করণ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রতিনিধি
বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও ক্রীড়াসংগঠক ডা. ফরিদুল হুদা স্মরণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী গুটিদাড়া খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৪ জানুয়ারি) বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শেরপুর এলাকায় এ খেলা হয়। মহিষের শিং দিয়ে তৈরি এক ধরনের গুটিতে প্রবীণ-নবীনের লড়াইয়ে ঐতিহ্যবাহী এই গুটিদাড়া খেলা অনুষ্ঠিত হয়। দু’দলে ভাগ হয়ে খেলেন তারা। ক্রিকেট কিংবা ফুটবলের মতোই প্রতি দলে ১১ জন থাকে। মহিষের শিংয়ের ছোট্ট গুটিটি মোটা লাঠির (বাঁশের তৈরি) আঘাতে কে কতটুকু নিতে পারলেন, গুটিটি কেউ ধরতে পারলো কিনা তার ওপর নির্ভর করে ‘পয়েন্ট’। এভাবেই খেলার হার-জিত নির্ধারিত হয়। প্রথম ৩০ মিনিটে লাল দল ১২ পয়েন্ট অর্জন করতে সক্ষম হয়। পাঁচ মিনিট হাতে রেখেই সবুজ দল এ পয়েন্ট অতিক্রম করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। খেলায় শেরপুর এলাকার প্রবীণ ও নবীনরা দু’দলে ভাগ হয়ে অংশ নেন।তরুণ খেলোয়াড় জয় খান বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর ধরে খেলি। আগের খেলোয়াড়রা না থাকায় খেলা জমে উঠে না। তবে আমরা আনন্দ পাই। কয়েক বছর ধরেই আনুষ্ঠানিকভাবে এ খেলার আয়োজন করা হয়।’
শিপন খান নামে একজন বলেন, ‘এটি গ্রামীণ খেলা। সাধারণত কৃষি জমিতে যখন ফসল না থাকে তখন হয়। তবে আমরা চাই এটি ভালো কোনো খেলার মাঠে হোক। এতে করে খেলাটি টিকে থাকবে। লোকজন আনন্দও পাবে।’প্রবীণ খেলোয়াড় শাহ আলম খান বলেন, ‘আমি ১২ বছর বয়স থেকে খেলাটি খেলছি। মহিষের শিং দিয়ে গুটি বানানো হয়। আমরা যে গুটি দিয়ে খেলি এটি কমপক্ষে ৫০ বছর আগের হবে। আগে এ খেলা আরও বেশি জমজমাট হতো।
সাহিত্য একাডেমির আবৃত্তি প্রশিক্ষক সোহেল আহাদ বলেন, ‘ডা. ফরিদুল হুদা তার জীবদ্দশায় খেলাটিকে এলাকায় ফিরিয়ে এনেছিলেন। খেলাটিকে ধরে রাখতে কয়েক বছর যাবত ফরিদুল হুদা স্মরণে এ খেলার আয়োজন করা হয়। এলাকার মানুষের বেশ আগ্রহ আছে এ খেলা নিয়ে।’ খেলা শেষে দু’দলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন, ডা. ফরিদুল হুদার ছেলে ডা. নাজমুল হুদা বিপ্লব, মো. ফারুক আহমেদ, ইব্রাহিম খান শাহাদাত, আলী আজ্জম, তোফাজ্জল হোসেন ও সোহেল আহাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।