• Archive Calendar

    সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
     
    ১০১১
    ১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
    ১৯২০২১২২২৩২৪২৫
    ২৬২৭২৮২৯৩০  
  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • বাংলাদেশ

    বগুড়া বাফার গুদামে টিএসপি সারে ভেজাল, গ্রেফতার ১৩জন

      বগুড়া প্রতিনিধি: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ , ১২:০৪:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

    বগুড়ায় আটক হওয়া ৭ ট্রাকে ৯৮ মেট্রিক টন টিএসপি সার পরীক্ষায় ভেজালের প্রমাণ মিলেছে। রাজশাহী মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে দেওয়া এক প্রতিবেদন বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিকে বগুড়ায় ৭টি ট্রাক থেকে ভেজাল সার আটকের ঘটনায় ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে শহরের তিনমাথা এলাকায় বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) বাফার গুদাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

    গ্রেফতারকৃতরা হলো ঢাকার সাভার বনিয়ারপুর এলাকার হাসেন আলীর ছেলে নুর হোসেন (২৬), আব্দুল হাইয়ের ছেলে আবুল বাশার (২৮), আনিছের ছেলে জসিম (২৬), মৃত সুলতান মিয়ার ছেলে সোহেল (৩৫), শাহব উদ্দিনের ছেলে আসাদুল (২৬), মুন্নাফের ছেলে বাবু (২৫), একই এলাকার মৃত আব্দুল হকের ছেলে আব্দুল আউয়াল (৫০), সাভার নগরকোন্ডা এলাকার আজগর আলীর ছেলে তারেক (১৯), একই এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে শাকিল (৩২), কান্দর আলীর ছেলে শাকিল (৩১), মোহাম্মদ আলীর ছেলে হানিফ (৩২), রংপুর মিঠাপুর এলাকার পায়রাবতী গ্রামের আনছার আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (১৮) এবং মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর এলাকার আরশাদ শেখের ছেলে শাহ্ আলম (৪৩)। তারা সবাই ট্রাক চালক ও হেলপার এবং এমএইচআর এন্টারপ্রাইজের কর্মচারী।

    বাফার গুদাম সূত্রে জানা গেছে, সারগুলো পরিবহন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমএইচআর করপোরেশন। সোমবার ৭ ট্রাক ও মঙ্গলবার ১০ ট্রাক সার ভেজাল সন্দেহে জব্দ করা হয়। পরে মঙ্গলবার আরও এক ট্রাক টিএসপি এলে সেটিও আটক করা হয়। এসব ট্রাকে করে আসে মোট ২৫২ টন টিএসপি সার। সেগুলো খালাস না করে পরীক্ষার জন্য গুদাম ক্যাম্পাসে রাখে বাফার কর্তৃপক্ষ। বাকি ট্রাকের সারগুলোর পরীক্ষার প্রতিবেদন এখনও আসেনি।

    ল্যাব টেস্টের বিষয়ে রাজশাহী মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, ‘২৯ আগস্ট ৭ ট্রাকের টিএসপি সারের নমুনা আসে আমাদের কাছে। এই সারগুলোতে সরকারি বিনির্দেশ মোতাবেক কেমিকেল ছিল না। এতে বোঝা যায় সারগুলোতে ভেজাল মেশানো হয়েছে।’

    সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী টিএসপি সারে মোট ফসফেট ওজন ভিত্তিক ৪৬ শতাংশ হবে। আর পানিতে দ্রবনীয় অবস্থায় ৪০ শতাংশ। গবেষণাগারে পাঠানো টিএসপি সার পরীক্ষায় মোট ফসফেটের ওজন ভিত্তিক পাওয়া গেছে ২৩-৩৩ শতাংশ। আর পানিতে দ্রবনীয় অবস্থায় ফসফেট পাওয়া গেছে ১৮-২৭ শতাংশ। তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি সার পরীক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের নির্দেশনা রয়েছে তিন কার্যদিবসের মধ্যে ফলাফল দেয়া। আমরা সেই সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।’

    মঙ্গলবার বগুড়া বাফার গুদামে আসা তদন্ত কমিটির সদস্য চট্টগ্রাম টিএসপি সার কারখানার ম্যানেজার (প্রশাসন) মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, সারগুলো বগুড়ায় আসার পরে কিছু সারের বস্তায় ভিন্নতা পায় বাফার কর্তৃপক্ষ। বগুড়ার বাফার ইনচার্জ চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানালে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি বগুড়ায় আসে।

    এর আগে মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেড সার কারখানা থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি এসেছিল। তারা সারগুলো পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে। একই সঙ্গে বগুড়া বাফার গুদাম কর্তৃপক্ষ নমুনা নিয়ে গবেষণাগারে পাঠায়। বগুড়ার জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক বলেন, পরবর্তীতে ১০টি ট্রাকে আসা সারও ভেজাল সন্দেহে আনলোড করা হয়নি। সেগুলো পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। তার ফলাফল এখনও এসে পৌঁছায়নি। তিনি আরও বলেন, ভেজাল সার গুদামজাত করার চেষ্টায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

    অপর দিকে আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় বগুড়ায় র‌্যাব-১২ ক্যাম্পে ১৩ জনকে আটক করার করার কথা জানান কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মো: তৌহিদুল মোবিন খান। তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে, গত ২৭ আগস্ট চট্টগ্রামের পতেঙ্গা টিএসপি কমপ্লেক্স থেকে এমএইচআর এন্টারপ্রাইজের ১২ ট্রাক টিএসপি সার নিয়ে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে ঢাকার সাভার এলাকায় যাত্রাবিরতিতে ৭টি ট্রাক আসল সার নামিয়ে নকল সার উত্তোলন করে। পরে ২৯ আগস্ট সকালে ৭টি ট্রাক টিএসপি সার নিয়ে বগুড়ার বাফার গুদামে পৌঁছায়। ট্রাকগুলোতে ভেজাল সার আছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন পরীক্ষা ছাড়া সার খালাস বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর ওইদিন সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ৭টি ট্রাক থেকে সারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য তা রাজশাহীতে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউটে পাঠানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ইন্সটিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ শহিদুল ইসলাম নমুনাগুলো পরীক্ষার পর জানান সারগুলো ভেজাল রয়েছে। ভেজাল রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার রাতে ওই ৭টি ট্রাকের চালক ও হেলপারদের আটক করে র‌্যাব।

    র‌্যাব কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার মো: তৌহিদুল মোবিন খান আরও জানান, ভেজাল সন্দেহে বগুড়ায় খালাস না করা আরও ১০টি ট্রাক সারও তাদের নজরদারিতে রয়েছে। ওই ঘটনায় মামলা করা হবে কি’না এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ইতিপূর্বে চট্টগ্রাম টিএসপি কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যরা বগুড়া আসছেন। তাদের পক্ষ থেকেই মামলা করা হবে।

    আরও খবর

    Sponsered content