• Archive Calendar

    সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
     
    ১০১১১২
    ১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
    ২০২১২২২৩২৪২৫২৬
    ২৭২৮  
  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • খুলনা

    নওয়াপাড়ার গোবিন্দ অবশেষে পুলিশের খাঁচায়

      এস এম তৌহিদুল ইসলাম, যশোর প্রতিনিধি: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৪:৪২:১৭ প্রিন্ট সংস্করণ

    নওয়াপাড়া বাজারের একাধিক অফিসে চাকুরী করে অর্থ হাতিয়ে নেয়া ও পন্য দেয়ার নামে নওয়াপাড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়া চিটার গোবিন্দ অবশেষে পুলিশের খাঁচায় আটকা পড়েছে। আদালত কর্তৃক আটক আদেশ উপেক্ষা করে নিজেকে আত্মগোপনে রাখলেও অবশেষে গতকাল সোমবার রাতে অভয়নগর থানা পুলিশের এসআই শহিদুল ইসলাম এর হাতে আটক হয়েছে। তার আটকের খবর মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে পাওনাদারেরা থানায় ধর্ণা দেয় তাদের পাওনা টাকার হিসাব নিয়ে। পুলিশ আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে পরামর্শ দেন। জানা যায়, নওয়াপাড়া বাজারের রূপা এন্ড ব্রাদার্স-এর মালিক মো: আমিনুর রহমান মোল্যা তার পাওনা টাকা আদায় করতে না পেরে গোবিন্দ নামের ওই বাটপারের নামে গত বছর যশোর আদালতে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন যাবৎ মামলা চলার পর টাকা পরিশোধ না করায় ও আদালতে হাজির না হওয়ায় বার বার আদালত অবমাননা করতে থাকে। এমতাবস্থায় বিজ্ঞ আদালত গোবিন্দের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে। গ্রেফতারী পরোয়ানা অভয়নগর থানায় আসলেও সুচতুর গোবিন্দ নিজেকে বিভিন্নভাবে আড়াল করে রাখে। অবশেষে গতকাল সোমবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভয়নগর থানার এসআই মো: শহিদুল ইসলামের হাতে আটক হয় গোবিন্দ। এব্যাপারে এসআই শহিদুল ইসলাম জানান, গোবিন্দকে আটকের পর থেকে থানায় বিভিন্ন পাওনাদারেরা তাদের পাওনার হিসাব নিয়ে থানায় আসতে থাকে। প্রায় ১০/১২ জন ব্যবসায়ী তাদের পাওনার হিসাব নিয়ে আসে। তাদের অধিকাংশের কাছে গোবিন্দের দেয়া ব্যাংকের চেক নিয়ে হাজির হয় তারা। চেক নিয়ে আদালতের স্মরণাপন্য হতে পরামর্শ দেয়া হয়। পাওনাদার আমিনুর জানায়, গোবিন্দ নওয়াপাড়া বাজারে ‘লোকনাথ ট্রেডিং’ নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। তার মিষ্টি কথায় ও চেক জামানত রেখে বিভিন্ন সময় আমার নিকট থেকে মালামাল ক্রয় করে। কিন্তু যথা সময়ে টাকা পরিশোধ না করে টাল বাহানা করতে থাকে। দীর্ঘদিন যাবৎ তার কাছ থেকে টাকা আদায় করতে না পেরে অবশেষে আদালতে মামলা দায়ের করি। নওয়াপাড়া বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সিদ্ধেশ্বর বাবু’র ছেলে শুভ্রদেভ কর্মকার জানায়, আমার বাবা দীর্ঘদিন নওয়াপাড়া বাজারে ব্যবসা করে আসছিলেন। গোবিন্দ আমার বাবার নিকট থেকে চেকের বিনিময়ে পন্য নিয়ে আর টাকা পরিশোধ না করে টালবাহানা করতে থাকে। এতে আমরা বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্থ হই। এমনকি ওই টাকার শোকে আমার বাবা অসুস্থ্য হয়ে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর না ফেরার দেশে চলে গেছে। এতে করে আমরা পুরো পরিবার এখন দু:সহ জীবন যাযন করছি। আমার বাবার চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমরা এখন নি:স হয়ে গিয়েছি। যে কারণে গোবিন্দকে দেয়া ওই মালের টাকা আমরা পরিশোধ করতে পারছিনা। ওই দেনার টাকা পরিশোধ করার কোন উপায় খুজে পাচ্ছিনা। এদিকে গোবিন্দের দেয়া ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার চেক আমার নিকট রয়েছে। এদিকে নওয়াপাড়া বাজারের নিউ বিশ্বাস এর ম্যানেজার মো: প্রিন্স হোসেন জানান, গোবিন্দ আমাদের অফিসের পাওনা ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার মাল নিয়ে টাকা না দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। তাকে আমরা খুজে পাচ্ছিলাম না। গতকাল তার আটকের খবর পেয়ে থানায় ফোন দিয়ে যোগাযোগ করলে আদালতে অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়া গত কয়েক মাস আগে ঝিনাইদহ জেলার এক ব্যবসায়ীকে ইউরিয়া সার দেয়ার কথা বলে তার নিকট থেকে অন্যের ব্যাংক একাউন্টে টাকা এনে তাকে মাল না নিয়ে ওই টাকা উঠিয়ে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। ঝিনাইদহের ওই ব্যবসায়ী এখানে এসে অনেক চেষ্টা করেও তার সাথে দেখা করতে না পেরে ফিরে গেছে। নওয়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী মফিজ ট্রেডিং এর ম্যানেজার সুফিয়ান জানান, গত ৪/৫ বছর আগে গাইবান্ধা জেলার রাজিব নামের এক ভাটা মালিকের নিকট থেকে কয়লা দেয়ার কথা বলে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা নিয়ে গোবিন্দ তাকে কয়লা না দিয়ে তার টাকা আত্মসাৎ করে। পরে ওই ভাটা মালিক আমাদের সাথে ব্যবসা করা কালীন এঘটনা জানালে তার সাথে যোগাযোগ করাতে সক্ষম হই। পরে গোবিন্দ আমাদের মাধ্যমে তার কাছ থেকে সময় নেয় এবং ভাটা মালিক টাকা পাঠানোর ব্যাংক রশিদসহ সকল ডমুমেন্টস আমাদের কাছে জমা দেয়। তখন গোবিন্দ টাকা পরিশোধের চুড়ান্ত কথা দিলেও পরে আর সেই টাকা দেয়নি। এদিকে ওই ভাটা মালিক আমাদের নিকট থেকে তার পাওনা ২ লাখ ১০ হাজার কেটে নেয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতিপূবে নওয়াপাড়া ট্রেডার্সের কয়লা চুরি মামলায় সে জেল হাজত খেটে নিজেকে আড়াল করে রাখলেও সম্প্রতি নওয়াপাড়া বাজারের প্রাণ কেন্দ্র জয়েন্ট ট্রেডিংয়ের বিপরীতপাশে হাছিনা ট্রেডিংয়ের গলিতে জাকজমক পূর্ণ নতুন অফিস নেয়। আবারও শুরু করে নতুন মোড়কে পুরানো ব্যবসা। অফিস নিয়ে ট্রাক বন্দোবস্তকারী মফিজ নামের একজনের মাধ্যমে বগুড়া জেলার ভাটা মালিকের নিকট থেকে কয়লা দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে কয়লা না দিয়ে ঘুরাতে থাকে। এনিয়ে কয়েক দফা শালিশের মাধ্যমে টাকা ফেরৎ দেয়ার কথা বলে আবারও গা ঢাকা দেয়। সুত্র জানায়, নওয়াপাড়া বাজারের নুর ট্রেডিং নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গোবিন্দ দীর্ঘদিন যাবৎ ম্যানেজার পদে চাকুরী করে। সেখানে থাকা কালীন সময়ে তার হাত পাকিয়ে নেয়। সেখান থেকে বের হয়ে শুরু করে তার এই অপরাধী কর্মকান্ড। যা নওয়াপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী মোকামকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে। সে এতটাই চতুর যে, যখন পাওনাদারদের চাপে পড়ে তখন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকে নিজের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে তাদের কাছ থেকে সুবিধা নেয়। যে কারণে তার কাছ থেকে পাওনা টাকা আদায় করা সম্ভব হয়না।

    আরও খবর

    Sponsered content