• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • অর্থনীতি

    প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ, নিহত ৬ আহত ৩০

      ওবায়েদ জীবন, নিজস্ব প্রতিবেদক: ৫ মার্চ ২০২৩ , ২:১৭:৫৬ প্রিন্ট সংস্করণ

    সীতাকুণ্ডে বেসরকারি সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩০ জন। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কদমরসুল (কেশবপুর) এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণে ছিটকে পড়া লোহার টুকরোর আঘাতে ঘটনাস্থলের আধা কিলোমিটার দূরে কর্মরত এক নির্মাণ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তবে কদমরসুল এলাকার মোহাম্মদ শফির মালিকানাধীন অক্সিজেন প্ল্যান্টটিতে কী কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল তা তাৎক্ষণিকভাবে কেউ জানাতে পারেনি। ঘটনার পরপর ফায়ার সার্ভিসসহ স্থানীয় গাউসিয়া কমিটির কর্মীরা উদ্ধারকাজ শুরু করে। উদ্ধারকর্মীদের ধারণা, অনেক শ্রমিক অক্সিজেনের বোতলের নিচে চাপা পড়ে থাকতে পারে। গত বছরের ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেনার ডিপোতে আগুন থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়। এতে ৫১ ব্যক্তি নিহত হন, আহত হন দুই শতাধিক। বিএম ডিপো থেকে সীমা অক্সিজেনের দূরত্ব আধা কিলোমিটার। নিহত ৬ জনের মধ্যে ৫ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট বাংলাবাজার এলাকার মৃত আবুল বাশারের ছেলে মো. ফরিদ (৩২), কদমরসুল এলাকার মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে শামসুল আলম (৬৫), নেত্রকোণা জেলা কমলাকান্দা উপজেলার ছোট মনগড়া গ্রামের মিকি রোঙ্গি লখরেকের ছেলে রতন লখরেক (৪৫), নোয়াখালীর মাইজদী থানার অলিপুর গ্রামের মকবুল আহমেদের ছেলে আবদুল কাদের (৬০) ও লক্ষ্মীপুরের কমলনগর এলাকার মফিজল হকের ছেলে সালাহ উদ্দিন (৩৫)। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকর্মীসহ স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কারখানার স্বাভাবিক কার্যক্রম চলাকালে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের শব্দে আশেপাশের এলাকায় কম্পনের সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলের বেশ দূরে বিভিন্ন ভবনের কাচ ভেঙে পড়ে। এ সময় পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন বাসাবাড়ি, দোকানপাট ও অফিস থেকে বেরিয়ে আসে। ঘটনার সময় কারখানাটির ভেতরে আগুন জ্বলার পাশাপাশি ধোঁয়া আকাশের দিকে উঠতে দেখা যায়। স্থানীয়রা কারখানার ভেতরে ছুটে যান এবং আহত একাধিক শ্রমিককে উদ্ধার করে বাইরে বের করে আনেন। স্থানীয় গাউসিয়া কমিটিও উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। কিছুক্ষণের মধ্যে সীতাকুণ্ড ও কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নির্বাপণের কাজ শুরু করে। আগুনের ভয়াবহতার খবর পেয়ে নগরীর আগ্রাবাদ স্টেশন থেকে আরো তিনটি ইউনিট এসে আগুন নেভানোর পাশাপাশি হতাহতদের উদ্ধার কার্যক্রমে যোগ দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন জানান, বিস্ফোরণে তাদের ঘরের দরজা উড়ে যায়। ঘরে থাকা কাচের জিনিসপত্র ভেঙে যায়। এ সময় তারা ভয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তাদের পাশাপাশি আশেপাশের লোকজন ভয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। অক্সিজেন প্ল্যান্টের আগুনের কুণ্ডুলী দেখে তিনি সেখানে ছুটে যান। ভেতরে প্রবেশের পর ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে থাকা দুটি মরদেহ দেখতে পান। বিস্ফোরণে আহত হওয়া মানুষের আর্তনাদে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। বিস্ফোরণে প্ল্যান্টের চারপাশে দাবানলের সৃষ্টি হয়। বিস্ফোরণে কারখানাটির ভেতরে থাকা দুটি শেড বিধ্বস্ত হয়। ঘটনাস্থলে আশেপাশে টিনের টুকরো পড়ে রয়েছে। প্ল্যান্টটি দুমড়ে মুচড়ে গেছে। চারটি ট্রাকে আগুন ধরে যায়। এগুলোও দুমড়ে মুচড়ে যায়। পাশাপাশি কারখানার অফিসভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
    বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আশেপাশে আধা কিলোমিটার এলাকায় বাড়িঘর ও অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনার কাচ ভেঙে যাওয়ার পাশাপাশি দেয়ালেও ফাটল দেখা দিয়েছে। সীতাকুণ্ডের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল আলম হতাহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
    সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম দুলাল জানান, বিস্ফোরণের খবর পেয়ে তার নেতৃত্বে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আগুন নির্বাপণের কাজ শুরু করে। তাদের পাশাপাশি কুমিরা ও আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের আরো পাঁচটি ইউনিট এসে আগুন নির্বাপণ কাজে যোগ দেন। টানা দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর কারখানার বিধ্বস্ত শেডের ভেতরে প্ল্যান্টের চারপাশের ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়া হতাহতদের উদ্ধার করেছেন। তবে কী কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে তার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার আগে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে না।

    আরও খবর

    Sponsered content