সিলেট থেকেঃ ১ এপ্রিল ২০২৩ , ৩:০৩:২৮ প্রিন্ট সংস্করণ
সিলেটের ওসমানীনগরে বৃষ্টির জল,পাহাড়ি ঢল বহন ক্ষমতা সম্পূর্ণ নদী, খাল ও গোপাট পলিবালি ও ঝুপ জঙ্গলের আবরনে বিলিনের পথে, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বুড়ি নদী,নাটকিলা নদী, কেওয়ালী খাল, দাশপাড়া খাল, হুফরাখালী, রত্নানদী, সেই কবে হারিয়ে ফেলেছে রূপ যৌবন । এতে প্রতিটি গ্রামে সরকারী গোপাট, নদী ও খাল ভূমি খেকু চক্র ও প্রবাভশালীদের দখলে। খাল ও নদীর অনেকস্থানে নির্মান করা হয়েছে ছোট ব্রিজ কালবাট এবং ব্যাক্তিগত মার্কেট সহ বিভিন্ন ধরনের স্থায়ী স্থাপনা। এতে নদী ও খাল পানি ধারন ক্ষমতা হারিয়েছে। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতে উপজেলার গ্রাম গঞ্জের অধিকাংশ লোকালয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে দেখা দেয় দূর্যোগ। এতে উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় বুড়ি নদীর রূপরেখা দেখা গেলও দখলের কারণে নদীটি আজ বিলিন প্রায় । এদিকে সম্প্রতি কেওয়ালী খালের চরালীবন্দ এলাকায় ৩ হাত প্রস্ত খালের উপর বর্তমান সরকারের লক্ষ- লক্ষ টাকা ব্যায়ে প্রায় ৩০ হাত প্রস্ত ব্রিজ নির্মান উক্ত খালের বুরুঙ্গারাস্তা সংলগ্ন খাসের বন্দে ৭০ হাত কেওয়ালী খালের উপর পাবলিক সার্থে এবং অর্থায়নে প্রায় ৩০ হাত প্রস্ত ব্রিজ নির্মান করে খালটিতে পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। এদিকে নাটকিলা নদীর কলারাই মুতিয়ারয়গাও সংযোগ রাস্তা বিহীন নিচু ব্রিজ উপজেলার একাধিক স্থানে নদী ও খালের পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সরকারী অর্থায়নে অপরিকল্পিত ব্রিজ নির্মান করা হয়েছে এবং শীতকালে নদী ও খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ার পর স্থানীরা নদীর তলদেশে গর্ত করে মাটি তুলা তুলতে দেখা যায়।
কালের বিবর্তনে বিশাল বুড়ী নদী, নাটকিলা নদী, কালনী নদী, খাল, সরকারী দীঘি ও ডোবা সমতল বসতবাড়ি ও ধানী জমিতে পরিণত হয়েছে। নদী ও জলাশয় গিলে ফেলেছে এলাকার প্রভাবশালীরা।বুড়ী নদী সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার উত্তর পূর্ব কোনে দয়ামীর, চিন্তামনি দিয়ে প্রবেশ করে উছমানপুর, বোয়ালজুড়, তাজপুর, গোয়ালা বাজার, বুরুঙ্গা, পশ্চিম পৈলনপুর ও সাদীপুর ইউনিয়ন ছুঁয়ে বর্তমান বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলাকে বিভক্ত করে নবীগঞ্জের দিকে প্রবাহিত হয়েছিল।ওসমানীনগর উপজেলায় বুড়ী নদীর আকাঁবাকাঁ দৈর্ঘ্য প্রায় ৫০ কিলোমিটার। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের অধিকাংশ স্থানেই নদীর রূপ রেখা রয়েছ । উপজেলার নদী ও খাল জল প্রবাহের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার কারণে বর্ষায় বন্যাক্রান্ত হয়ে চরম দূর্ভোগে স্বীকার । এদিকে শুকনা মৌসুমে বোরো সহ বিভিন্ন ফসল পানি সেচের কারণে কৃষক আবাদ করতে পারছেনা। এতে এলাকার কৃষক সহ জনসাধারণের দাবি বিলীন হয়ে যাওয়া নদী ও খাল দখল মুক্ত করে খনন করা হলে হাজার হাজার হেক্টর জমি ১ ও ২ ফসলা ধানী জমিতে পরিনত হবে এবং অন্যদিকে অনাকাংখিত বন্যা থেকে রক্ষা পাবে উপজেলাবাসী। কিন্তু নদী ও হাওর খাল অপরিকল্পিত ভাবে ছোট ব্রিজ ও কালবাট নির্মন করে নদী ও খালকে গলাটিপে হত্যা করেছে প্রভাবশালীরা। এবিষয়ে ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামিম আহমদ বলেন, নদী ও খালে দিয়ে আগের মতো নৌকা চলাচল করতে দেখা যায়না। প্রচন্ড খরস্রুতা নদী, খাল, বিল ও হাওয়র পলিবালিতে ভরে যাওয়ায় উপজেলাবাসীর ক্ষতির কারণ। তিনি আরও বলেন নদী ও খাল খনন করা হলে পাকৃতিক মাছ এবং কৃষি জমিতে সহজে ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে তাই নদী, খালের পরিচর্যায় সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন তিনি । উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলিমা রায়হানার সাথে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথাবলা সম্ভব হয়নি। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী বলেন নদীর জায়গা অবৈধ দখলের একটি তালিকা তৈরি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
সিলেটে ২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেছেন পাকৃতিক ভারসাম্য টিকিয়ে রাখতে আমাদের নদী, হাওর, খাল ও গোপাটের দিকে সু নজর রাখতে হবে। ব্যাক্তি সার্থ হাসিল করার জন্য সরকারী ভূমি দখল করে ভুমি খেকুরা যেন সমাজ এবং রাষ্ট্রের ক্ষতি না করতে পারে এদিক সবাই সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।