• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • নাগরিক সংবাদ

    তাহিরপুর এক যুবককে পিটিয়ে খুন

      প্রতিনিধি ২৫ এপ্রিল ২০২৩ , ৫:২৭:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ

    সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:-

    এ কেমন বর্বরতা অপহরণের পর চার হাত পা ভেঙ্গে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করলো মোশারফ ওরফে কালা বাহিনীর সদস্যরা শাকিব রহমান নামে এক যুবককে অপহরণের পর বাড়িতে আটকে রেখে চার হাত পা ভেঙ্গে বর্বোরিচিত কায়দায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর খুন করেছে মোশারফ বাহিনী ওরফে কালা বাহিনী সদস্যরা।
    মঙ্গলবার ভোররাতে তাকে সিলেট এমএমজি ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হলে সেখানকার জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ সকাল সাড়ে টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
    এ সময় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া কালা বাহিনীর সদস্যরা হাসপাতাল মর্গে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে আসে।
    নিহত শাকিব রহমান উপজেলার উওর বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগটিয়া টেকেরগাঁও গ্রামের মুজিবুর রহমানের জেষ্ঠ ছেলে।
    মঙ্গলবার বিকেলে তাহিরপুর থানার ওসি সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ৮ থেকে ৯ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র পুর্ব পরিকল্পিতভাবে ওই যুবককে পিটিয়ে চার হাত পা ভেঙ্গে নির্মমভাবে খুন করেছে।
    মঙ্গলবার দুপুরে সরজমিনে গেলে উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামবাসী, প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহত শাকিব রহমানের পরিবারের লোকজন জানান, সোমবার রাত ১১টার পর পুর্ব বিরোধের জের ধরে গ্রামের প্রভাবশালী মোশারফ হোসেন তালুকদার ওরফে কালা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য গ্রামের চক বাজার থেকে শাকিবকে জোর পুর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের পর কালা বাহিনী প্রধান মোশারফ হোসের বসত বাড়ির গেইট বন্ধ করে বসত ঘরের বৈঠকখানার মেঝেতে শাকিবকে ফেলে রেখে তার চার হাত পা বেঁধে রাত ০১.৩৫ থেকে রাত ০২টা ০৫ মিনিট পর্য্যন্ত সময় ধরে ১২ থেকে ১৫ জন সদস্য সংঘবদ্ধ হয়ে বাঁশ, কাঠের রোল, লোহার রড, লোহার শাবল দিয়ে বর্বোরিচিত কায়দায় পিটিয়ে পিটিয়ে চার হাত পা ভেঙ্গে ফেলে ঠান্ডা মাথায় খুন করে লাশ ফেলে রাখে শাকিবের।
    নিহত শাকিকের পিতা মুজিবুর রহমান জানান, খবর পেয়ে নিজ ছেলেকে উদ্ধারের জন্য গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে রাতে মোশারফরে বাড়িতে গেলে তার উপর হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যা চেষ্টা চালায় মোশারফ ও তার লালিত সদস্যরা। প্রাণ রক্ষায় ছেলেকে ফেলে পালিয়ে এসে আমি থানা পুলিশকে ফোন করে ছেলে উদ্ধারের আকুতি জানাই রাতেই।
    তিনি জানান,শাকিবকে সরাসারি হাত পা বেধে মারপিটে অংশ নেয়, উপজেলার ঘাগটিয়া বাঁশপাড়ার কালা বাহিনী প্রধান মোশারফ হোসেন তালুকদার ,তার ছেলে মোনায়েম হোসেন রাজু তালুকদার, মোশারফের সহোদর মোশাহিদ তালুকদার, মোহিনুর তালুকদার, মোশারফের শ্যালক শিবুল, নুরুজ আলী, কাহার, বাহার, রফু সহ কমপক্ষে ১৫ থেকে ১৬ সদস্য।
    জজ মিয়া নাঠক: পুর্ব বিরোধের জের ধরে বর্বোরিত কায়দায় শাকিব রহমানকে কালা বাহিনীর সদস্যরা গভীর রাতে ঠান্ডা মাথায় খুন করার পর নিজেরাই থানা পুলিশেকে ফোন করে ‘জজ মিয়া’ নাঠক সাজিয়ে উল্টো শাকিব হত্যাকান্ডের ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে জানায় মোশারফরে বাড়িতে আক্রমন করতে এসেছে শাকিব ও তার পিতা মুজিবুর রহমান। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শাকিবের অবস্থা আশংকাজনক দেখে তাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দেয়।
    অপরদিকে কালা বাহিনীর লোকজন মুজিবুর রহমানের বসত বাড়িতে হামলা করবে এমন গুজব রটিয়ে মুজিবুর রহমানের গোটা ৮পরিবারের সদস্যদের রাতভর বাড়ি ছাড়া করে রাখে যেন শাকিবের মৃত্যুর ঘটনা আড়াল করে রাখা যায়।
    পুলিশ ঘটনা জেনে ফেলায় প্রথমে লাশ গুমের চেষ্টা থেকে সড়ে এসে লালিত কয়েকজনকে দিয়ে মোশারফ মৃত জেনেও শাকিবের লাশ চিকিৎসার জন রাতে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। সেখানকার চিকিৎসকগণ সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দিলে ভোররাতে সিলেট ওসমানীতে নিয়ে গিয়ে শাকিবের লাশ ফেলে রেখে মোশারফের লালিত তিন সদস্য পালিয়ে আসে।
    ২০১৬ সালে ফের শাকিবকে হত্যা চেষ্টা চালায় কালা বাহিনীর সদস্যরা: শাকিবের পরিবােের লোকজন ও গ্রামবাসী জানান, ২০১৬ সালে পুর্ব বিরোধের জের ধরে শাকিবকে ফের আরো একবার হত্যা চেষ্টা চালায় মোাশারফ ওরফে কালা বাহিনীর সদস্যরা। সে সময় গ্রামের চক বাজারেই ধারালো ছুরি দিয়ে মাথায় ও হাতে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তার্থ জখম করে শাকিবকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়।
    ৮ পরিবারের অগ্নিসংযোগ: ২০১৬ সালের পুর্বে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোশারফ ওরফে কালা বাহিনীর সদস্যরা নিহত শাকিবের পিতা মুজিবুর রহমান ও তাদের স্বজনদের ৮টি বসতবাড়ি পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে গ্রামছাড়া করে রাখে টানা কয়েক মাস।
    কালা বাহিনী প্রধান মোশারফের যত পদবী: শিক্ষায় ৮ম শ্রেণি পাস না করলেও জাদুকাটা নদীর তীর কেটে বালু পাথর লুটের মূল হোতা, কয়লা ব্যবসায়ী, সরকারি প্রকল্পে লুটপাটে সিদ্ধহস্ত কালো টাকার মোশারফ তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি, তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গুপের সাধারন সম্পাদক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পদবীধারী। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা সরকারি দলের নেতাকর্মী এবং উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীলদের সাথে রয়েছে অতি সখ্যতা। গত এক যুগের বেশী সময় ধরে থানা পুলিশ, জেলা , উপজেলা প্রশাসন এবং আদালতে কমপক্ষ্যে ভোক্তভোগীরা ৩০টিরও বেশী অভিযোগ দিয়ে আসলেও কালা বাহিনী প্রধান মোশারফ হোসেন ও তার লালিত সন্ত্রাসীরা বরাবরই থেকে যায় অধরা।
    নিহত শাকিব হত্যাকান্ড সম্পর্কে বক্তব্য জানতে মঙ্গলবার সন্ধায় উপজেলার ঘাগটিয়া বাঁশপাড়ার কালা বাহিনী প্রধান মোশারফ হোসেনের ব্যাক্তিগত মুঠোফোনে কল করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
    মঙ্গলবার সন্ধায় ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এসএসপি) আলী ফরিদ আহমদ জানান , আমি সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এটি মুলত অপহরণ পুর্বক পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকান্ড, যুবককে হাত পা বেঁধে বাড়িতে আটকে রেখে নির্মম ভাবে বর্বোরিচিত কায়দায় পিটিয়ে পিটিয়ে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছে খুনী চক্র। আসামীদের গ্রেফতারে সোর্স নিয়োগ করা হয়েছে খুব শ্রীঘ্রই হত্যকান্ডে জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও জানান এএসপি।

    আরও খবর

    Sponsered content