• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • খেলাধুলা

    যুব উন্নয়নে ক্রীড়ার ভুমিকা

      এম. জুলফিকার আলী ভূট্টো, বিশেষ প্রতিনিধি- ২৮ এপ্রিল ২০২৩ , ৮:৫২:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ

    মো. সামসুল ইসলাম, ক্রীড়া ভাষ্যকার, বেতার এবং টেলিভিশন

    আসুন আমরা একটা সাধারণ জরিপ করি, আপনার আশপাশের ৫ জন শিশুকে কাছে ডেকে আলাদা আলাদা জানতে চান সে বড় হয়ে কি হতে চায়? ৪ জনই হয়তো বলছে ডাক্তার/প্রকৌশলী হবো। অপর একজন বলছে আমি সাকিবের মতো খেলোয়াড় হবো। প্রথম ৪ জন শিশু কি নিজেরা চিন্তা চেতনা থেকে বলেছে? অবশ্যই না, বিষয়টি তাদের অভিভাবকগণ তাদের মেধা ও মননে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। শিশুরা তা আওড়াচ্ছে মাত্র। অন্য দিকে আমি নিশ্চিত শেষের শিশুটি নিজের ভাবনা থেকেই বলেছে। তাহলে কি অভিভাবকবৃন্দ ভুল কিছু শেখালেন? একেবারেই না, বরং আমি বলব, তারা গতানুগতিক কথা বলেছেন।

    সচেতন এবং সু-শিক্ষিত অভিভাবক হিসেবে আমরা আরও একটু অগ্রসরমান চিন্তা করতে পারতাম। নীতি কথায় পেট ভরে না ঠিকই কিন্তু নীতিবাক্য ছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পথ দেখানো যায় না। তাই আমরা আমাদের প্রতিটি শিশুর মনে প্রথমেই ঢোকাতে চাই, কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবে-আমি একজন ভাল মানুষ হতে চাই। তারপর স্থান, কাল, পাত্র বিবেচনায় পরবর্তিতে সে তাঁর পেশা নির্বাচন করবে। এটাই বুঝি আদর্শ শিক্ষা হতে পারে, আমাদের কোমলমতি শিশুদের জন্য।

    একবার ভাবুনতো, সবাই যদি ডাক্তার আর ইন্জিনিয়ার হবে-তাহলে আমাদের সমাজে প্রয়োজনীয় অন্যান্য পেশার মানুষ আমরা পাব কোথায়? বরং আপনি আপনার শিশুকে ঐ শিক্ষাই দিন যে, সমাজের জন্য প্রতিটি পেশাই প্রয়োজনীয় এবং অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

    এবারে আসা যাক আজকের বিষয়ে, যুব উন্নয়নে ক্রীড়ার ভুমিকা-বিষয়টির ব্যাপকতা অনেক দুর অব্দি বিস্তৃত। আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, ঠিক তেমনি আজ যে শিশু জন্ম নিল সে ক্রমান্বয়ে বড় হবে, শিশু, বালক/বালিকা, কিশোর/কিশোরী, যুবক/যুবতী এভাবেই তারা একদিন পুর্ণাঙ্গ মানুষ হয়ে বেড়ে উঠবে। আমরা আমাদের চারপাশের এই শিশুদের জন্য যদি বাস যোগ্য পরিবেশ গড়ে দিতে না পারি, তাহলে সুস্থ দেহে, সুন্দর মন নিয়ে আজকের শিশুরা বেড়ে উঠবে কিভাবে? আমাদের প্রাণপ্রিয় ছেলে/মেয়ের সুস্থ এবং সুন্দর বিকাশ সু-নিশ্চিত করতে আমরা অভিভাবকগণ কতটা সজাগ এবং প্রস্তুত আছি, আমাদের নিজেকে প্রশ্ন করে জেনে নেই।

    সত্যিকার অর্থে আমরা সব সময় ক্ষুদ্রার্থে চিন্ত করি, কিন্তু বৃহদার্থে চিন্তা করে দেখুন, আমি আপনি আমরা কেউই সে অর্থে আমাদের শিশুদের জন্য নিরাপদ পৃথিবী গড়ে তোলার ব্যাপারে সজাগ নই। সুতরাং আমরা নিজেরা আগে মানুষিক ভাবে প্রস্তুত হবো এবং আমদের শিশুদের সুস্থ সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠতে সহায়তা করবো। বর্তমান প্রজন্মের শিশু-কিশোররা ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বান্ধব পরিবেশ পাচ্ছে না, ফলে তাদের মেধা এবং মননের সুস্থ বিকাশও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।

    আজকের শিশুরা দলবদ্ধ কাজ কি, কঠোর পরীশ্রম করে কিভাবে প্রতিপক্ষকে হারাতে হয়, পরাজয়কে কিভাবে হাসিমুখে বরণ করে নিতে হয় এগুলো কিছুই তারা জানতে/অনুভব করতে পারছে না। কারণ তারা ক্রীড়া কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত নয়। এই শিশুরা বড় হয়ে সমাজ/দেশের উন্নয়নে কিভাবে নিজেকে সম্পৃক্ত করবে বা অবদান রাখবে, সে বিষয়ে আমি সন্দিহান। একজন মানুষের জন্য কি পুথিবিদ্যাই যথেষ্ট? অবশ্যই না, পাশাপাশি সামাজিক এবং পারিপার্শ্বিক জ্ঞানও ঢের প্রয়োজন।

    আমরা দেখছি আজকের সমাজে ইভটিজিং, মাদক এবং জঙ্গিবাদের মতো সামাজিক অবক্ষয় আমাদের কিশোর-যুবাদের গ্রাস করছে। সুতরাং আমার ছেলে/মেয়েটিও কিন্তু নিরাপদ নয়। যে কোন ভাবে যে কোন সময় যে কেউই এই মরণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে। তাই অসুখ হবার পর রোগ সারানোর চেয়ে রোগ প্রতিরোধ করা বুদ্ধিমানের কাজ। আর সে কারণেই আমরা আমাদের শিশু/কিশোর/যুবাদের জন্য সকলে মিলে এক যোগে সুন্দর আবাসভুমি গড়ে তুলবো। যেখানে প্রকৃত শিক্ষাদানের পাশাপাশি নানা রকম সহশিক্ষা কার্যক্রমের ব্যবস্থা থাকবে।

    ক্রীড়া এক্ষেত্রে সর্বোৎকৃষ্ট উপায়-এতে শরীর মন দুটোই ভাল রাখা সম্ভব হবে। সাংস্কৃতিক চর্চা এবং কর্মকান্ড আপনার শিশুর মেধা-মননকে আরও শানিত করবে তারা সৃজনশীল চিন্তা করতে শিখবে। প্রকৃত শিক্ষায় সু-নাগরিক হয়ে বেড়ে উঠলে সে নিজে থেকেই তাঁর জন্য সে উত্তম পেশা বেছে নিতে শিখবে, প্রয়োজনে আমরা সাহায্য করবো। আমাদের দেশে এমবিবিএস পাশ করার পরও অনেকে পুলিশ কর্মকর্তা/কাষ্টমস কর্মকর্তা/ব্যবসায়ী হিসেবে সফল হয়েছেন। তাই ঢালাও ভাবে আমরা আমাদের শিশুদের ডাক্তার/প্রকৌশলী বানানোর চেয়ে যে শিশু যে কাজটি বেশী ভালোবাসে তাকে সে ভাবেই বেড়ে উঠতে দেয়া উচিৎ। আসুন আমাদের শিশু/কিশোর/যুবকদের লেখাপড়ার পাশাপাশি বেশী করে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করি, সু-নাগরিক করে গড়ে তুলি। লেখক-মো. সামসুল ইসলাম, ক্রীড়া ভাষ্যকার, বেতার এবং টেলিভিশন।

    আরও খবর

    Sponsered content