• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • অর্থনীতি

    উৎপাদন বাড়লেও এবার রাজশাহীর আমের আকার ছোট

      প্রতিনিধি ১৫ মে ২০২৩ , ৫:১৭:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ শিবলী সাদিক রাজশাহী

    রাজশাহীতে গত বছরের তুলনায় এবার আম উৎপাদন বেশি হলেও আকার ছোট রাজশাহীতে গত বছরের তুলনায় এবার আম উৎপাদন বেশি হলেও আকার ছোট রাজশাহীতে গত বছরের তুলনায় এবার আম উৎপাদন বেশি হলেও আকার ছোট। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় আমের আকার ছোট হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফল গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা।

    বৈজ্ঞানিক ও কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, এ বছর গাছে প্রচুর মুকুল এসেছিল। গুটিও সেভাবে হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় আকার ছোট। সাধারণত গাছে আমের সংখ্যা বেশি থাকলে আকার ছোট হয়—এমনটি জানালেন রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এবার প্রতি গাছে আমের সংখ্যা বেশি। সময়মতো বৃষ্টি হলে কিছু ঝরে যেতো, বাকিগুলো দ্রুত বড় হতো। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে আকার ছোট হয়ে গেছে।’

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, গত বছর এক হাজার কোটি টাকার আম বিক্রি হয়। এবার দেড় হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। গত বছর ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছিল। এ বছর ১৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ২ লাখ ৫৮ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন হবে। এর মধ্যে ৩০০ মেট্রিক টন বিদেশে রফতানি হবে। রাজশাহী আম-৫ সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় আমের আকার ছোট এদিকে, গত বছর ১৩ মে থেকে গুটি আম পাড়া শুরু হয়েছিল। তবে এবার ৪ মে থেকে এই আম পাড়া যাবে বলে ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসন। গত পাঁচ বছর ধরে আম পাড়ার সময়সীমা বেঁধে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। যদিও এবার ১০ দিন আগে থেকে আম পাড়ার তারিখ নির্ধারণ করায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

    আম চাষিরা জানিয়েছেন, আগাম কিছু আম পরিপক্ব হলেও বেশিরভাগ এখনও অপরিপক্ব। পরিপক্বতা বলতে আঁটি পরিপক্ব হওয়াকে বুঝিয়ে থাকেন চাষিরা। কারণ আঁটি পরিপক্ব হওয়ার আগে আম পাড়লে পাকে না। কেমিক্যাল দিয়ে পাকাতে হয়। এ জন্য অনেক সময় কাটার পর দেখা যায় আঁটি সাদা কিংবা কাঁচা। তাই পরিপক্ব না হওয়া পর্যন্ত আম পাড়তে চান না চাষিরা। এ অবস্থায় ঘোষিত ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডারে ৪ মে থেকে গুটি আম পাড়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ চাষি এখনও অপেক্ষা করছেন। কারণ গুটি আম পরিপক্ব হতে আরও দু’একদিন লাগবে।

    চাষিদের অভিযোগ, এবার আম পাড়ার সময় নির্ধারণে তড়িঘড়ি করেছে জেলা প্রশাসন। বেশিরভাগ বাগানের আম না পাকতে ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেছে। এক্ষেত্রে বাগান পর্যবেক্ষণ ও চাষিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করা হয়নি।

    রাজশাহী আম-২
    এবার প্রতি গাছে আমের সংখ্যা বেশি
    তবে জেলা প্রশাসন বলছে, একাধিক বাগানের আম পেকেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরামর্শ ছিল, চাষিরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন। সে জন্য সমন্বয় সভা করে আম পাড়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে চাষিদের।

    পুঠিয়ার বানেশ্বর হাটে কথা হয় ভাল্লুকগাছি গ্রামের আম চাষি জয়নাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এবার আমের আকার ছোট। ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার প্রকাশের পর গুটি আম পেড়েছেন কয়েকটি বাগানের চাষিরা। তবে তা খুবই কম এবং নতুন লাগানো গাছের আম। পুরনো গাছের গুটি আম পরিপক্ব হয়নি। একই অবস্থা গোপালভোগ ও খিরশাপাতসহ অন্যান্য আমের। এগুলো কেটে দেখেছি, কেবল আঁটি হয়েছে, তা সাদা। এগুলো দিয়ে আচারও হবে না। কারণ আচার বানাতেও কিছুটা পরিপক্বতা লাগে।’

    রাজশাহী-চাঁপাই এগ্রো ফুড প্রোডিউসারের প্রতিষ্ঠাতা আনোয়ারুল হক। তার ৫০ বিঘা জমিতে আম বাগান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জাতের আম চাষ করেন। আগে তাদের মতো চাষিদের সঙ্গে বৈঠক করে ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার করা হতো। তারা বাগানের প্রকৃত অবস্থা অনুযায়ী মতামত দিতেন। কিন্তু এবার তারা ডাক পাননি জেলা প্রশাসনের সভায়। কৃষি কর্মকর্তারা কয়েকজন চাষির মতামতের ওপর ভিত্তি করে আম পাড়ার দিন নির্ধারণ করেন। এ অবস্থায় কেউ কেউ আম পেড়ে দেখেন কাঁচা।

    আনোয়ারুল হক বলেন, ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার মেনে কিছু গুটি আম পেড়েছিলেন চাষিরা। পরে কেটে দেখা গেছে, পরিপক্ব হয়নি। তবে আজ (১৩ মে) আম পাড়া যাবে। গত বছর এই দিনে আমরা আম পেড়েছিলাম। পরিপক্ব হয়েছিল।’

    রাজশাহী আম-১
    অনাবৃষ্টির কারণে আমের আকার ছোট হয়ে গেছে
    আম পাড়ার সময় নির্ধারণের সভায় চাষিদের প্রতিনিধি ছিলেন উল্লেখ করে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেখানে ১০ মে’র পর আম পাড়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু কৃষি বিভাগ ও জেলা প্রশাসন আগেই আম পাড়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। কেন এমন সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, তারাই ভালো জানেন।’

    এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, ‘সভায় চাষি ও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন চারঘাট এবং বাঘার কিছু বাগানের আম পরিপক্ব হয়েছে। তাই আলোচনা শেষে গুটি আম পাড়ার জন্য ৪ মে নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যান্য জাতের আম ১৫ মে থেকে পাড়া যাবে। চাষিদের স্বার্থেই এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। যাতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হন। আমরা সময় উল্লেখ করেছি, এখন যার আম যখন পরিপক্ব হবে তখন পাড়বেন, এতে অসুবিধা দেখি না।’

    চাষি ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের পরামর্শে আম পাড়ার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। তিনি বলেন, ‘পরিপক্ব হলেই আম পাড়া যাবে। আবহাওয়ার তারতম্য অনুযায়ী, যার আম যখন পরিপক্ব হবে, তখন পাড়বেন। কারও সমস্যায় পড়ার কথা নয়।

    আরও খবর

    Sponsered content