• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • তথ্যকণিকা

    অভয়নগরে গৃহবধূ মর্জিনার মুখে সেই ভয়ংকর ৩ ঘন্টা, মনে হচ্ছিল আমি মরে যাচ্ছি

      প্রতিনিধি ২ জুন ২০২৩ , ১১:২৮:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ কামাল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি

    লাথি, ঘুষি, জামা কাপড় টানাহেঁচড়া ছিড়ে ফেলা ও জড়িয়ে ধরা সবকিছু বাধ্য করা। ভিডিও ধারণ। হুমকি। ভয়ঙ্কর ৩ ঘণ্টা। সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার অভয়নগরের ভিজিডি প্রকল্প এনজিও কর্মী মর্জিনা খাতুন। অমানবিক, লোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ। ঐ গৃহবধূ জানান, গত ১০ডিসেম্বর (শনিবার) দুপুরে আমি অসুস্থ থাকায় আনুঃ ১টার দিকে আমার পূর্ব পরিচিত গ্রাম পুলিশ আমাকে দেখতে ও কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিতে আমার বাসায় আসে, কিছু সময় পর পূর্ব শত্রুতার জেরে আমার এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তির ইন্ধনে এলাকার বকাটে ব্যক্তিরা আমার টিনের বেড়া কেটে বাড়ি প্রবেশ করে আমিসহ গ্রাম পুলিশকে মারধর করা শুরু করে। হামিদুল নামে কতিপয় ব্যক্তি আমাকে জড়িয়ে ধরে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ভিডিও করতে থাকে, আতিক হাসান নামের এক সাংবাদিক, এবং আমার পরিহিত গায়ের কাপড় চোপোড় টানা হেচড়া করে ছিড়ে ফেলে। ও আমার গলা টিপে ধরে, আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাতদিয়ে আমাকে ব্লাকমেইল করতে থাকে ও আমাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা চালায়। আমি নিরুপায় হয়ে, চিৎকার করতে থাকলে দুষ্কৃতকারীরা পালিয়ে যায়। পরক্ষণে আমি নিজে বাদি হয়ে গত ঘটনার দিনেই,অভয়নগর থানায় ৫ জনের নামে একটি লিখিত অভিযোগ করলেও থানা পুলিশ আমাকে কোন সহযোগিতা করেনি বরং অভয়নগর থানার তৎকালীন ওসি একেএম শামীম হাসান আসামিদের পক্ষ নিয়ে, আমাকে চরিত্রহীনা বলে ও গালাগাল করে থানা থেকে তাড়িয়ে দেই। পরে আমার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়লে আমার স্বামী এসে, যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন, হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন শেষে। বিজ্ঞ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করি। এমনই ভাবে কান্না জড়িত কন্ঠে কথা গুলো বলছিলেন, যশোরের অভয়নগর, উপজেলার মহাকাল, আলীপুর গ্রামের মাসুদুর রহমান মাসুদের স্ত্রী এক সন্তানের জননী মর্জিনা খাতুন(২৬)। তিনি আরো জানান, আমার ভিডিও ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসামিরা ছেড়ে দেয়, যে ভিডিওতে আমার কোন অপরাধ ছিলোনা, ঐ ভিডিও মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। ফলে আমি মানুষিক ভাবে ভেঙে পড়েছি, ঐ ঘটনার পর থেকে আমি অসুস্থ হয়ে জীবন পার করছি। আমি কোন প্রকার অপরাধ না করেও সমাজের কাছে আমাকে খারাপ করা হয়েছে, চেয়েছিলাম আত্মহত্যা করবো, পরে ভেবেছি আত্মহত্যা কেনো করবো আমিতো কোন অপরাধ করিনি, তাই বেঁচে থেকে লড়াই করে প্রমাণ করবো আমি কোন অপরাধ করিনি। তিনি আরো জানান, মামলা করার পর আমিসহ আমার সন্তান স্বামীকে প্রভাবশালী মহল থেকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে, যে কোন সময় আমিসহ আমার সন্তান স্বামীকে তারা হত্যা করতে পারে, তাই আপনারা আমার হয়ে আমি যাতে ন্যায় বিচার পায় তার সহযোগিতা করবেন। এইভাবে ঐ নারীর উপর ঘটে যাওয়া লোমহর্ষক ৩ ঘন্টার বর্ণনা দিয়ে বলেন, মনে হচ্ছিল আমি মরে যাচ্ছি।
    তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঐ ভুক্তভোগী গৃহবধূ একজন ভিজিডি প্রকল্প কর্মি তার স্বামী কাজের সুবাদে ঘটনার সময় ঢাকায় ছিলো, ফলে এলাকার কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তির নজর পড়ে ঐ নারী যে জমিতে বসবাস করে ঐ জমির উপর, যে কারনে প্রভাবশালী ব্যক্তির ইন্ধনে ঐ নারীকে ঐ জমি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করে। ঐ গৃহবধূকে বিভিন্ন সময় এলাকার মানুষের মাধ্যমে হয়রানি করার একাধিক চেষ্টা করা হয় বলে সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত ঘটনার দিনে ভুক্তভোগী গৃহবধূকে জমি থেকে উচ্ছেদ করার লক্ষে কতিপয় ব্যক্তিরা ন্যক্কার জনক ঘটনা ঘটায়। ঘটনার বিবরণে ভুক্তভোগী গৃহবধূ ৫ জনকে আসামি করে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল- ১ যশোর আদালতে মামলা করেছেন। যার মামলা নং নাঃ শিঃ -পি- ০৭/২৩ বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সাইবার ক্রাইম যশোরকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার আদেশ দেন। ঐ মামলার আসামিরা হল, উপজেলা মহাকাল আলীপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে মোঃ হামিদুর(৪০), একই এলাকার মৃত-সিরাজুল ড্রাইভার-এর ছেলে আলামিন(২৮), বিল্লাল হোসেনের ছেলে কবির খান(৩০), আলাউদ্দিনের ছেলে মোসারফ হোসেন(৩৭) ও পাবনা এলাকার পিতা অজ্ঞাত আতিক হাসান(২৪),সহ ৪/৫ জন। ঐ মামলা সাইবার ক্রাইম তদন্ত ভার গ্রহন করে, দীর্ঘদিন তদন্ত করে গৃহবধূর উপর বর্বর নির্যাতনের সত্যতা পেয়ে বিজ্ঞ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

    আরও খবর

    Sponsered content