• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • নাগরিক সংবাদ

    তানোরে আমন খেতে সাতরা পোকার আক্রমণ ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা কৃষি অফিসার জানেনা কি রোগ

      প্রতিনিধি ৫ অক্টোবর ২০২৩ , ১০:৩৪:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

    সারোয়ার হোসেন,তানোর:

    রাজশাহীর তানোরে আমন খেতে সাতরা পোকার আক্রমণে ধান গাছের পাতা হলুদ রং হয়ে পড়েছে। শুধু হলুদ কালার না যেখানে এই পোকার আক্রমণ সেখানকার ধান গাছ নেই বললেই চলে। এরোগ থেকে ধান গাছের পাতা কে রক্ষা করতে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করেও দূর করতে পারেন নি কৃষক রা। যে জমিতে এর আক্রমণ সেই জমিতে অর্ধেক ফলনও হবে না। অপর দিকে রোগ দূর করতে কৃষি অফিস থেকে সঠিক পরামর্শ পায়নি কৃষকরা। একারনে রোগ দূর হয়নি, আস্তে আস্তে পুরো জমির ধান পুড়ে যাওয়ার মত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কৃষি অফিসের উদাসীনতার কারনে রোগ দূর করতে পারেন নি কৃষক রা।
    পৌর এলাকার সিন্দুকাই গ্রামের কৃষক তাইনুস বলেন, আমি ৮ বিঘা জমিতে রোপা আমন লাগিয়েছি। প্রায় জমিতে এরোগের প্রভাব পড়লেও তার মধ্যে এক বিঘা জমিতে এরোগ প্রচুর আকার ধারণ করেছে। পচন ও কারেন্ট পোকার বিষ দিয়েও দূর হয়নি। এখন পর্যন্ত কৃষি অফিসের লোকজনের কোন দেখাও পাওয়া যায়নি। একারনে রোগও দূর হয়নি এবং একবিঘা জমিতে খরচ হয়েছে প্রকার ভেদে ১২/১৪ হাজার টাকা।
    পৌর এলাকার গুবিরপাড়া গ্রামের কৃষক সাহেব আলী বলেন প্রায় জমিতে এরোগের প্রভাব দেখা দিয়েছে। আমার ১০ কাঠা জমিতে এরোগ হয়েছে, প্রথম দিকে মনে হয়েছিল কারেন্ট পোকা কিংবা পচন রোগের কারনে ধান গাছের পাতা হলুদ হয়ে পড়েছে। শুধু আমার না বড় ভাই মোস্তফার দেড় বিঘা জমিতে এরোগ , তসলিমের একবিঘা , কাবিলের, ১৫ কাঠা, জমিতে। এধরণের রোগ আগে কখনো দেখা যায়নি একারনে কারেন্ট পোক ও পচনের বিষ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু রোগ দূর হওয়ার বিপরীতে দিনের দিন ধান গাছের পাতা পুড়ে যাচ্ছিল। এখন বসে গেছে, ফলন হবেনা।
    পাঁচন্দর ইউপির প্রানপুর পাঠাকাটা গ্রামের কৃষক কামরুল বলেন প্রথম দিকে অল্প পরিমানে ধানগাছের পাতা হলুদ আকার ধারন করে। আমি ২০ বিঘা জমিতে রোপা আমন লাগিয়েছে, এর মধ্যে ১ বিঘা জমির ধানে এরোগ। তিনি আরো বলেন জাহাঙ্গীরের ২ বিঘা,এরবান ৭ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করেছে তার মধ্যে দেড় বিঘায় এরোগ, রফিকের, ১৪ বিঘার মধ্যে একবিঘায়, আইনুল মাস্টার ৭ বিঘের মধ্যে দেড় বিঘায় রোগের আক্রমণ। রোগটি এবার প্রথম বলে মনে করছেন কৃষকরা। এজন্য তারা বুঝতেই পারেন নি কিভাবে রোগ দূর করতে হবে। অনেকে বালাইনাশক দোকানীর পরামর্শে বিষ দিয়েছেন, কিন্ত কোন ফল পায়নি।
    সরেজমিনে দেখা যায়, তানোর থেকে মুন্ডুমালা পর্যন্ত জমি গুলোতে এরোগের প্রভাব প্রচুর পরিমানে। জমির মাঝে মাঝে ধানগাছের পাতা হলুদ আকার ধারণ করে বসে গেছে। আবার অনেক জমিতে চার সাইড হলুদ লালচে হয়ে আছে। যেখানে রোগের আক্রমণ হয়েছে, সেখানে ধানের শীষ গজাবে না। কারন ধীরে ধীরে বসে গেছে, দূর করার কোন উপায় নেই। যার কারনে হতাশ হয়ে কৃষক রা রোগ দূর করতে না পেরে ফলনের আসা ছেড়ে দিয়েছেন।
    লতিফ নামের এক কৃষক বলেন, প্রচন্ড খরার কারনে এরোগের আবির্ভাব। আমরা কোন সময় মাঠে কৃষি অফিসের লোকজন কে দেখিনি। আমরা পা ফাটা লুঙ্গি পরা কৃষক। সারা দিন মাঠে কাজ করি। কৃষি দপ্তরের কাছ মাঠে থাকা। কিন্তু তারাতো মাঠেই আসে না।
    কমষকরা আরো বলেন, এবার রোপা আমন রোপনের সময় ও তার পর থেকে প্রচুর খরতাপের মধ্যে পড়ে রোপা আমনের জমি। সেচ পানি নিয়ে ধান গাছ কোন রকম বাছিয়ে রাখা হয়েছিল। খরার কারনে প্রচুর পরিমানে আগাছার জন্ম। এক বিঘা জমিতে আগাছা দূর করতে নিম্মে ৪ হাজার উর্ধ্বে ৬ হাজার টাকাও লেগেছে। রোপা আমন চাষাবাদ হয় রহমতের বৃষ্টির পানিতে। একারনে অন্য আবাদের চেয়ে খরচও কম হয়। কিন্তু এবারের চিত্র পুরোটাই উল্টো ছিল। রোপন করতে হয়েছে সেচের পানি দিয়ে এবং রোপণের পর কয়েকবার করে বিভিন্ন ভাবে সেচ দেয়া হয়েছিল। এছাড়াও কীটনাশক ও সারের বাড়তি দাম। সব মিলে অন্য বছরের তুলনায় দ্বিগুন খরচ গুনতে হয়েছে। কিন্তু সাতরা পোকার আক্রমণের কারনে ফলনের চরম বিপর্যয় ঘটবে। ধান গাছের বয়স আড়াই থেকে তিন মাস। এখন পর্যন্ত বিঘায় খরচ ১৪/১৬ হাজার টাকা।
    আদর্শ কৃষক নুর মোহাম্মদ বলেন, প্রচন্ড খরতাপের কারনে এরোগের সৃষ্টি। এটা সাতরা পোকার আক্রমণের কারনে পাতা হলুদ হয়ে বসে গেছে। জমির যেখানে এরোগের আক্রমণ হয়েছে সেখানে ফলন হবে না। বিশেষ করে উঁচু জমিতে এরোগের আক্রমণ ব্যাপক আকার ধারন করেছে। এরোগের আক্রমণ দেখার সাথে সাথে সেখান কার ধান গাছ তুলে ফেলে নতুন ধানগাছ রোপন করতে হত। তাহলে ফলন পেত।
    উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, জিংক বা ক্রৃমির জন্য এধরণের রোগ হতে পারে। তবে জমিতে না গিয়ে বলা যাবে না। তাহলে কি এরোগ সম্পর্কে অবহিত না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অজানা না কিছু কিছু জায়গায় গিয়েছি বলে দায় সারেন এই কর্মকর্তা। তিনি প্রতিদিন শহর থেকে অফিস করেন। অথচ প্রতিটি সময় কৃষকের পাশে থাকার জন্য সরকার থেকে গাড়ি দেয়া হয়েছে, প্রতিটি ইউনিয়নে মাঠ কর্মী থাকলেও কৃষকের জমিতে দেখা মিলেনা বলেও কৃষক দের অহরহ অভিযোগ। এবারে উপজেলায় ২১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষাবাদ হয়েছে।

    আরও খবর

    Sponsered content