• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • চট্টগ্রাম

    বুদ্ধাব্দ থেকে বঙ্গাব্দের উদ্ভব”

      কামরুল ইসলাম চট্টগ্রাম: ৯ এপ্রিল ২০২৩ , ১১:৩৫:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

    সাপ্তাহিক মাইনি পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক লোহাগাড়া উপজেলা আওয়ামী কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক তুষার কান্তি বড়ুয়া বলেন ১৪২৯ বঙ্গাব্দ বিদায় নিয়ে ১৪৩০ বঙ্গাব্দ হাজির হয়েছে বাঙালির আঙ্গীনায়। বর্ষ বরণের প্রস্তুতি চলছে।

    “এসো হে বৈশাখ এসো এসো” এসো হে বৈশাখ,
    তাপস নিশ্বাসে বায়ে,মৃত্যুকে দাও উড়ায়ে,মুচে যাক গ্লানি,
    ঘুচে যাক জরা, অগ্নি স্বানে শুচি হোক ধরা।
    গানের কলি গুলো উঁকি মারছে বাঙালির প্রাণে। বাংলা সনের পহেলা তারিখকে কেন্দ্র করে ব্যবসা-বাণিজ্যের হালখাতা নবায়ন করার সংস্কৃতি আবহমান কাল থেকে লালন করে আসছে সর্বস্তুরের বাঙালি। ব্যবসার হালখাতার সঙ্গে সঙ্গে জীবন হিসাবের খাতা ও নবায়ন করতে হচ্ছে। আজ থেকে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে পাপ মুক্ত নতুন জীবন শুরু করার মাধ্যমে জীবনের হালখাতা নবায়ন করুক সকল স্তরের বাঙালি।
    বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাসে মৌর্য সম্রাট এক কালজয়ী অমর পুরুষ ছিলেন। তিনি বৌদ্ধ ধর্মকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার কল্পে মহারাজ সম্রাট অশোক দশ কোটি সুবর্ণ মুদ্রা দান করেছিলেন। বৌদ্ধ ইতিহাসে তাঁর পুত্র মহেন্দ্র কুমার ও কন্যা সংঘমিত্রা সিংহলে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারে গমন করেছিল। গৌতম বুদ্ধের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণের কাল, বৌদ্ধ ধর্মের একটি অত্যান্ত গুরুত্ব পূর্ণ দিক হলেও বিভিন্ন লেখক, সাহিত্যিক ও গবেষক ভিন্নমতে সন-তারিখ উল্লেখ করে থাকেন। এ বিষয়ে একটু আলোকপাত করা দরকার। সিংহল, মায়ানমার,থাইল্যান্ড, দেশীয় বৌদ্ধদের বর্ষ গণনা অনুসারে যীশু খ্রিষ্টের আবির্ভাবের ৫৪৩ বছর পূর্বে মহামানব বুদ্ধ মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন এবং মহামানব বুদ্ধের বুদ্ধত্ব লাভ হতে বুদ্ধাব্দ গণনা করলে খ্রিষ্টের জন্মের খ্রিষ্টপূর্ব (৪৯৮-৫৪৩) বছর পূর্বে বুদ্ধ পরিনির্বাপিত হয়েছিলেন। তবে খ্রিষ্টীয় ১১ শতক হতে সিংহল ও মিয়ানমারে ২৫০০(আড়াই হাজার বৎসর) তথা পরিনির্বাণ দিবস উৎযাপনের মধ্যদিয়ে মহামানব গৌতম বুদ্ধের পরিনির্বানের পর থেকে নতুন ভাবে বুদ্ধাব্দ গণনার ফলে,বর্তমানে বুদ্ধাব্দের তারিখটি বুদ্ধের পরিনির্বাণের পর থেকে গণনা হয়ে আসছে বিধায় বুদ্ধাব্দ থেকে বঙ্গাব্দের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান।১৯৫৪ সনের ১৭ই মে মহামানব গৌতম বুদ্ধের পরিনিবার্ণের ২৫০০ বর্ষপুর্তি উপলক্ষে দুই বৎসরাধিক কালব্যাপী মায়ানমার রাজধানী রেঙ্গুনে ষষ্ঠ মহাসংগীতি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ১৯৫৬ সালের ২৪ শে মে শুভ বৈশাখী পূর্ণিমায় বুদ্ধের ২৫০০ তম পরিনির্বাণ বর্ষপূর্তি ও ৬ষ্টমহাসংগীতি মহাসমারুহে সমাপ্তি হয়।এর পর থেকে ১৭ই মে বুদ্ধ পূর্ণিমা পালন হয়ে আসছে। তবে ১৪ ই এপ্রিল বৈশাখী মেলা পালন তথা ১৫ই এপ্রিল থেকে বুদ্ধাব্দ গণনা করা অধিক যুক্তিসঙ্গত এবং ঐ সময়ে প্রখ্যাত গবেষক অধ্যাপক ড: প্রবোধ চন্দ্র সেন গ্রীসের মানমন্দিরে রক্ষিত চন্দ্র ও সূর্য গ্রহণের রেকর্ড পত্র বিশ্লেষণ করে রাজপুত্র সিদ্ধার্থের জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ ও মহাপরিনির্বাণ সন, তারিখের তালিকা ‘দি স্টেটম্যান্ট’ পত্রিকায় প্রকাশ করেন এবং উক্ত বিবরণে বলা হয় সিদ্ধার্থের জন্ম ৭ই এপ্রিল ৬২৫ খ্রিষ্ট- পূর্বাব্দে, বুদ্ধত্ব লাভ ১৫ই এপ্রিল ৫৯০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে এবং মহাপরিনির্বাণ কাল ২২ই এপ্রিল ৫৪৫ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে। যাইহোক গৌতম বুদ্ধের আর্বিভাব কাল খ্রিষ্টপূর্ব ৬শ অব্দে এতে কোন সন্দেহ নেই। প্রাচীন বাংলার বৌদ্ধবিহার গ্রন্থে আলী ইমাম লিখেছেন- পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহামানব গৌতম বুদ্ধ খ্রিষ্টপূর্ব ৭ই এপ্রিল ৬২৩ অব্দে জন্ম, খ্রিষ্টপূর্ব ১৫ই এপ্রিল ৫৮৮ অব্দে বুদ্ধত্ব লাভ। অনেক বৌদ্ধ ও ইতিহাস গবেষকদের মতে খ্রিষ্টপূর্ব ২২ এপ্রিল ৫৪৩ অব্দে কুশীনগরের জমক- শালবৃক্ষের নিচে তিনি মহাপরিনির্বান লাভ করেছিলেন।
    তবে একথা স্বীকার্য যে,মহাকারণিক গৌতম বুদ্ধ পৃথিবীর ইতিহাসের এক অনন্য মহাপুরুষ যাঁর ত্রিলক্ষণ অভিধা- বুদ্ধ ব্যতীত অন্য আর নেই, একই দিনে যাঁর জন্ম, বুদ্ধত্ব লাভ এবং মহাপরিনির্বাণ ঘটে, তাঁর সন-তারিখ কমবেশী প্রায় ঐতিহাসিক তথ্য সূত্রে পাওয়া যায় এবং বর্তমান কালে বিভিন্ন গবেষক ইতিহাসবিদ ও ঐতিহাসিকদের মধ্যে এই মত সর্বাধিক ব্যবহৃত। বৈশাখের প্রথম দিনটি নববর্ষ হিসেবে পরিগণিত। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সৌরদিন গণনা শুরু হয়। পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরে আসতে ৩৬৫ দিন কয়েক ঘন্টার প্রয়োজন হয়। এই সময়টা সৌর বছর। গ্রেগরীর সনের মতো বারো মাসে বঙ্গাব্দ সূচনা সম্পর্কে দুটি মত প্রচলিত। প্রথম মত অনুযায়ী প্রাচীন বাংলার রাজা শশাঙ্ক বঙ্গাব্দ চালু করে ছিলেন। সপ্তম শতাব্দীর শুরুতে শশাংক বাংলার রাজচক্রবর্তী রাজা ছিলেন। আধুনিক বাংলা বিহার তাঁর সম্রাজ্যের আওতাধীন ছিল। অনুমান করা হয় যে, গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জির ২০ই মার্চ শনিবার ৫৯৪ সনে বঙ্গাব্দের সুচনা হয়েছিল।
    দ্বিতীয় মত অনুযায়ী ইসলামী শাসন আমলে হিজরী পঞ্জিকা অনুসারে সকল কার্যক্রম পরিচালিত হতো। মূল হিজরী পঞ্জিকা চাঁন্দ মাসের উপর নির্ভরশীল। চান্দ্র বছরের চেয়ে সৌর বছর ১১/১২ দিন কম হয় কারণ সৌর বৎসর ৩৬৫ দিনে, চান্দ্র বছর ৩৫৪ দিনে হয় এ-ই কারণে চন্দ্র বছরের ঋতুগুলি ঠিক থাকে না। বাংলায় চাষাবাদ সহ অনেক কাজ ঋতুনির্ভর, এজন্য মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে, প্রচলিত হিজরী চান্দ্র পঞ্জিকাকে, তিনি সৌর পঞ্জিকায় রূপান্তরের সিদ্ধান্ত নেন।

    আরও খবর

    Sponsered content