• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • অর্থনীতি

    পাহাড়ে কৃষিপণ্য সংগ্রহ কেন্দ্র, বদলে দিচ্ছে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের ভাগ্য

      প্রতিনিধি ১৬ এপ্রিল ২০২৩ , ৯:২৮:২১ প্রিন্ট সংস্করণ

    এম. জুলফিকার আলী ভূট্টো, বিশেষ প্রতিনিধি-

    পার্বত্য অঞ্চলে প্রায় সারা বছর ব্যাপী কৃষিপণ্য উৎপাদন হয়। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকেরা সারা বছর ব্যাপী কম বেশি কৃষিপণ্য উৎপাদনের ব্যস্ত থাকে। পাহাড়ের কৃষকেরা উৎপাদন করে থাকে শাক-সবজি, ফল-ফলাদি, ধান ও ভুট্টাসহ অন্যান্য কৃষিজাত পণ্য। উন্নত পদ্ধতির বদৌলতে কৃষি কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিন্তু বাজার মূল্য, বাজার চাহিদা ও সময়োপযোগী কৃষিপণ্য উৎপাদনে পিছিয়ে পড়ে আছে, পাহাড়ের কৃষক-কৃষাণীগণ। সময় মতো বাজারজাতকরণ করতে না পারায় কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য অনেক সময় কম মূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে হয়, যার ফলে কৃষকরা অনেক সময় পুঁজি হারিয়ে লোকসানের মুখোমুখি হতে হয় এসব ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের।

    ইদানিংকালে কৃষক-কৃষাণীদের ভাগ্যোন্নয়নে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, এস.আই.ডি, সি.এইচ.টি, ইউএনডিপি এবং পার্বত্য জেলা পরিষদ খাগড়াছড়ির যৌথ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায়, বাস্তবায়িত হচ্ছে, “পার্বত্য অঞ্চলের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্প” এই প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে ১১ থেকে ১২ হাজার কৃষি পরিবার উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে এখন স্বাবলম্বী।

    জেলার অধিকাংশ জনগোষ্ঠী কৃষি নির্ভর, তবে এখানকার জনপদের ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকরা এখনো পুরাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করে আসছে। উন্নত পদ্ধতিতে পাহাড়ের কৃষক-কৃষাণীগণ এখনো পিছিয়ে। সরকারের পক্ষে কম জনবল প্রত্যন্ত এলাকা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে সকল কৃষকদের ঘরে ঘরে কৃষি সংক্রান্ত সেবা পৌঁছানোর খুবই কষ্টকর। এ ছাড়া কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণ, ফসলের বাজার মূল্য সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকায়, কৃষকরা কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ ও ন্যায্য মূল্য থেকে প্রায় বঞ্চিত হচ্ছে।

    পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নে, সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে এস.আই. ডি ও সি.এইচ.টি, ইউএনডিপি ও পার্বত্য জেলা পরিষদ খাগড়াছড়ি কর্তৃক বিগত ২০১৮ সালে এই জেলায় চালু করা হয়, পার্বত্যাঞ্চলের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্প।

    এই প্রকল্পের আওতায় ১১ থেকে ১২ হাজারের অধিক ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক পরিবারকে সম্পৃক্ত করে ৪০২ দুটি কৃষক মাঠ স্কুল স্থাপন করে, এই কৃষি কার্যক্রম তথা কৃষক মাঠ স্কুল পরিচালনার জন্য জেলায় ১৩৪ জন কৃষক সহায়ক নিয়োগ প্রদান করা হয়। ফলশ্রুতিতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদ শীর্ষক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।

    উন্নত পদ্ধতিতে চাষাবাদের জন্য “সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা কৃষক মাঠ স্কুল” পদ্ধতি শিখিয়ে, কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণের দক্ষতা বৃদ্ধি করে কৃষকদের চাহিদা মোতাবেক কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করে আসছে। পার্বত্য অঞ্চলের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের কৃষি সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ক্ষুদ্র প্রান্তিক কৃষক-কৃষাণীগণ তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাতকরণে, এই পার্বত্য অঞ্চলে কৃষকদের কথা বিবেচনা করে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নের স্থাপন করা হয়েছে একটি করে কৃষিপণ্য সংগ্রহ কেন্দ্র বা কালেকশন পয়েন্ট।

    কৃষিপণ্য সংগ্রহ কেন্দ্র বা কালেকশন পয়েন্ট এ ক্ষেত্রে প্রকল্পের কাজ হ’ল, কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য সহজে এই কালেকশন পয়েন্ট এনে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারে এবং দূরের বা কাছের পাইকারদের সাথে যোগাযোগ সাপেক্ষে ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করে দেয়া যার ফলে স্থানীয় ফরিয়াদের দৌরাত্ম্য ট্যাক্স এর ঝামেলা ছাড়াই কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য ন্যায্য মূল্য পেতে পথ সুগম হয়েছে।

    জানা যায়, পার্বত্য অঞ্চলের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় মানিকছড়ি উপজেলায় ৪টি কৃষিপণ্য সংগ্রহ কেন্দ্র বা কালেকশন পয়েন্ট ইতি মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। কৃষিপণ্য সংগ্রহ কেন্দ্র বা কালেকশন পয়েন্টগুলি হ’ল, মানিকছড়ি সদর ইউনিয়নের পূর্ব গচ্ছাবিল পাড়ায়, ২ নং বাটনাতলী ইউনিয়নের শিম্প্রু পাড়ায়, ৩ নং যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের ফকির টিলা পাড়ায় এবং ৪নং তিনট্যহরী ইউনিয়নের তিনট্যহরী নামা পাড়ায়।
    পার্বত্য অঞ্চলের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় প্রতি উপজেলায় একটি করে বড় আকারে কালেকশন পয়েন্ট নির্মাণাধীন রয়েছে, যার কার্যক্রম অতি দ্রুত চালু হবে বলে জানা যায়। সর্বোপরি বলা যায়, পার্বত্য অঞ্চলে এই প্রকল্প গ্রহণ করায়, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক-কৃষাণীগণ ব্যাপক হারে উপকৃত হচ্ছে। এই কৃষি কার্যক্রমের ফলে ক্ষুদ্র প্রান্তিক কৃষকদের পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক ভূমিকা রাখছে বলে উপকারভোগীদের অভিমত। পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি কর্তৃক ও পার্বত্য অঞ্চলের কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের আওতায় নির্মিত কালেকশন পয়েন্টগুলো মেরামত করা ও আরও বড় আকারে নির্মাণ করা এখন এলাকায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের দাবী।

    আরও খবর

    Sponsered content