• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • ইসলামী জীবন

    যশোর অভয়নগরে ভুয়া কাজী মাসুদের গোমর ফাঁস

      প্রতিনিধি ১৬ এপ্রিল ২০২৩ , ৫:৪৩:২২ প্রিন্ট সংস্করণ

    ষ্টাফ রিপোর্টার-যশোর.

    কাজি আছে, অফিসও আছে, নিজের নামে নিবন্ধন নাই তবুও নিয়মিত বিয়েও পড়াচ্ছেন-তালাক করাচ্ছে,তৈরি করছে নয় ছয় কাগজপত্র,, এমনি একজন যশোর অভয়নগর উপজেলা চেঙ্গুটিয়া এলাকার কাজী পরিচয়ে পরিচিত মোঃ মাসুদুর রহমান  কাজী মাসুদ। আছে বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রার- সরকার নির্ধারিত ভলিউম বইও..তবে সেটা ভুয়া,, নেই আইনগত কোনো বৈধতাও, সেই সাথে কাজির নেই সরকারি নিবন্ধন। তবুও কথিত কাজি পরিচয়েই বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রি করছেন বছরের পর বছর। নিবন্ধন ছাড়াই অর্থের বিনিময়ে তৈরি করছেন ভুয়া বিয়ে রেজিস্ট্রি কাবিন,, হাতিয়ে নিচ্ছেন কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। এসব নামসর্বস্ব কাজির ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হচ্ছেন শত শত মানুষ।

    সম্প্রতি সারা দেশে নিকাহ ও তালাক নিবন্ধনে এক প্রকার বিশৃঙ্খলা চলছে। বেড়েছে ভুয়া কাজির দৌরাত্ম্য। বিয়ে ও তালাক নিবন্ধনেও জালিয়াতি বেড়েছে। কথিত কাজির ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। ভুয়া বিয়ে ও তালাকে নিঃস্ব হচ্ছে নারী-পুরুষ উভয়েই। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে অভয়নগরে,, বিয়ের বছর খানেক পর বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর নামে স্ত্রী মামলা করলে, স্বামী আদালতে যেতেই বেরিয়ে আসে আসল কাজী মাসুদের কেলেংকারীর ঘটনা।

    জানা যায় গত ০৫ বছর আগে অভনগর উপজেলার সিরাজকাঠি এলাকার মোঃ সিরাজুল ইসলাম এর ছেলে মোঃ আবুল বাসার এর সহিত একই উপজেলার মহাকাল এলাকার সিদ্দিক মোড়ল এর মেয়ে আফরোজা খাতুন পিয়া’র সহিত বিবাহ হয়। বিবাহের সময় কুমারী মেয়ে বলে বিবাহ দেয় মেয়ের পরিবারের সদস্যরা, একটা পর্যায়ে ১৭ মাস পর স্বামী আবুল বাসার জানিতে পারে যে, তার স্ত্রী আফরোজা খাতুনের ইতিপূর্বে দুটি বিবাহ রহিয়াছে, স্ত্রী আফরোজা খাতুন পিয়া স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির সকলের অগচরে পূর্বের স্বামীর সাথে মামলা চালাচ্ছে। এ ঘটনা জানাজানির পর স্ত্রী আফরোজ খাতুন পিয়া ও তার পরিবারের লোকজন স্বামী আবুল বাসার কে বলে যে এসব মেনে তোমার সংসার করতে হবে এবং পূর্বের স্বামীর মামলা তোমার দায়িত্ব নিয়ে চালাবে,,এই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তারা আবুল বাসার কে বিভিন্ন পর্যায়ে হুমকি দিয়ে তার বিরুদ্ধে কয়েকটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। সর্বশেষ কাবিন খোরপোশ মামলা করায় বেরিয়ে আসে কাজী মাসুদের জালিয়াতির নথি।

    দেখা যায় যে কাজী পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়ানো মাসুদ বিবাহের প্রথম কাবিন এর পরিবর্তন করে অর্থের বিনিময়ে হুবহু আরো একটি কাবিন তৈরি করে মেয়ে পক্ষ কে মামলা জেতাতে সহযোগিতা করে। এটা জেনে মোঃ আবুল বাসার ও চেঙ্গুটিয়া বাজারের কয়েকজন ব্যাবসায়ী,,স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যাক্তি উক্ত কাজীর বাড়িতে গেলে দেখা মেলে মূল কাজী-অালহাজ্ব আব্দুল হক গণির,,তার নিকট এই বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন” মাসুদ প্রকৃত পক্ষে কোন কাজী নয়,মাসুদ আমার ছেলে। সে আমার কাজগুলো করে। এই ঘটনার বিষয়ে আমি জানিনা মাসুদ জানে।

    ঐ সময় মাসুদ কে বাড়িতে মোবাইল করে ডাকলে মাসুদ বিভিন্ন অযুহাত দেখাতে থাকে। ০২ ঘন্টা পর মাসুদ আসলে তার বাবা কাজী আব্দুল হক গণি তার কাছে জানতে চাইলে তখন মাসুদ তার অপকর্মের কথা স্বীকার করে বলে আমার ভুল হয়েছে আমি দুদিন পর সমাধান করে দিবো। তখন তার কাছে মূল ভলিউম বই দেখাতে বললে সে বের করে,,দেখা যায় মূল বইয়ের সাথে প্রথম কাবিনের মিল রহিয়াছে,,কুমারী কন্যা,,পরবর্তী তৈরিকৃত কাবিন ভুয়া। তখন এলাকার লোকজন ক্ষিপ্ত হলে মাসুদের বাবা সঠিকটা দেওয়ার পতিশ্রুতি প্রদান করেন।

    এবিষয়ে নওয়াপাড়া পৌরসভার প্রধান কাজী, মোঃ সুলতান আহমদ এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন মাসুদ কোন কাজী নয়, কাজী মাসুদের বাবা। মাসুদ এমন কাজ করে ঠিক করেনি। তিনি আরো জানান ঐ কাবিনের কপি দুটি আমার কাছে আনলে আমি দেখে সমাধান করে দিবো।

    তারপর ভুয়া নামধারী কাজী মোঃ আবুল বাসার কে ডেকে বলে ভুল হয়েছে সমাধান আছে,আপনি ২০০০ টাকা নিয়ে আমার অফিসে আসেন। পরে সন্ধয় ২০০০ টাকা নিয়ে গেলে সে টাকা নিয়ে বলে আমি প্রধান কাজীর সাথে পরামর্শ করে কাল সঠিকটা করে পৌঁছে দিবো। কিন্তু সপ্তাহ গড়ালেও মাসুদের খোঁজ পাওয়া যায় না,মোবাইল নাম্বার টা ব্লক কর দেয়। গত বুধবার তার অফিসে গিয়ে দেখা হয় তার সাথে পরে আমার সাথে কথা লোকজনের সামনে বলে আমি নুতন দিলে অনেক সমস্যা হতে পারে বল আরো ৫০০০ টাকা দাবি করে। ঐ টাকা দিতে অস্বীকার করায় মাসুদ বলে তাহলে পারবো না। তখন স্থানীয় কয়েকজন মাসুদ কথা শুনে বলে মাসুদ এটা ঠিক না এর সঠিক ফয়সালা তুমি করবে। তখন মাসুদ বলে তোমাদের ক্ষমতা থাকলে করো। যদি ওর কোন বাপ থাকে তাহলে তাকে নিয়ে আসতে। এছাড়াও মোঃ আবুল বাসার কে প্রকাশ্য দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়।

    এলাকার লোকজন অনেকেই বলেন এই মাসুদ এলাকায় কিছু ক্ষমতাসীন লোকের দাপটে চলে কাজীর পরিচয়ে টাকার বিনিময়ে বাল্য বিবাহ,, একাধিক বিবাহের জাল কাবিন,তালাক,সহ গোপনে রাতের আধারে অনৈতিক ভাবে বিবাহ তালাকের কাজ করে, জালজালিয়াতি করে হাতিয়ে নেয় শত শত মানুষের পকেটের টাকা,,এর প্রতিকার হওয়া জরুরি। গত ০৭ এপ্রিল মোঃ আবুল বাসার বাদী হয়ে কাজী আব্দুল হক গণি ও তার ছেলে ভুয়া কাজী-মাসুদের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম শামীম হাসান জানান লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই অচিন্ত, সাহেব এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত করে জানাবো।

    আরও খবর

    Sponsered content