• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • চট্টগ্রাম

    নাফে প্রেম, নাফে দুঃখ

      প্রতিনিধি ২২ মে ২০২৩ , ৯:১৯:৩৫ প্রিন্ট সংস্করণ

    দিদারুল আলম জিসান: (কক্সবাজার)

    কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদ বাংলাদেশ-মিয়ানমারকে আলাদা করেছে। নাফের এক অংশের স্রোতধারা মিশেছে বঙ্গোপসাগরে। আরেক অংশ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড়ের পাদদেশে গিয়ে মিলেছে। পাহাড়ঘেরা চারপাশের অনিন্দ্য সুন্দর প্রকৃতি আর মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণের প্রাচুর্যময় সর্পিলাকার নাফ নদকে এক সময় বলা হতো টেকনাফের আশীর্বাদ। আশপাশের শাহপরীর দ্বীপ, হৃীলা, হোয়াইক্যাং, রহমতবিল, লম্বাবিলসহ আরও অনেক এলাকার অন্তত তিন সহস্রাধিক জেলের জীবন-জীবিকার প্রধান উৎস ছিল এই নদ। দিনরাতে নিঃসংকোচে তাঁরা নাফ নদে মাছ ধরতে যেতেন। কিন্তু ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সময় নাফ নদে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে ইয়াবা প্রবেশেরও প্রধান রুট ধরা হয় নাফ নদকে। এখন এই রুটে ঢুকছে আরেক ভয়ংকর মাদক ক্রিস্টাল মেথ (আইস)। সব মিলিয়ে টেকনাফের এক সময়কার প্রেম নাফ নদ এখন পরিচিত হয়ে উঠেছে ‘অপরাধ জোন’ হিসেবে। আর তাতে দুঃখ বেড়েছে এই নদের ওপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর।

    গত ১৯ মে শুক্রবার ও ২০ মে শনিবার নদের আশপাশের একাধিক গ্রাম ঘুরে জেলেপাড়াগুলোতে হাহাকারের দৃশ্য দেখা যায়। জেলেদের ভাষ্য, এক সময়কার বেঁচে থাকার প্রধান উৎস নাফ এখন তাঁদের দুঃখের নাম। কেউ কেউ জানান, বড় মাদক কারবারিরা জেলেদের মধ্যে কয়েকজনকে প্রলোভন দেখিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার পাচারে ব্যবহার করছে। এর মাশুল দিচ্ছে সাধারণ জেলেরা। ছোট নৌকা দিয়ে কেউ মাঝে মাঝে নদে মাছ ধরতে নামলেও প্রশাসনের বাধার সম্মুখীন হতে হয়। ফলে নাফ ছাড়িয়ে এখন জেলেরা বড় নৌকা ও ট্রলার নিয়ে মাছ ধরতে যাচ্ছেন সাগরে।

    টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, নাফ ও সাগরের মোহনা পার হলেই মাছ ধরার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ নেই। নাফ নদে মাছ ধরার আড়ালে অনেকে অন্য কারবারে জড়িত। তারাই সেখানে মাছ ধরার ব্যাপারে সোচ্চার। এ ছাড়া নাফ নদে নৌকা ও ট্রলার চলাচল করলে মিয়ানমার থেকে ফের রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঝুঁকি তৈরি হবে। মাদক কারবারিরাও নতুনভাবে সুযোগ খুঁজবে। তাই আমরা নাফ নদে মাছ শিকারের ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করি

    নাফ নদের তীরঘেঁষা শাহপরীর দ্বীপের দক্ষিণপাড়া। এ গ্রামের ৮০ শতাংশ বাসিন্দা জেলে। পাড়ার মৎস্য ঘাটে সীমান্ত সড়কে কথা হয় মকবুল আহমেদ নামে এক জেলের সঙ্গে। মকবুল জানান, তাঁর তিন প্রজন্ম মৎস্যজীবী। নদী ও সমুদ্র দেখে বড় হয়েছেন। কিন্তু ইয়াবা পাচারের কারণে নাফ নদ নিয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। এখন জেলেদের কেউ বিশ্বাস করতে চান না। নাফ নদের পাশে বাড়ি শুনলেই প্রথমে ধারণা করেন ইয়াবা কারবারি। পূর্ব দক্ষিণপাড়ার আবদুর রহমান নামে আরেক জেলে বলেন, গত ছয় বছর ধরে নাফে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যাই। কিন্তু বছরে কয়েক মাস সমুদ্রে মাছ ধরার ওপরেও বিধিনিষেধ থাকে। তখন ‘জেলে কার্ড’ দেখিয়ে সরকারি সহায়তা নিতে হয়। সমস্যা হলো জেলে কার্ড দোকানদার ও ব্যবসায়ীরাও অবৈধভাবে নিয়েছে। এ কারণে অনেক জেলে সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত।

    ওই এলাকার আরেক মাঝি ইলিয়াস হোসেন জানান, নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর থেকে কেউ নাফ নদে জাল ফেলেন না। তবে ছোট ছোট নৌকা ও জাল নিয়ে লুকিয়ে দু-চারজন নাফে যান। আগে সমুদ্রে কোনো কারণে মাছ ধরতে যেতে না পারলে নাফ নদ ছিল ভরসা। এখন সাগরে যাওয়া ছাড়া উপার্জনের কোনো উপায় নেই।

    একাধিক জেলে জানান, নাফ নদ দিয়ে মাদক পাচারে কারবারিরা রাতের সময় বেছে নেয়। মিয়ানমারের মাদক কারবারিদের সঙ্গে এপার থেকে যোগাযোগ করে নৌকায় চালান তুলে দেওয়া হয়। এরপর মাছের ট্রলার ও নৌকায় তা পাচার করা হচ্ছে। সাধারণ জেলেদের দাবি, তাদের মধ্যে যারা মাদক কারবারে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সাধারণ জেলেরা যাতে নির্বিঘ্নে মাছ শিকার করতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা জরুরি।

    টেকনাফ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসাইন বলেন, ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশের সময় নাফ নদে মাছ ধরার ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। এটা আইনশৃঙ্খলাজনিত বিধিনিষেধ। এই নিষেধাজ্ঞা এখনও বলবৎ। এটা ঠিক, নদে মাছ ধরতে না পারায় সাধারণ জেলেদের সমস্যা হচ্ছে। জেলেদের পুনর্বাসন ও ইকো-ফিশ প্রকল্পের সঙ্গে অনেককে সংশ্লিষ্ট করা হয়েছে। দিনের বেলায় পরীক্ষামূলকভাবে জেলেদের নাফ নদে মাছ ধরার সুযোগ দেওয়া যায় কিনা তা বিবেচনা করে দেখতে হবে।

     

    আরও খবর

    পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন কর্তৃক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত গুজব ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদ

    পটিয়া পাহাড়ি জনপদ দিয়ে শীর্ষ মাদক কারবারি মঞ্জুর নেতৃত্বে চলছে জমজমাট মাদক ব্যাবসা ধরা ছুঁয়ার বাইরেl

    মানিকছড়িতে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার দায়ে ৮০হাজার টাকা জরিমানা

    দুই বছর পর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের শপথ

    সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করে স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমানে নৌকায় ভোট দেয়ার আহবান; রামগড়ে শোক সভায় এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা

    কেলিশহর ইউপি চেয়ারম্যান- মেম্বার সাক্ষাৎকালে মোতাহারুল ইসলাম এমপি অপরাধী যে দলের হোক কোন অবস্থাতে ছাড় দেওয়া হবে না

    Sponsered content