প্রতিনিধি ১৯ জুন ২০২৩ , ৪:৫৮:৫৮ প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঈদগাঁও (কক্সবাজার)
এলাকায় এলাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা, নলকূপ, আসবাবপত্র দেয়ার নামে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে মোহাম্মদ পারভেজ নামের এক প্রতারক লাপাত্তা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পারভেজ কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের পূর্ব ঘোনা পাড়ার গোরা মিয়ার ছেলে। তবে পরিবার- পরিজন নিয়ে বসবাস করে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন ঈদগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজ পাড়ায়। তার বিরুদ্ধে আদালতে কয়েকটি মামলা দায়ের করেছে ভূক্তভোগীরা।
জানা যায়, পারভেজ প্রথমে কয়েকজনকে অল্প টাকায় বিদেশি একটি সংস্থার মাধ্যমে মসজিদ, মাদ্রাসা ও গভীর নলকূপ বরাদ্দ দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বস্ত হয়ে উঠে। পরে তাদের সরলতাকে পূঁজি করে একাধিক নলকূপ, মসজিদ, মাদ্রাসা, আসবাবপত্র দেয়ার লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়। বর্তমানে তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় ভূক্তভোগীদের সন্দেহ জাগে। নানা স্থানে খোঁজ নিয়েও তার হদিস পাচ্ছে না প্রতারিতরা।
স্থানীয়রা জানান, তার প্রতারণার ফাঁদ থেকে রক্ষা পায়নি স্বয়ং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বাররাও। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধিদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে তার নিয়োগকৃত দালালদের মাধ্যমে ১ লাখ থেকে থেকে শুরু করে ৩০/৪০ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে। তার প্রতারণা বুঝতে পেরে ভূক্তভোগীরা আদালতে মামলা দায়ের করেছে।
তাদের দেয়া তথ্য বলছে, অভিযুক্ত পারভেজ ইতিপূর্বে বিদেশ পালিয়ে যাবার চেষ্টা করেছে। ভূক্তভোগীরা তার বাড়িতে তল্লাশি করে পাসপোর্ট জব্দ করেছে। গোপনে আরেকটি পাসপোর্ট করে সে এখন বিদেশ পালিয়ে যাবার সম্ভবনা রয়েছে। তাই তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করে তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। ভূক্তভোগীরা জানান, তার প্রতারণায় শিকার হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে এখন দিশেহারা অনেকে।
পোকখালীর মোহাম্মদ ইদ্রিস আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-সি, আর-৬৭/২০২৩ ইং, ২১, ৩, ২৩।
মামলায় উল্লেখ করা হয় যে, গভীর নলকূপ, মাদ্রাসা, মসজিদ, আসবাবপত্র দেয়ার লোভ দেখিয়ে পারভেজ বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা তুলতে বলে।
সরল বিশ্বাসে এলাকার লোকজন এবং আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে প্রায় ৩০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে দিয়েছে। সে পালিয়ে যাওয়ায় ভূক্তভোগীরা তাকে চাপ দিচ্ছে টাকার জন্য। তাই তিনি বাধ্য হয়ে আদালতে চেক প্রতারনার মামল করেন।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, সে নিজে হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। তার প্রতারণার ফাঁদে পড়ছে চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান। চেয়ারম্যান মুজিব ও তার পরিবারের লোকজন নগদ সাড়ে ১৪ লাখ টাকা দিয়েছেন। অন্য যাদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা হলো এনাম রনি, আরফাত, জাহাঙ্গীর, জাহেদ, কায়েস, রবিউল, ফরিদ মেম্বার, ওসমান, হোসেন, ঈদগড়ের এক ব্যক্তি, আমানু মেম্বার, রুবেল, বাবু, জুয়েল সিকদার, তারেক আজিজ, উখিয়ার এক ব্যক্তি, নলকূপ মিস্ত্রী, জসিম, ইদ্রিস মৌলভী, মালেক, জামাল, অপর এক ব্যক্তি, সাহেদ কামাল, কামাল চেয়ারম্যান, কাইয়ুম উদ্দিন, জামিল উদ্দীন শাম, শাহাজান মেম্বার, বশির, ছোট আরফাত, ইসমাইল মৌলভী, মনজুর মাষ্টার,আরিফ, গিয়াস উদ্দিন, মিসবাহ । এসব বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ পারভেজের ব্যবহৃত ০১৮১৮-৩০৫০৩৭ নম্বরে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
ভূক্তভোগীদের আশঙ্কা, সে যে কোন মূহুর্তে বিদেশ চলে যেতে পারে। পারভেজ ও তার সিন্ডিকেট সদস্যদের দ্রুত আটক প্রদেয় অর্থ ফেরত নিতে উদ্যোগী হতে হবে।