• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • সারাদেশ

    বিলুপ্তির পথে কাঠের তৈরি লাঙ্গল

      প্রতিনিধি ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ , ১:১৪:১৪ প্রিন্ট সংস্করণ

    মোঃ সুমন আহমেদ, দোয়ারাবাজার(সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ

    বাঙালির শত বছরের কাঠের লাঙল কালের বিবর্তনে এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। লাঙল দিয়ে হাল চাষ করা এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। চাষাবাদের অন্যতম উপকরণ হিসেবে কাঠের লাঙ্গল ছিল অপরিহার্য। একসময় লাঙল ছাড়া গ্রাম বাংলায় চাষাবাদের কথা চিন্তাই করা যেত না। এখন (ট্রাক্টর) সে স্থান দখল করায় দিনে দিনে হারিয়ে যেতে বসেছে কাঠের লাঙ্গল।

    আগের দিনে গরু দিয়ে হাল চাষ ও ধান মাড়াইয়ের যে আনন্দ ছিল, বর্তমানে সেই আনন্দয় এখন অনেকটা ভাটা পরে গেছে। সর্বত্রই লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে কৃষি উপকরণেও চলে এসেছে আধুনিক। এতে যেমন কৃষকের পরিশ্রম কম হয়, তেমনি সময়ও বেঁচে যায়। এখন আর গরু দিয়ে ধান মাড়াই এবং হাল চাষের দেখাই মেলে না। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে আগের মতো গরু দিয়ে হালচাষের এমন দৃশ্য দেখা মুশকিল।

    এক সময় সুনামগঞ্জসহ আশেপাশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে চাষাবাদের অন্যতম উপকরণ হিসেবে কাঠের লাঙ্গলের ব্যবহার ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। লাঙ্গল ছাড়া গ্রাম-বাংলায় চাষাবাদের কথা চিন্তা করা যেত না। বিজ্ঞানের আধুনিক প্রযুক্তির ছোয়ায় কাঠের লাঙ্গল সেই স্থান দখল করায় দিনে দিনে হারিয়ে যেতে বসেছে কাঠের লাঙ্গল।

    ক্ষেতে খামারে কৃষক লাঙ্গল ও মই দিয়ে চাষাবাদের দৃশ্য সবার নজর কাড়তো এক সময়। হাজার বছরের প্রাচীন ঐতিহ্য চাষাবাদের বহু ব্যবহারিত কাঠের হাতল ও লোহার ফাল বিশিষ্ট লাঙ্গল আজ বিলুপ্তির পথে।

    আধুনিক যুগে চাষাবাদের যান্ত্রিক উপকরণ আবিষ্কারের প্রভাবে ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে লাঙ্গল জোয়াল, মই ও হালের বলদ। এসবের ব্যবহার সল্প আয়ের কিছু সংখ্যক কৃষক পরিবারে মধ্যে এখনো কোন রকমে টিকে রয়েছে। দেখা যেত খুব ভোর বেলা প্রান্তিক কৃষক তার ঘাড়ে লাঙ্গল জোয়াল আর মই রেখে এক হাতে গরু শাসনের লাঠি আর অন্য হাতে চাষাবাদের উপযুক্ত দুই বলদের দড়ি ধরে রেখেছে। চাষাবাদ শেষ করে কর্দমাক্ত শরীরে ক্ষেতের আইলে বসে সকালের পান্তা আর কাচা মরিচ পিয়াজ দিয়ে ভাত খেয়ে নিয়েছেন কৃষক। বিশ্রাম শেষে আবার ও কৃষকের ঠাই ঠাই শব্দ শোনা যেত।

    অনেক সময় দেখা যেত নিজের সন্তানকে মইয়ে বসিয়ে চাষাবাদের জমি সমান করার জন্য ষাড় গরু দিয়ে দাবড়ানো যেন ছোট বেলার স্মৃতিকে মনে করিয়ে দেয়। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির যুগে কৃষি কাজে জায়গা করে নিয়েছে যান্ত্রিক যন্ত্র পাওয়ার টিলার। অতি অল্প সময়ে কৃষকের সমস্ত জমি চাষাবাদ সম্পূর্ণ করা যায় এই যন্ত্রের মাধ্যমে।

    কৃষকের কাঠের লাঙ্গলের চাষ যান্ত্রিক যন্ত্রের চেয়ে যে দ্বিগুণ ভালো তা বলার অবকাশ রাখে না। এখন আর এ অঞ্চলের গ্রাম গঞ্জে কালের সাক্ষী লাঙ্গল, জোয়াল, মই ইত্যাদি সরঞ্জাম সাজিয়ে বসতে দেখা যায় না বিক্রেতাদের। অতীতের সেই খামারের ঠক ঠক শব্দ আর কানে আসে না।

    কাঞ্চনপুর গ্রামের গ্রামের কৃষক মোঃ আহমদ আলী জানান, গরুর লাঙ্গল দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ জমি চাষ করা সম্ভব। আধুনিক যন্ত্রপাতির থেকে গরুর লাঙ্গলের চাষ গভীর হয়। জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি ও ফসলের চাষাবাদ করতে সার কীটনাশক সাশ্রয় পায়। তাই কষ্ট হলেও প্রায় ৩০ বছর ধরে গরুর লাঙল দিয়ে চাষাবাদ করে আসছি।

    আরও খবর

    Sponsered content