• Archive Calendar

  • <img class=”alignnone size-full wp-image-10168″ src=”https://bdnewstoday24.com/wp-content/uploads/2023/05/IMG-20230504-WA0053.jpg” alt=”” width=100% height=”auto/>

  • রাজশাহী

    বড়াইগ্রামে কাক ডাকা ভোরে জমজমাট শ্রম বিক্রির হাট

      প্রতিনিধি ১৬ নভেম্বর ২০২৩ , ১০:৫০:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ

    বেলহাজ উদ্দিন বাঁধন, বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধিঃ

    সূর্যি মামা জাগার আগেই জেগে উঠে নুন আনতে পান্তা ফুরানো অভাবী লোকজন। কাজের সন্ধানে তারা ছুটে আসেন চলনবিল অর্ধষিত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজারে। চোখে-মুখে তাদের অসহায়তার ছাপ। এখানে এক শ্রেণির মানুষ আসেন ‘বিক্রি’ হতে আরেক শ্রেণির মানুষ আসেন ‘কিনতে’। স্থানীয় ভাষায় তাদের কেউ বলে শ্রমিক কেউ বলে কামলা। চলতে থাকে দরদাম, পণ্যের দামের মতোই ওঠা নামা করে প্রতিদিনের বাজার। বনপাড়া হাটিকুমরুল মহাসড়কের মানিকপুর হাটে চোখে পড়ে মানুষের শ্রম বিক্রির এমন হাট। ফজরের আজানের পর থেকেই মানুষগুলো জড়ো হতে শুরু করে। বর্তমানে ভোগ্যপণ্যসহ সব ধরনের দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন এলাকা থেকে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষও উপার্জনের আশায় এখানে কাজের সন্ধানে আসছেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও লেখাপড়ার খরচ যোগাতে এ হাটে কাজের সন্ধানে আসতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য কৃষক-শ্রমিকের কোলাহল, কারো হাতে কাঁচি, কারো হাতে কাপড়ের পোঁটলা। মাঝে মাঝে কিছু লোক এসে তাদের সঙ্গে কথা বলছেন, দর কষাকষি চলছে। আশপাশে দাঁড়িয়ে বা বসে আছে প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০  শ্রমিক। বর্তমানে এ এলাকায় আমন ধান কাটা-মাড়াই ও বিনা হালে রসুন চাষের কাজ চলছে পুরোদমে। তাই এলাকায় শ্রমিকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে এখানে এভাবেই বসে শ্রম বিক্রির হাট বা স্থানীয় ভাষায় কামলার হাট। আরেক শ্রেণির মানুষ এখানে আসে শ্রম কিনতে। প্রায় ১৫ থেকে ১৭ বছর ধরে বড়াইগ্রামে এই শ্রমিকের হাট গড়ে উঠেছে। এসব শ্রমিকরা আমন ধান কাটা, রসুন লাগানো থেকে শুরু করে খেত-খামার এবং গৃহস্থালির বিভিন্ন কাজ করে থাকে। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন শ্রমিক কিনতে আসে। হাটে ওঠা পণ্যের মত এখানেও চলে দরদাম। এসব শ্রমিকের শ্রমের মূল্য কাজ ভেদে ৪০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত। সকাল হলেই চলতে থাকে দরদাম, দাম ওঠানামা করে যাকে বলা হয় বদলি। কেউ বলে কামলা। আবার অনেকে বলেন শ্রমিক। প্রতিদিনি ভোর পাঁচটা থেকে চলে এই শ্রমকের বাজার।

    বড়াইগ্রামের মানিকপুর হাটে শ্রম বিক্রি করতে আসা পাসের তাড়াশ উপজেলার আব্দুল লতিফ জানান, নিজস্ব কোনো আবাদি জমি না থাকায় তাদের প্রায় সারা বছরই দিন মজুরি খেটে খেতে হয়। মালিকেরা দিনে দুইবার খাবার দেয় প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা করে দাম পাওয়া যায়। মালিকের বাড়িতে কাজ করতে হবে সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

    উপজেলা বড়পিঙ্গুইন গ্রাম থেকে আসা ৫৬ বছর বয়সী দিনমজুর রহমান আলী বলেন, প্রতিদিন ফজরের নামাজ আদায় করে কাজের সন্ধানে মানিকপুর আসি। আগে জিনিসপাতির দাম কম ছিলো, তাই ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা মজুরি নিতাম। কিন্তুু বর্তমান সবকিছুর দাম কয়েকগুণ বেশি, এই জন্য তাই দুইবেলা খেয়ে ৫০০ টাকা মজুরি চাচ্ছি কিন্তু আমার একটু বয়স হওয়ায় এখনো বিক্রি হতে পারি নাই।

    শ্রমিক কিনতে আসা একজন বলেন, রসুন লাগানোর জন্য ও ধানের জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ করার জন্য ৫ জন শ্রমিক নিলাম। দুইবেলা খাওয়ায়ে ৫০০ টাকা করে দিতে হবে।  কাজ করে নিতে হবে, তাই নিলাম। তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাজারে নিত্যপণ্যের দাম যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে তাদের ৫০০ টাকা মজুরিটাও ঠিক আছে।

    আরও খবর

    Sponsered content