প্রতিনিধি ৩০ অক্টোবর ২০২৩ , ৩:২৪:৩৪ প্রিন্ট সংস্করণ
মুহাম্মদ আলী,স্টাফ রিপোর্টার:
বান্দরবানে শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের প্রবারণা পুর্ণিমা পালন উৎসব, উৎসবক ঘিরে বইছে পার্বত্য জেলায় আনন্দের বন্যা। বৌদ্ধ, মুসলিম, সনাতন ধর্মালম্বীসহ সকল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষেরা এই উৎসবে যােগ দিয়েছে।
রথ শোভযাত্রা ও ফানুসবাতি উড়ানাে উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য মন্ত্রী’র সহধর্মিণী মিসেস মেহ্লা প্রু, বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সদস্য বাবু লক্ষিপদ দাশ,বড়ুয়া সম্প্রদায়ের নেতা ও বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য চৌধুরী প্রকাশ বড়ুয়া,বান্দরবান পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবু অমল কান্তি দাশ, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বান্দরবান পৌরসভার মেয়ের মো:শামসুল ইসলাম,বাবু প্রশান্ত বড়ুয়া,বাবু সুগত প্রিয় বড়ুয়া, বান্দরবান হোটেল-মোটেল গেস্ট- হাউজ মালিক সমিতির নেতা বাবু রাজিব বড়ুয়া, বান্দরবান রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির নেতা নিপু বড়ুয়া,পার্বত্য মন্ত্রী’র একান্ত সহকারী বাবু আশীষ বড়ুয়া,সহ পুরো শহরে পূন্যকারীরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন।
সেই শোভযাত্রা অত্যতম আকর্ষণ দিক ছিল কাল্পনিক ভুতূরের নাচ। যা আচমকা ভাবে ভয় দেখিয়ে ছুটে আসে মানুষ দিকে। সে ছুটে আসার ভিতরে একটি আনন্দময়বোধ বলে মনে করেন ভুতুরের ভিতরে থাকা মানুষটি। এদিক প্রবারণা উৎসবকে ঘিরে বিভিন্ন বুদ্ধ বিহার থেকে আকাশ উড়ানাে হছে নানা রংঙের ও ভিন্ন সাইজের ফানুস বাতি। অসংখ্য ফানুস বাতির আলােতে আলােকিত হবে রাতের আকাশ। এক এক ফানুস উড়তে উড়তে পাহাড়ের পরিবেশ আরাও সুন্দর হয়ে উঠবে।
অনুষ্ঠানে অনেক লােকসমাগম হয়েছে, আবার কোথাও কোথাও জড়াে হয় পূর্ণাথীরা। ২৮শে অক্টোবর রোববার রাতে থেকে বান্দরবানে বিভিন্ন বিহারে বিহারে চলছে মােমবাতি প্রজ্জলন,হাজার প্রদীপ জালানাে, ফানুসবাতি উড়ানােসহ নানা আয়ােজন, প্রতিটি বিহারে বিহারে চলছে ধর্মীয় দশনা।
বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় এই প্রবারণা উৎসবকে পালন করেছে। উৎসব উপলক্ষে ৩০অক্টোবর সন্ধ্যায় বান্দরবান পুরাতন রাজবাড়ীর মাঠ হতে এক বিশাল মনােমুগ্ধকর রথটানা শুরু হয়। রথ থাকা বুদ্ধমূর্তিকে পূজারীরা মােমবাতি, ধুপকাঠি জ্বালিয় প্রণাম নিবদনের পাশাপাশি সু:খ শান্তি লাভের আশায় প্রদান করেন বিভিন্ন পরিমান দানের অর্থ।
পরে রথ নিয়ে যাওয়া হয় রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার ও উজানীপাড়া রাজগুরু মহা বৌদ্ধ বিহারে। বৌদ্ধধর্মালম্বীরা শত শত দর্শক ও পূন্যকারীরা রথ শোভযাত্রা যোগ দান করে। পাশাপাশি ঐতিহ্য গানে সাথে তাল মিলিয়ে শোভযাত্রাটি মুগ্ধকর করে তুলে পুরো বান্দরবান শহর, রাজগুরু বিহার, উজানী বিহার ও রাজারসহ বিভিন্ন স্থানে হতে চুলামনি উদ্দেশ্যে ভিন্ন রকমারী তৈরী ফানুস উড়ানো হয় আকাশে। ফানুসের পাশাপাশি আকাশে বিভিন বাজি ফুটানো হয়।
পূন্যকারী হ্লাচিংমে মারমা জানান, পাহাড়ের আজ মাহাঃ ওয়াগ্যেয়ে পোয়েঃ শেষ দিনে অর্থ ফুল দান করেছি। ভগবানে কাছে প্রার্থনা করেছি এই শেষ দিনে সবার জীবন সুন্দর হোক। পাশাপাশি আমাদের দেশকে করোনামুক্তি হয়ে সুন্দর দেশ আসুক। প্রথম দিনে রাত্রীকালীন জাদী পাড়া প্রাঙ্গনে, ছোট রাজার মাঠে ও উজানী পাড়ায় পিঠা উৎসবের সকল যুবক-যুবতি, অভিভাবকরা রাত জেগে পিঠা বানিয়ে সকালে পাড়ার প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌচ্ছে দেওয়া হয়েছে। বুদ্ধধর্মালবীদের মতে, আষাঢ়ী পূর্নিমার দিন থেকে টানা তিনমাসের বর্ষাবাস শেষে বৌদ্ধ নর-নারীরা বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে পঞ্চশীল, অষ্টশীল ও দশশীল গ্রহন করেন এবং প্রবারণা পূর্ণিমা (মাহা ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ) পালন করে থাকেন। সকল অহিংসা ও পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মন্ত্রে দীক্ষিত হন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মানুসারীরা। মঙ্গলবার মধ্যরাত সাংগু নদীত রথ বির্সজনের মধ্যে দিয়ে বদ্ধ ধর্মালম্বীদর এই জাঁকজমক প্রবারণা উৎসবর সমাপ্তি ঘটবে ।